মেক্সিকোতে ধর্মীয় উৎসবে বন্দুকধারীদের গুলিতে ১১ জন নিহত

মধ্য মেক্সিকোতে গুয়ানাজুয়াতো রাজ্যে একটি ধর্মীয় উৎসবের সময় বন্দুক হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ২০ জন। স্থানীয় কর্মকর্তারা খবরটি খবরটি নিশ্চিত করেছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ইরাপুয়াতো শহরে যোহন ব্যাপটিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে উৎসব চলাকালীন গুলি চালানোর  ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা সেই ভয়ানক দৃশ্য বর্ণনা করেছেন। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘গোটা অঞ্চলজুড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। লোকেরা আহতদের জীবন বাঁচাতে তাদের গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলো।’

অনলাইনে শেয়ার করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, লোকেরা যখন নাচছিল এবং উদযাপন করছিল, তখন গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আতঙ্কে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিৎকারও শোনা যায়।

বুধবার সকালেও ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ এবং গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। গুয়ানাজুয়াতো রাজ্যের প্রসিকিউটরের কার্যালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১৭ বছর বয়সী একজন, আটজন পুরুষ এবং দুইজন নারী রয়েছেন। এক বিবৃতিতে ইরাপুয়াতোর স্থানীয় সরকার এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত কাজ’ বলে অভিহিত করেছে এবং বলেছে যে, নিরাপত্তা বাহিনী অপরাধীদের খুঁজে বের করবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম এই হামলাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন, তদন্ত চলছে। সংবাদ সম্মেলনে শেইনবাউম বিস্তারিত কিছু না বলে এই গুলি চালানোকে ‘সংঘাত’ বলে উল্লেখ করেছেন। গুয়ানাজুয়াতোর গভর্নর লিবিয়া ডেনিসও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গুয়ানাজুয়াতো তার শিল্প বিকাশ এবং ঔপনিবেশিক যুগের পর্যটন কেন্দ্রের জন্য পরিচিত হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি মেক্সিকোর সবচেয়ে সহিংস রাজ্য হিসেবে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে। কর্তৃপক্ষ সান্তা রোজা ডি লিমা গ্যাং এবং শক্তিশালী জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেলের মধ্যে চলমান সংঘাতকে  রক্তপাতের জন্য দায়ী করেছে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, গত বছর গুয়ানাজুয়াতোতে ৩,০০০-এরও বেশি হত্যাকাণ্ড রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০০৬ সালে মেক্সিকো তথাকথিত মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে অপরাধমূলক সহিংসতায় ৪,৮০,০০০-এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর ১,২০,০০০-এরও বেশি নিখোঁজ হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। 

সূত্র: আলজাজিরা