অনলাইন
সহযোগীদের খবর
সংসদ নির্বাচন: হেভিওয়েটদের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে এনসিপিকে
অনলাইন ডেস্ক
(৬ ঘন্টা আগে) ২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১০:২১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১০:২৫ পূর্বাহ্ন

যুগান্তর
‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: হেভিওয়েটদের বিরুদ্ধেই লড়তে হবে এনসিপিকে’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খরব। প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) শীর্ষ নেতাদের কঠিন লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে। কারণ তাদের নির্বাচনি আসনগুলোতে বিএনপির অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে। আবার জামায়াতে ইসলামীও শক্ত প্রার্থীর মনোনয়ন এক রকম চূড়ান্ত করে ফেলেছে। সেক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এনসিপির শীর্ষ নেতাদের নির্বাচনে জিতে আসা নিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষ করে ভোটের মাঠে গণ-অভ্যুত্থানের আবেগ ও সমর্থনের ঝড় তুলতে ব্যর্থ হলে ফলাফলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। নবসৃষ্ট এনসিপির বিভিন্ন দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে যুগান্তরের কাছে এমন মন্তব্য করেন কয়েকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভোট হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনি মাঠ গোছাতে তৎপর রাজনৈতিক দলগুলো। শুধু তাই নয়, দলগুলোর শীর্ষ নেতারা কে কোন আসন থেকে লড়বেন সেটিও প্রায় নির্ধারণ করে ফেলেছেন। নির্বাচনি প্রচারণাও শুরু করেছেন। তবে অনেকের আগ্রহ গণ-অভ্যুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন দল এনসিপিকে নিয়ে। দলটির নেতারাও ইতোমধ্যে নিজ এলাকায় জোরেশোরে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সূত্রমতে, এনসিপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, সারোয়ার তুষার, ডা. তাসনিম জারা, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও আবদুল হান্নান মাসউদ। তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে লড়তে হবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর হেভিওয়েট প্রার্থীদের বিপক্ষে। বিশেষ করে এনসিপির শীর্ষ দশ নেতার আসনে বিএনপি থেকে সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, কেন্দ্রীয় নেতা এমএ কাইয়ুম, সাবেক এমপি প্রয়াত রহিম উদ্দিন ভরসার ছেলে মোহাম্মদ এমদাদুল হক ভরসা, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে ব্যারিস্টার মুহম্মদ নওশাদ জমির, তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের মতো ব্যাপক জনপ্রিয় প্রার্থীরা রয়েছেন। আরও রয়েছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারাও। এ অবস্থায় এনসিপির নেতারা নিজ আসনে সাধারণ ভোটারদের কীভাবে-কতটুকু মন জয় করতে পারবেন, তার ওপর নির্ভর করবে ভোটের ফলাফল। অবশ্য এ বিষয়ে ভোটের আগে মাঠের সত্যিকার অবস্থা জানতে ভোটার ও উৎসুক জনতাকে নির্বাচনি প্রচারণা পর্যন্ত তো অপেক্ষা করতেই হবে।
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, এনসিপির সম্ভাবনা তৈরি হবে নতুন দল হিসাবে ও দলের অবস্থানগতভাবে, প্রার্থীগতভাবে নয়। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দলটি পুরোনো ধারার রাজনৈতিক দলের চেয়ে নতুন কী ধারা তৈরি করল অথবা ভবিষ্যতের জন্য নতুন কী প্রতিশ্রুতি দিতে পারল-তার ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। এছাড়া মাঠপর্যায়ে এনসিপির সাংগঠনিক ভিত্তি একটা বড় ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করবে। শুধু ফেসবুক স্ট্যাটাস আর সংবাদ সম্মেলন করে ভোটের রাজনীতিতে সফল হওয়া যাবে না। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বের সফলতা আর ভোটের রাজনীতি এক বিষয় নয়। ভোট রাজনীতি বড় কঠিন বিষয়। ভোটের হিসাব-নিকাশ হয় ভিন্নভাবে। এছাড়া আমাদের দেশে এখনো শুধু প্রার্থীকে দেখে ভোট দেওয়ার সংস্কৃতি তৈরি হয়নি।
তিনি বলেন, এনসিপির প্রার্থীদের একেবারে দুর্নীতিমুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনো খারাপ কিছু উত্থাপিত হয় এবং তার সঠিক জবাব জনগণ খুঁজে না পায়, সেক্ষেত্রে ভোটের প্রচারণা ও ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আবার জোট করলেও তাদের জয়ের নিশ্চয়তা নাও থাকতে পারে। যে আসনে যে দলের প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি সেখানে সেই দলের হয়ে নির্বাচন করলে জয় নিশ্চিত হতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ওই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে অঘটন ঘটে যেতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ আসনে (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ২১, ২২, ২৩, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২) নির্বাচন করতে পারেন। আসনটি রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকা হিসাবে বেশি পরিচিত। