অনলাইন
সংস্কার কার্যক্রমে আলোচনার চেয়ে খানা-পিনা বেশি চলছে: সালাহউদ্দিন
স্টাফ রিপোর্টার
(৩ ঘন্টা আগে) ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৫:৩৬ অপরাহ্ন

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে চলা সংস্কার কার্যক্রমে আলোচনা চেয়ে খানা-পিনা হয়তো বেশি চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আপনারা এখানে সংস্কার নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু হতাশা কেউ ব্যক্ত করেন নাই। আমরা সবাই আশাবাদী মানুষ, আলোচনা চলছে। তার চাইতে বেশি হয়তো খানা-পিনা চলছে। সময় অনেক লাগছে। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমরা একটা জায়গায় ঐক্যতে আসতে পারব। আমরা ঐক্যতে আসার জন্য আমাদের দলের পক্ষ থেকে কি কি বিবেচনায় নিয়ে তা আপনারা লক্ষ্য করেছেন। আমরা বলেছি, ১০ বছরের বেশি কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীত্বের আসনে বসতে পারবেন না। এখানেই স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হলো, এখানে ফ্যাসিবাদের উপত্তি বন্ধ করে দেয়া হলো।
তিনি বলেন, তারপর কি করা হবে? রাষ্ট্রের সমস্ত গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই এই গণতন্ত্র রক্ষাকবজ হিসেবে শক্তিশালীর ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো হবে। তার জন্য কি করতে হবে? এক নম্বর বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। এটা (বিচার বিভাগের স্বাধীনতা) যদি আমরা সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করতে পারি তাহলে এটা গণতন্ত্রের রক্ষাকবজ হবে। দুই নম্বর, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং তিন নম্বর নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা ৭০ অনুচ্ছেদের মধ্যে সংস্কার এনেছি, সবাই ঐকমত্য হয়েছে। এখন আমরা একটা প্রস্তাব আরও দিয়েছি যে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের সদস্যদের মধ্যে গোপন ব্যালটে স্বাধীনভাবে এমপিরা ভোট দেবে, সেটা আরেকটা বিপ্লব হবে। আর প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ আমরা ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করলাম। সেটা কী আমাদের বড় ধরণের অর্জন নয়। আমরা যদি প্রতিক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগকে সীমাবদ্ধ করি আইনিভাবে-সাংবিধানিকভাবে তাহলে কিন্তু নির্বাহী বিভাগ দুর্বল হবে, রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনা করা যাবে না। আর যদি যে যার জায়গায় নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইনসভা তার তার সীমাবদ্ধের মধ্যে কাজ করতে বাধ্য থাকে, সেই ব্যবস্থাটা আমরা গ্রহণ করি। তাহলে প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের সংস্কার হবে। আমরা সেই সংস্কার চাই যে, সংস্কারের মধ্যে কোনো বিভাগের ক্ষমতা খর্ব হবে না।
তিনি বলেন, এখন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রচেষ্টার মধ্যে যে, নির্বাহী বিভাগকে যত বেশি নিয়ন্ত্রিত করা যায়। সেটা নির্বাহী বিভাগকে অতীতে একজন স্বৈরাচার হয়েছিল, সেজন্য নির্বাহী বিভাগকে আমরা বিলুপ্ত করতে পারব না, দুর্বল করতে পারব না। একজন সংসদীয় পদ্ধতিতে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো, সেজন্য আমরা আইনসভাকে বিলুপ্ত করতে পারব না, দুর্বল করতে পারব না। আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স এবং একটা হারমোনিয়াস কোপারেশন, একটা মধুর সম্পর্ক, একটা পাহারাদার সৃষ্টি করা, সেইফ গার্ড সৃষ্টি করার জন্য সকল অর্গানগুলোকে সেইভাবে শক্তিশালী করা। সকল গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীর ভিত্তির উপরে দাঁড় করানো, যাতে করে তারা নিজস্ব এখতিয়ারের মধ্যে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তাহলে আর কোনোদিন এদেশে স্বৈরাচারের উপত্তি হবে না। আমরা ক্রমান্বয়ে সেদিকে যাচ্ছি।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, শুধুমাত্র নির্বাহী বিভাগকে দুর্বল করার মধ্য দিয়ে কিন্তু রাষ্ট্রে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো দাঁড় করানো যাবে না। নির্বাহী বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে, বিচার বিভাগকে বিচার বিভাগের কাজ করতে দিতে হবে এবং আইনসভাকে আইনের কাজ করতে দিতে হবে। সেখানেই থাকবে একটা কমপ্লিট ব্যালেন্স অব পাওয়ার।
সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমি শুধু আপনাদের সবাইকে বলব, চোখ-কান খোলা রাখবেন, খোরগোসের মতো কানগুলো যাতে সব সময় সর্তক থাকে। চোখ খোলা থাকবে কেনো? দেখেন সত্যি সত্যি কি হচ্ছে? (জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে) মূল নীতি যে বির্তক হবে সেখানে একটা প্রবণতাই হবে ধর্মকে বিশ্বাস করা, ধর্ম মানেন কিনা, ধর্মের কথা থাকবে কিনা, সংবিধানে এটা যুক্ত হবে কিনা? আমরা অনেকগুলো বছর পার করেছি, ধর্মে বিশ্বাস করেছি, কিন্তু সংবিধানে লিখেনি। কেনো লিখেনি, আমার অন্তরে যেটা আছে সেটা আমার। আমি মুসলমান আমি এই ধর্মে বিশ্বাস করি, আমি তার কথা বলছি। কিন্তু এই রাষ্ট্রে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান তারাও তো আছে। তারা তো আমার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয়।
সভায় জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
পাঠকের মতামত
এই সালাউদ্দিন ই বিএনপি কে বিপদে ফেলবে, ঠিক যেমন কাউয়া কাদের করেছিল আওয়ামী লীগকে। এই লোক এর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে মনে হয় উনি অলরেডি মন্ত্রী হয়ে গেছেন।
সালাহউদ্দিন সাহেবকে বিশ্বাস করা যায় না। তার গুম নিয়েও অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। পতিত স্বৈরাশাসকের সঙ্গে রয়েছে তার নীবিড় সম্পর্ক।
আপনার মতো শয়তান প্রকৃতির লোকদের জন্যই বিএনপি আওয়ামীলীগের মত ধ্বংস হবে খুব দ্রুত।