অনলাইন
যুদ্ধের সময় সমর্থনের জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানালো ইরান
মানবজমিন ডিজিটাল
(৫ ঘন্টা আগে) ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১১:২২ পূর্বাহ্ন

ইসরাইলের বিরুদ্ধে তেহরানের ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালীন নৈতিক সমর্থন এবং সংহতির বার্তার জন্য ভারতের স্বাধীনতাকামী জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে ইরান।
সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতে জয় দাবি করে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানি দূতাবাস রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সাধারণ নাগরিক ও অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছে, যারা তেহরানের পাশে দৃঢ়ভাবে এবং সোচ্চারভাবে দাঁড়িয়েছিলেন।
ইরানি দূতাবাস এক্সে এক পোস্ট জানিয়েছে, ইহুদিবাদী সরকার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসনের মুখে বিজয় উপলক্ষে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানের দূতাবাস ভারতের সকল মহৎ ও স্বাধীনতাপ্রেমী জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। যার মধ্যে রয়েছে সম্মানিত নাগরিক, রাজনৈতিক দল, সংসদের সম্মানিত সদস্য, বেসরকারি সংস্থা, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক নেতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গণমাধ্যমের সদস্য, সামাজকর্মী।
একইসঙ্গে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরানের সঙ্গে দৃঢ় ও সোচ্চারভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সমস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বাহিনী হামলা চালানোর একদিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প হস্তক্ষেপ করে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। এরপর ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ থামে। তবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও কয়েক ঘণ্টা ধরে শত্রুতা অব্যাহত ছিল। ইসরাইল ও ইরান উভয়ই একে অপরকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছিল।
গত ১৩ জুন ইসরাইল তেহরানের সামরিক বাহিনী, পারমাণবিক স্থাপনা ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানাসহ প্রধান গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় একের পর এক হামলা চালায়। যার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে ভারতীয়দের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি কণ্ঠস্বর উঠে আসে, যার মধ্যে অনেকেই ইরানকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেন। অন্যদিকে মোদি সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানায়। সাধারণ মানুষও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইরানের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে। একইসঙ্গে ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সমালোচনা করে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বলে উদ্বেগ প্রকাশ করলে সাবেক দলীয় প্রধান সোনিয়া গান্ধীসহ বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা তেহরানের প্রতি সম্পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন।
ভারতে ইরানি দূতাবাস যোগ করেছে, যখন ইরানি জনগণ দখলদার ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার নৃশংস সামরিক আক্রমণের শিকার হচ্ছিল, সেই সময়ে সংহতি, নৈতিক সমর্থন, জনসাধারণের বিবৃতি এবং শান্তি-ভিত্তিক সমাবেশ এবং উদ্যোগে সক্রিয় অংশগ্রহণের বার্তাগুলো গভীর উৎসাহ জুগিয়েছে। এই আচরণ স্পষ্টভাবে জাতির জাগ্রত বিবেক, ন্যায়বিচার ও আন্তর্জাতিক আইনের নীতির প্রতি তাদের অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।
একটি দীর্ঘ পোস্টে, ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাতে মার্কিন বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইরান। এটিকে জাতিসংঘের সনদ, মানবিক নীতি ও আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নিয়মের গুরুতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে অব্যাহত সমর্থনের কথা স্বীকার করে ইরানি দূতাবাস বলেছে, এই ঐক্য ও সংহতি যুদ্ধ, সহিংসতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে।
দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ শুরু হয়েছিল পশ্চিম এশীয় দেশটির অভ্যন্তরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পর। তেল আবিব অভিযোগ করেছে, হামাস ও হুতিদের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ইরান সমর্থন করে। ইতিমধ্যে আমেরিকা ইসরাইলের পেছনে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে এবং বলেছে, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে এবং ‘বিশ্ব শান্তির’ জন্য পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে চায়।
ইরান তাদের পক্ষ থেকে এটিকে নির্লজ্জ এবং বিনা উস্কানিতে আগ্রাসন বলে অভিহিত করেছে। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার মাধ্যমে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছে। ২৩ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করার কথা বলার আগে পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা অব্যাহত ছিল।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
পাঠকের মতামত
ভারত ইরানকে সমর্থন জানায়। বিপরীতে পাকিরা ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়। আর তুরস্ক ইরানে মার্কিন হামলার নিন্দা জানায় না। আর সৌদি আরব কাতারে মার্কিন ঘাটিতে ইরানের হামলার নিন্দা জানায়। এইতো মুসলিম জাতির অবস্থা।