অনলাইন
উপদেষ্টা পরিষদের অনেকের মধ্যে বোল্ডনেস দেখতে পাইনি: সারজিস
স্টাফ রিপোর্টার
(১০ ঘন্টা আগে) ২৮ জুন ২০২৫, শনিবার, ১:১৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:১৩ অপরাহ্ন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের অনেকের মধ্যে বোল্ডনেস দেখতে পাইনি। যে কারণে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের যে একটা কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ, সেটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে না থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে চলে গেছে।’ শুক্রবার রাতে বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের এক টকশোতে এ মন্তব্য করেন তিনি। রোকসানা আনজুমান নিকোলের সঞ্চালনায় ওই টকশোতে আরও উপস্থিত ছিলেন জি নাইনের সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ।
৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’, ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ও ১৬ জুলাই ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’। এ বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে এক পরিপত্র জারি করা হয়েছে। আপনি (সারজিস) বলছেন, ৮ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা শুরু হয়নি। দ্বিতীয় স্বাধীনতা নষ্টের ছাড় দেয়ার এবং বিপ্লব বেহাতের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ এবং ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস’। ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নিয়েছে। সেই সরকারের নিয়োগদাতা তো আপনারাই। তবে কারা নষ্ট করলো, ছাড়া দিলোই বা করা-এমন প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, ‘সেই সরকারের নিয়োগদাতা আমরা না। আমরা মনে করি, এই অভ্যুত্থানে আন্দোলনের যে নেতৃত্বের জায়গা, হয়তো সেখানে ছিলাম। যেদিন এই সরকার গঠিত হয়, তার পূর্বের কয়েকদিন এখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি ও জামায়াত থেকে শুরু করে সিভিল সোসাইটি, শিক্ষাবিদ বা যারাই সম্পৃক্ত আছেন, তাদের চুলচেরা বিশ্লেষণ ছিল। ইভেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিজের সুপারিশে কয়েকজন উপদেষ্টা ছিলেন। সুতরাং এটা একটা সমন্বয় ছিল। এর ফলে এই উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তো আপনাদের পছন্দের ছিলেন! জবাবে সারজিস বলেন, ‘হ্যাঁ, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের পছন্দের ছিলেন, এটা নির্দ্বিধায়। আমরা মনে করি,এই মুহূর্তে যদি আরেকটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে চাই-তার বিকল্প অপশন আমাদের চোখে পড়ছে না। কিন্তু যেটা হয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের অন্তত অর্ধেক মানুষ, অর্থাৎ তাদের কাছে যতটুকু প্রত্যাশা ছিল কাজের জায়গায় ততটুকু আমরা পাইনি। বরং গতানুগতিক সময়ে একজন মন্ত্রী ওই মন্ত্রণালয়ে যতটুকু কাজ করেন-অনভিজ্ঞতার কারণে বলি, দূরদর্শিতা কিংবা সাহসিকতা, যে কারণেই হোক না কেন? তারা তাদের জায়গায় ওই গতিতেও সেই কাজটুকুও করতে পারেননি। বরং রুটিন ওয়ার্কটা করেছেন, সেটা স্লোলি। আরেকটা জিনিস জাস্ট আমাদের মনে হয়েছে-হয়তো এই মানুষগুলো পূর্বে যে কাজ করতো যেখানে তারা অভিজ্ঞ, তারা হয়তো সেখানে তাদের কাজটা সততার সঙ্গে করেছেন, দক্ষতা আছে। কিন্তু রাজনীতির এই জায়গায়-একটা মন্ত্রণালয় চালানো, দেশের একটা অংশ চালানো এই জায়গায় তাদের অনভিজ্ঞতার কারণে...। আমরা মনে করি, আরেকটা জিনিস মিসিং মনে হয়েছে, সেটা হলো বোল্ডনেস। যারা অভ্যুত্থানে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন, রক্ত দিতে দেখেছেন, জীবন দিতে দেখেছেন, তাদের যে সাহসিকতা, সাহস নিয়ে আগস্টে রাজপথে নেমেছেন, যেকোনো সময় বুলেট তাকে বিদ্ধ করতে পারতো। মৃত্যু হতে পারতো, ওই সাহসিকতা কিংবা বোল্ডনেস এই উপদেষ্টা পরিষদের অনেকের মধ্যে দেখতে পাইনি। যে কারণে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের যে একটা কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ সেটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে না থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে চলে গেছে। আর তাদের মতো ইচ্ছা করে অপব্যবহার করছে এবং করেছে।’