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জাতীয় নির্বাহী কমিটির ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ ড. এমএ কাইয়ুম। জামায়াতের প্রার্থী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান। ফলে এই আসনে এনসিপির প্রার্থীকে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীর বিপক্ষেই লড়তে হবে। এমএ কাইয়ুম নিজ এলাকায় জনপ্রিয় ও একজন প্রভাবশালী নেতা। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন কাইয়ুমের সহধর্মিণী শামীম আরা বেগম।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নির্বাচনি আসন রংপুর-৪ (পীরগাছা ও কাউনিয়া)। তিনি ইতোমধ্যে নিজ নির্বাচনি এলাকায় সময় দিচ্ছেন। নানা সামাজিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ আসনে সাবেক এমপি প্রয়াত রহিম উদ্দিন ভরসার ছেলে মোহাম্মদ এমদাদুল হক ভরসা বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন। হেভিওয়েট এই প্রার্থী কাউনিয়া উপজেলার সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তাকে প্রার্থী করেছিল বিএনপি। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী এটিএম আজম খান। তিনি রংপুর মহানগর জামায়াতের আমির। জামায়াতের এ নেতাও স্থানীয় পর্যায়ে বেশ প্রভাবশালী ও জনপ্রিয়। সুতরাং এ আসনে এনসিপির সদস্যসচিবকে বিএনপি ও জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করতে হবে।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ভোলা-১ আসনে (সদর) নির্বাচন করতে পারেন। যদিও তার প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে দল থেকে এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। ভোলা জেলার সংগঠক মো. মাকসুদুর রহমান বুধবার যুগান্তরকে জানান, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’ তবে গেল কয়েক মাসে কেন্দ্রীয় নেতা সামান্তা শারমিন কয়েক দফা জেলার সব উপজেলায় সাংগঠনিক সফর করেছেন। তার নামে ঈদে ভোলাবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়। ফলে অনেকে মনে করছেন তিনি এখানে প্রার্থী হচ্ছেন।
এদিকে বিএনপি থেকে ২০১৮ সালে এ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারফ হোসেন শাজাহানের ভাই গোলাম নবী আলমগীর। আগামী নির্বাচনের জন্য তিনি ইতোমধ্যে গণসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিএনপি থেকে আরও মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হায়দার আলী লেলিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ। তবে তরুণ নেতা হায়দার আলী লেলিন মনোনয়ন দৌড়ে অনেক এগিয়ে আছেন। আবার বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ এর আগে বিএনপি জোট থেকে এ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি শক্তিশালী প্রার্থী। জামায়াতের প্রার্থী রয়েছেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম। গেল ১০ মাস ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দলটির সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অতএব বোঝাই যাচ্ছে, এখানে এনসিপির প্রার্থীকে কাদের সঙ্গে নির্বাচনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হবে।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ঢাকা-১৪ আসনের (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ৭, ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ এবং সাভার উপজেলার কাউনিয়া ইউনিয়ন) সম্ভাব্য প্রার্থী। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন। তরুণ উচ্চশিক্ষিত এ নেতা নিজ নির্বাচনি এলাকায় অনেক আগে থেকেই কাজ করছেন। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাশেম আরমান। তিনি জামায়াতের প্রভাবশালী নেতা প্রয়াত মীর কাসেম আলীর ছেলে। তরুণ এই নেতা দীর্ঘ বছর গুম ছিলেন। এনসিপির প্রার্থীকে মাহদী আমিনের মতো জনপ্রিয় নেতার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার নরসিংদী-২ আসনের (পলাশ ও সদর উপজেলার আমদিয়া, পাঁচদোনা ও মেহেরপাগা ইউনিয়ন) সম্ভাব্য প্রার্থী। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তুমুল জনপ্রিয় এ বর্ষীয়ান নেতা সাবেক এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আমজাদ হোসাইন। এনসিপির প্রার্থীকে ড. মঈন খানের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। স্থানীয় এক নেতা জানান, এ আসনে মঈন খানের যে জনপ্রিয়তা, তাতে অন্যদের জামানত থাকবে কিনা সন্দেহ আছে।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা ঢাকা-১৭ আসনে (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড ১৫, ১৮, ১৯, ২০ এবং ক্যান্টনমেন্ট এলাকা) নির্বাচন করতে পারেন। আসনটি রাজধানীর গুলশান-বনানী-ক্যান্টনমেন্ট এলাকা হিসাবে পরিচিত। ঢাকার আসনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিএনপিরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। এ আসনে গত ২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ। আসনটিতে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগরী মজলিশে শূরা সদস্য ডা. এসএম খালিদুজ্জামান। তবে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে একেবারে শেষদিকে বড় চমক দেখাতে পারে।