বাংলারজমিন
নবীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৮
স্টাফ রিপোর্টার, নবীগঞ্জ থেকে
৩০ জুন ২০২৫, সোমবার
নবীগঞ্জে জনতার বাজারে (গরুর বাজার) যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রশাসনের মাইকিং সতর্কতা এবং আইনি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় বেআইনিভাবে গরুর হাট বসিয়ে অবৈধ উপায়ে গরুর হাট চালিয়ে আসছে কথিত বাজার কমিটির লোকজন। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভাগ-বাটোয়ারার নামে জামায়াত এবং বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বলয়ের নেতৃত্বের মহাসড়কে আধিপত্য আর দাপট দেখিয়ে আসছে বিশেষ একটি চক্র। বিগত ঈদুল আজহায় ওই এলাকায় প্রশাসনের তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞার আদেশ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের তরফে মাইকিং করেও তাদের নিবৃত্ত করা যায়নি। একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে অভিযানে গেলে উচ্ছৃঙ্খল লোকজন অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর চড়াও হয়। এ নিয়ে পুলিশ ও স্থানীয় তহশিলদার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। শনিবার রাতে ওই এলাকায় এজহার নামীয় আসামি ধরতে গেলে আবারো পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল দুপুরে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ খবর নিশ্চিত করেন থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামান। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে এজহার নামীয় আসামি গ্রেপ্তারে যায় পুলিশ। থানার ওসি শেখ মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ওই গ্রামের নজর উদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হলে স্থানীয় লোকজন মসজিদে মাইকিং করে ‘ডাকাত এসেছে’ বলে গুজব ছড়ায়। এ সময় প্রায় দুই শতাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে নজর উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় পুলিশ সদস্য কনস্টেবল শাহ ইমরান (২৭), মোজাম্মেল হক (২৫) ও পল্টন চন্দ্র দাশ (২৫) আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ছাড়াও হামলাকালে দুর্বৃত্তরা পুলিশের একটি ভ্যানগাড়ি এবং দুটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আতিকুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরই জের হিসেবে গতকাল দুপুরে জনতার বাজার এলাকা ও আশপাশে সেনাবাহিনী, র্যাব ও নবীগঞ্জ থানার পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযানে ১৩ জনকে আটক করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের মধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আটককৃতরা হলেন, দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামের আব্বাস উদ্দিনের পুত্র ইকবাল হোসেন (৩১), পিরোজপুর গ্রামের নাজির মিয়ার পুত্র রোজেল মিয়া (২৫), দেওপাড়া গ্রামের সালেক মিয়ার পুত্র কাইয়ুম মিয়া (২২), রামলোহ গ্রামের জয়নাল মিয়ার পুত্র সোহেল আহমেদ (২৩), পানিউমদা গ্রামের মৃত তাজুল মিয়ার পুত্র আল আমিন (৬৬), শতক গ্রামের মৃত বশির মিয়ার পুত্র মো. সাদেক মিয়া (৪২), দেওপাড়া গ্রামের মৃত প্রদীপ দত্তের পুত্র পংকজ দত্ত (৪৩), রামলোহ গ্রামের মোহাম্মদ জুবেদ মিয়ার পুত্র আবির আহমেদ জয় (১৯)। এ নিয়ে বানিয়াচং সেনা ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, অভিযানে সেনাবাহিনীর তরফে র্যাব ও পুলিশকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। আটককৃতদের নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়। হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এ সময় সরকারি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না।