কিন্তু ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। আপনাদের দুজন সহযোদ্ধা উপদেষ্টা পারিষদে আছেন। তারা না করলেও বা রাজি না হলে এটা করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন?-এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপি’র উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই সম্ভব। ২২ জনেরও বেশি উপদেষ্টা রয়েছেন। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নিজেও রয়েছেন। এখানে তো মাত্র দুজন। তারা হয়ত এক্ষেত্রে মত দেননি। কিন্তু অধিকাংশ মতামতের ভিত্তিতে হয়ে গেছে। যেটার প্রতিফল আমরা দেখেছি আসলে। এখন আমাদের মনে হয়, যদি সুযোগ থাকতো আমরা অবশ্যই যা কিছু হয়ে যাক না কেন-এই বয়স, অভিজ্ঞতা, রাজনীতির মধ্যে না থাকা, এইরকম কিছু না দেখে সবচেয়ে ভালো ছিল ওই মুহূর্তে একটা বিপ্লবী সরকারই গঠন করা। কিংবা দুই একটা বড় রাজনৈতিক দল বা দুই একজন বড় ব্যক্তি দ্বিমত করছেন বলে জাতীয় সরকার করবো না, এটা আসলে করা উচিৎ ছিল না। এখন এটা মনে হয়। আমি স্বীকার করে নিচ্ছি-আমাদের সীমাবদ্ধতা ও অনভিজ্ঞতা। এখানে দায় আছে কিছুটা। কিন্তু সবচেয়ে ভালো হতো-ওই মুহূর্তে একটা বিপ্লবী সরকার বা অন্তত একটা জাতীয় সরকার করা, যারা আসলে সরাসরি এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।’
বিপ্লব বেহাতের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। আপনি বলছেন, তাদের অনভিজ্ঞতার কথা, একবারও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। এখন পর্যন্ত আপনি যেভাবে বলছেন, কিন্তু আপনার লেখনিতে বলছেন বিপ্লব বেহাতের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় স্বাধীনতা নষ্টের ছাড় দেয়ার বিষয়টি এসেছে। কথাগুলো যখন লেখেন তখন বেশ কঠোর মনে হয়েছে। এখন অতটা কঠোর মনে হচ্ছে না-এ প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, ‘অন্তত আমি ধরলাম ২২ জনের মধ্যে ১০ জন উপদেষ্টা স্ট্রংলি একটা মন্ত্রণালয় ডিল করা, সচিবালয় থেকে শুরু করে একটা গ্রাম পর্যন্ত এটা (ডিল) যখন করতে পারেন না, তখন যে রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ে কর্মী কিংবা নেতাকর্মী অনেক বেশি থাকে, স্পেশালি যদি বিএনপির কথা বলেন-তারা তাদের জায়গা থেকে যখন বুঝে একজন উপদেষ্টাকে ওইটুকু কর্তৃত্বপরায়ণ জায়গায় তারা দেখতে পাচ্ছে না, তখন তারা নিজেদের মতো যতটুকু নিয়ে নেয়ার সেটা নিয়ে নেয়। ইভেন যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কথা বলি-বাংলাদেশের প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজে আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি কি জানেন? এডহক কমিটি হচ্ছে, সেই এডহক কমিটিতে সভাপতি হওয়ার একমাত্র ক্রাইটেরিয়া আপনি বিএনপির রাজনীতি করেন কিনা। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এভাবেই আওয়ামী লীগ নষ্ট করেছিল। কিন্তু এই প্রক্রিয়া যদি এখনো চলতে থাকে! অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা কিংবা তারা যদি স্ট্রংলি নির্দিষ্ট এলাকার সবচেয়ে যোগ্য মানুষটাকে, অর্থাৎ কোনো দল দেখার প্রয়োজন নেই, নট ইভেন এনসিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাথিং। কোনো দল না দেখে যদি সবচেয়ে যোগ্য মানুষটাকে কর্তৃত্ব না নিয়ে দিতে পারে! তারা যদি এটা হিসেব করে আমি স্থানীয়ভাবে কন্ট্রোল করতে পারবো না, আমি পলিটিক্সের জায়গায় ব্যালেন্স করতে পারবো না, তাহলে তো আলটিমেটলি আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে যে জায়গায় দেখতে চেয়েছিলাম, যে সংস্কারগুলো দেখতে চেয়েছিলাম-সেটাতো আমরা দেখতে পাই না। সামগ্রিকভাবে এটা জাস্ট