শেষের পাতা
ফের উত্তাল কেনিয়া পুলিশি সহিংসতায় নিহত ১১
মানবজমিন ডেস্ক
৯ জুলাই ২০২৫, বুধবারসরকারবিরোধী আন্দোলনে ফের উত্তাল পূর্ব আফ্রিকার জনবহুল দেশ কেনিয়া। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ৩৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আবারো রাস্তায় নেমে এসেছে সে দেশের জনগণ। এই আন্দোলন দমনে শক্ত অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। তারা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে
গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। এতে দেশটির তরুণদের মধ্যে সরকারবিরোধী মনোভাব আরও প্রকট হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, পুলিশের সহিংসতা এবং সরকারবিরোধীদের ওপর দমন-পীড়নের জন্য আগে থেকেই বিক্ষুব্ধ ছিল কেনিয়ার তরুণ প্রজন্ম। এ খবর দিয়ে অনলাইন সিএনএন জানিয়েছে, সোমবার দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। সেখানে বিনা উস্কানিতে পুলিশ সহিংস আচরণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া পাঁচ শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কেনিয়ার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (কেএনএইচসিআর) জানিয়েছে, পুলিশের অ্যাকশনে অন্তত ২৯ জন আহত হয়েছেন। গত বছর প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী আন্দোলন। পরে আন্দোলনের তোপে ওই কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে বাধ্য হয় দেশটির সরকার। কিন্তু সম্প্রতি পুলিশের হেফাজতে এক শিক্ষকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কেনিয়া ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া পুলিশের গুলিতে এক নিরস্ত্র হকারের মৃত্যুও পুনরায় আন্দোলন শুরু হওয়ার অন্যতম কারণ। গত মাসে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে কয়েকশ’ মানুষ। আর গত বছর থেকে অন্তত কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতি বছর ৭ই জুলাই দিনটিকে গণতন্ত্রপন্থি সমাবেশ করে আসছে সে দেশের জনগণ। যার স্থানীয় নাম সাবা সাবা। এ বছরও দিনটি উদ্যাপনকে ঘিরে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় গণতন্ত্রকামী মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কেনিয়ার কিয়াম্বু শহরে এক বিক্ষোভকারী সশস্ত্র বাহিনীর গাড়ি থেকে নেমে আসছেন। পরে তাকে বেধড়কভাবে পিটিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ওই ব্যক্তি নিজেকে রক্ষার জন্য মাথা ঢেকে রেখেছেন, কিন্তু কোনোভাবেই অফিসারকে হুমকি দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে না। সিএনএন বলছে, ওই ভিডিও থেকে বোঝা যায় সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে পুলিশ। অন্য আরেক ভিডিওতে দেখা গেছে যে, পুলিশের সহিংস আচরণ সত্ত্বেও পিছপা হচ্ছে না বিক্ষোভকারীরা। ফ্রান্সিস ওয়াসা নামের এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, আমরা বাড়ি ফিরে যেতে প্রস্তুত নই। কারণ আমরা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করছি। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়েছে দেশটির মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তারা অভিযোগ করে বলেছে, ভিন্নমত দমনে রাষ্ট্রীয় গুণ্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে সরকার। তারা আমাদের অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেনিয়ার সরকার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।