ঢাকা, ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

‘এগুলো মব নয়, এটা প্রেসার’- সাম্প্রতিক ইস্যুতে প্রেস সচিবের মন্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার

(৫ ঘন্টা আগে) ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৩:৪৪ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৪:১৯ অপরাহ্ন

mzamin

সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ঘটনাকে ‘মব অ্যাকশন’ হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবণতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘আপনারা যেটাকে মব বলছেন, আমি সেগুলোকে মব বলছি না, এটা প্রেসার। যারা ১৫ বছর ধরে নিপীড়িত হয়েছেন, তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও আইন বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এই সভায় ‘সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ’ ও ‘জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা একটি ব্যতিক্রমী সময় অতিক্রম করছি। গণমাধ্যমে একক নিয়ন্ত্রণের যুগ আমরা দেখেছি। শেখ হাসিনার শাসনামলে যেভাবে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, আমরা চাই না সেগুলো আমাদের আমলে হোক। সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হতো—প্রশাসনিক চাপ, সামাজিক চাপ ও অর্থনৈতিক চাপ।’

তিনি দাবি করেন, ‘মন্ত্রী, ডিজিএফআই, ডিবি ও সিটিটিসি থেকে ফোন দিয়ে সাংবাদিকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হতো।’ আমরা কাউকে গ্রেপ্তার করছি না, বরং ভুল সংবাদ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের জানিয়ে দিচ্ছি, বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘সিএসএ (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) বাতিল করা হয়েছে। নতুন সাইবার প্রোটেকশন আইনে কোনো পক্ষের আপত্তি নেই।’ তিনি বলেন, ‘অতীতে দলীয়করণের মাধ্যমে সাংবাদিকদের নানা সুবিধা দেয়া হতো, যা সাংবাদিকতার নিরপেক্ষতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’

শফিকুল আলম অভিযোগ করেন, ‘বিগত সময়ে শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করা কিছু সাংবাদিকের একাউন্টে হাজার কোটি টাকার লেনদেন পাওয়া গেছে। যারা ১৫ বছর ধরে অপ-সাংবাদিকতা করেছেন, তারা এখনো ক্ষমা চাননি। তারা জামায়াত-শিবির বা জঙ্গি তকমা দিয়ে মানুষকে গুমের ভিত্তি তৈরি করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের ২৮ জুলাই শীর্ষ কয়েকজন সাংবাদিক শেখ হাসিনাকে মানুষ হত্যায় উসকানি দেন, পুলিশ কেন গুলি করছে না—এমন কথাও তোলা হয়। এখন আবার তারা নতুন সরকারকে সামনে রেখে সেই সুবিধা আদায়ের চেষ্টায় সক্রিয় হয়েছেন।’

গণমাধ্যমের প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘দলের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকতা করলে সেই সাংবাদিকতা আর বিশ্বাসযোগ্য থাকে না। গত ১০ মাসে সরকার চেষ্টা করেছে সাংবাদিকরা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।’ সাবেক আমলে তিনটি জাতীয় নির্বাচনের সংবাদ কাভারেজ নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

ডেইলি স্টারের সামনে গরু জবাই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা মব নয়, এটা প্রেসার। যারা দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ তারা দেখছে, পুরনো ধারার সাংবাদিকতা এখনও চলছে।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘মানুষ এখন আর কাগজের সংবাদ পড়ে না, ভিডিও দেখে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে মন্তব্য বাড়ছে। রাজনৈতিক মদদে অনেকেই গুজব ছড়াচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘যারা অপ-সাংবাদিকতার শিকার হয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পশ্চিমা দেশে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের জন্য শত মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়। গত ১০ মাসে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমা দেশে মিথ্যা সংবাদের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত জরিমানা হয়। আমাদের দেশেও অপ-সাংবাদিকতার শিকার মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, ‘মিয়ানমারে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছিল। এর ফলে নির্যাতন বেড়েছে এবং প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।’

পাঠকের মতামত

আপনার বক্তব্য ১০০% সঠিক। ধন্যবাদ আপনাকে।

শহিদুল ইসলাম
২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৭:৪৪ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status