এক্সাম্পল। এটা প্রত্যেকটা জায়গায় হয়েছে। একজন ইউএনওর সরাসরিজনগণের যে সুবিধা দেয়ার কথা, সেগুলো এখন বাধ্য হয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে দিতে হচ্ছে। আমরা যেটা দেখছি, অধিকাংশ যখন স্বাভাবিকভাবে বিএনপি তাদের জায়গায় নিয়ে নিচ্ছে, তাদের নেতাকর্মীরা নিচ্ছে এবং এটা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগে মতোই আবার জনগণের থেকে টাকা নেয়ার যে কালচার, সেটা শুরু হয়েছে। আমরা দেখছি প্রশাসনের ক্ষেত্রে, আপনি যদি দেখেন-পুলিশের ওসি, এসআই এখন যারা আছে, অসংখ্য মামলা হয়েছে, মিথ্যাভাবে হয়েছে, রাজনীতিকে সামনে রেখে। সেগুলোকে কেন্দ্র করে অসংখ্য পুলিশ সদস্য এখন আবার আগের রূপে ফিরে এসেছে। যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই। তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়নি, কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি। তারা এখন আবার টাকা খাচ্ছে। একদম প্ল্যান করে একটা মামলা সাজানো হচ্ছে। ২০০ জন আসামি, হয়তো সেখানে ১০০ জনের সম্পৃক্ততা আছে। বাকি ১০০ জনকে রাজনৈতিকভাবে ও ব্যবসায়িকভাবে কাবু করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলায় চাপ দিয়ে অর্থ নেয়া-এই কাজগুলো করা হচ্ছে। তাহলে স্থানীয়ভাবে পুলিশ প্রশাসনের যে সদস্যরা বা যারা এটা করছেন তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারছে না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে, বিচারিক প্রক্রিয়াগুলো বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে, বিভিন্ন দিকে চাপ প্রয়োগ করে অন্যদিকে রায় নেয়া হচ্ছে। এখানে আইন মন্ত্রণালয় কিছু করতে পারছে না। প্রত্যেকটা জায়গায় কিছু স্পেশাল পরিবর্তন আছে। কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় সিস্টেম যেভাবে চলতো-একটা উপজেলাকে চিন্তা করে, একটা থানা ধরি, ইউএনও অফিস ধরি, ভূমি অফিস, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ধরি প্রত্যেক জায়গায় আগে যে কালচারগুলো ছিল, ওই কালচারগুলোর বাস্তবায়ন দেখতে পারছি। শুধুমাত্র মানুষগুলো পরিবর্তন হয়েছে।’
৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ দিবস। এটি নিয়ে এনসিপির দুই মুখ্য সংগঠক প্রতিবাদ জানিয়েছেন। হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ দিবস না। ৮ আগস্ট আমাদের পরাজয় দিবস। বলেছেন, ডিপ স্টেট রাজনৈতিক দলগুলো আর কথিত সুশীল সমাজ আমাদের সাথে বেঈমানি করেছে। বিএনপি কি খুশি ৮ আগস্ট নিয়ে? কারণ বিএনপির কোনো নেতা এটা নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি। নতুন বাংলাদেশ দিবস নিয়ে কেন বিএনপি কথা বলেনি ! নাকি বিএনপির কেবল নির্বাচন নিয়েই সকল মাথাব্যাথা, নির্বাচন হলেই তারা খুশি? জবাবে সাখাওয়াত সায়ন্ত বলেন, ‘প্রথমত একটা সরকার কী করলো না করলো তা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হবে-এটার প্রয়োজন বোধ করে না বিএনপি। এটা এতো বড় কোনো ইস্যু না। বাংলাদেশে একটা গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হয়েছে। গণহত্যা করে তারা পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশে নতুন করে কিছু আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, যেখানে গণতন্ত্র উত্তরণ বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার এবং রাজনীতি করার ও রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করার যে অধিকার সেটা যাতে মানুষ ফিরে পায় সেরকম একটা আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। সেটা বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলছে। বিএনপি ওই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে। আজ সারজিসের কথা প্রায় ১২-১৩ মিনিট ধরে শুনছিলাম। আমি এক নতুন সারজিস দেখছিলাম। নতুন সারজিস দেখছিলাম কেন বললাম, কারণ এই সারজিসের মুখেই আমি প্রধান উপদেষ্টার স্তুস্তি শুনেছি এবং ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, পাঁচ বছর দশ বছর তাকে রাখতে পারলেও তার মন ভরবে না, মনে হয় আজীবন রাখি। সেই সারজিস আজকে বলছেন-এই সরকার তাদের নিয়োগ দেয়া নয়। অথচ প্রধান উপদেষ্টা বলছেন, এই ছাত্ররা গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যারা তার প্রাথমিক নিয়োগদাতা। তাদের তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ঐ সরকারে উপদেষ্টা হয়েছেন। সরকারের সঙ্গে তাদের যে সখ্য, সেটা সর্বজনবিদিত। ড. ইউনূস অভিমান করেন, তিনি দায়িত্বে থাকবেন না, পদত্যাগ করতে পারেন। সেটা প্রথম তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি। সেটা জাতীয়ভাবেও জানানো হয়নি এবং উনার প্রেস সেক্রেটারি জানান না, উনি নিজেও সরাসরি জানান না। এনসিপির দেয়া যে প্রতিনিধি উপদেষ্টা বা উনাদের দলের প্রধান, তিনি উপদেষ্টা ছিলেন তার মাধ্যমে জানতে পাই। বেসিক্যালি আজকে যে কথাগুলো সারজিস বলছেন এটার তিন চারটা কারণ থাকতে পারে। এক হতে পারে তাদের নিয়ে সরকারের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, যে ভ্রুণ তারা তৈরি করেছে সেটা জন্মাবে। এডাল্ট হবে তারপর তার হাতে জমিদারি হিস্যা বুঝিয়ে দেবে।’
সাখাওয়াত সায়ন্থ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিএনপি, আওয়ামী লীগ বা অন্য দলের রাজনীতি নিয়ে সবসময় হ্যাপি ছিল তা নয়। তাদের অনেক ভুল-ত্রুটি ছিল বলে মানুষ একটা পরিবর্তন চাচ্ছিল। আমরাও চাচ্ছিলাম। এনসিপি যেহেতু রাজনৈতিক দল হিসেবে আসছে, তারা এমন একটা রাজনৈতিক কালচার নিজেরা চর্চা করুক। যার মাধ্যমে ওই দলগুলো যেন প্রেসারাইজড হয় যে, আমাদেরকেও জনআকাঙ্ক্ষা ধরে রাখতে হলে রাজনীতি পরিবর্তন করতে হবে। এনসিপি সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
ওই টকশোতে সারজিসকে উদ্দেশ্য করে সাখাওয়াত সায়ন্থ আরও বলেন, ‘তার দলের নেতা দুবৃত্তায়ন করে থানায় ধরা পড়েন। পরে তাদের ছাড়াতে গিয়ে বিতর্কিত হন। তার দলের নেতা নারী কেলেঙ্কারি জড়িয়ে দলকে হেয় ও ছোট করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল মাদারীপুরের তাদের সদস্য সচিবকে তার দলের কর্মীরা কুপিয়েছে। দলের মধ্যে মামলা পাল্টা মামলা শুরু হয়ে গেছে। এখন এই অবস্থার প্রেক্ষিতে যখন তারা দেখেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডনে গেছেন এবং একটা দলের প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন এটা তারা ভালোভাবে নেয়নি। মাঠে যে রকম প্রভাব ফেলতে পারবে আশা করছিল, সেটা তারা পারেননি। সেই পারেনি বলেই সরকারের কোনো কোনো অংশ তাদেরকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখছিল, সেটা তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। যে কারণে তারাও হয়তো এনসিপির দিকে আগের মতো মনোযোগ দিচ্ছে না, যেমন-১৪৪ ধারা ভেঙে যমুনার সামনে গেলেও গরমের মধ্যে ঠান্ডা পানির পরশ দেবে, সেই ঠান্ডা পানির পরশ দেয়ার মুডে সরকার হয়তো নেই। এটা একটা হতে পারে। অথবা, হতে পারে তারা একটা কিংস পার্টির তকমা থেকে নিজেদের বের করার জন্য আপসের ভিত্তিতে সরকার বিরোধিতা শুরু করেছেন। অথবা, আমরা আট দশ মাস আগে যেটা রিয়ালাইজ করেছি-এই গভর্নমেন্টের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই, তারা টেবিল ওয়ার্কে অত্যন্ত পন্ডিত মানুষ। যার যার সেক্টরে খুবই নামকরা এবং সফল মানুষ এ কথা বারবার আমি টকশোতে বলেছি। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় তারা মোটেই অভিজ্ঞ নন এবং তারা প্রচুর ভুল করছেন। তারা রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে বিভেদ তৈরি হচ্ছে সেটাকে উসকে দিচ্ছেন। কখনো কখনো সেসব কথা বলছিলাম, আজকে সারজিস সেটা করছেন, সেটা তার উপলব্ধি হতে পারে। এখন এই তিনটার মধ্যে যেটা আমি বললাম সেটা কোনটা নাকি এর বাইরে আরো কোনো কারণ আছে সেটা সারজিসের ব্যাপার।’
পাঠকের মতামত
বোল্ডনেস আসলে তোরা কবরের জায়গা পাবি কিনা সেটা সন্দেহ আছে।। এখন যে কয়েকটি দিন আছে সে কয়েকটি দিন পার করতেই লন্ডন গিয়ে পা ধরে আছিস।