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ আসনের (সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী) সম্ভাব্য প্রার্থী। তিনি নিজ এলাকায় অনেক আগে থেকে কাজ করছেন। আসনটি মূলত বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এ আসনে সারজিসকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হতেই হবে। এখানে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার মুহম্মদ নওশাদ জমির। তিনি সাবেক মন্ত্রী, স্পিকার ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে। আসনটিতে এ পরিবারের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও জেলা আমির অধ্যাপক ইকবাল হোসেন। স্থানীয়রা জানান, ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের মতো প্রার্থীর কাছে সারজিস আলম কতটা সুবিধা করতে পারবেন তা এখন দেখার বিষয়।
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ আসনে (দেবিদ্বার) নির্বাচন করতে পারেন। ধারণা করা হচ্ছে এ আসনটিতে বিএনপি-এনসিপি এবং জামায়াতের মধ্যে ত্রিমুখী ভোটের লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। বিএনপি তিন ভাগে বিভক্ত হলেও ভোটের মাঠে দলটি জনপ্রিয়। সাবেক এমপি মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক এমএ আউয়াল খান বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম। কিন্তু আসনটিতে অনেকটা ধূমকেতুর মতো সামনে এসেছেন জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া হাসনাত আবদুল্লাহ। তরুণ প্রজন্মের বড় একটি অংশ এখন তার অনুসারী। ৫ আগস্টের পর তিনি এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে একটা সেতুবন্ধ তৈরি করেছেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম আতিকুর রহমান বাশার বলেন, এ আসনে মুন্সি পরিবারের ঐক্যে জটিল সমীকরণ সৃষ্টি হবে। কারণ এখানে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এ পরিবারের হাতে। অর্থাৎ মুন্সি পরিবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেদিকে মোড় নেবে সেদিকেই পাল্লা ভারী হবে। তাছাড়া আসনটি অনেক আগে থেকে বিএনপির ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। এখানে ভোটের হিসাব-নিকাশে বিএনপির পরেই আওয়ামী লীগের অবস্থান। এখন প্রশ্ন হলো-নির্বাচনটা কোন ক্রাইটেরিয়ায় হবে? এখানে বিএনপির মনোনয়ন কে পাবেন? কাদের সঙ্গে জামায়াতের ঐক্য হবে? নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা হলে এবং ভোটের দিনক্ষণ এগিয়ে এলেই এসব সমীকরণের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী চাঁদপুর-৫ আসনে (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থীসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের নির্বাচনি তৎপরতা লক্ষণীয়। এক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা দৃশ্যমান। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক, বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন ও জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার কামাল উদ্দিন। তবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক। এ আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা আবুল হোসাইন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যুগান্তরকে বলেন, আমরা এখন বিচার এবং সংস্কারটা নিয়ে ফোকাসে আছি। যখনই বিষয়গুলোর ফয়সালা হবে তখন আমরা ওটাতে (নির্বাচনে) যাব। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমার জন্মস্থান ওইখানে (শাহরাস্তি) সেহেতু মানুষের সঙ্গে একটা সংযোগ অবশ্যই ঘটবে। সেই হিসাবে মানুষ যদি চায় তাহলে একটা আশা থাকতে পারে। আমরা দলীয়ভাবে এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। বিচার ও সংস্কার দুইটা বিষয় কমপ্লিট হলে বা দেখার পরে দলীয়ভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেব।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ আসনে (হাতিয়া) সম্ভাব্য প্রার্থী। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে শীর্ষে আছেন এক সময়ের জনপ্রিয় সংসদ-সদস্য প্রকৌশলী ফজলুল হক আজিম। তিনি ১৯৯৬ সালে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে পুনরায় নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি সংসদে একমাত্র স্বতন্ত্র সদস্য হিসাবে নজর কাড়েন। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। এছাড়া হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী তানভীর উদ্দিন রাজিব, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট শাহ মুহাম্মদ মাহফুজুল হক। তিনি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য এবং শাহবাগ পশ্চিম থানার আমির।
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম ‘দেশে মাদকাসক্ত ৮৩ লাখ’। খবরে বলা হয়, দেশে এখন মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা ৮৩ লাখ। মাদকাসক্তদের বেশির ভাগ পুরুষ। নারী ও শিশুদের মধ্যেও মাদকাসক্তি রয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) এক সমীক্ষায় মাদকাসক্ত জনসংখ্যার এই প্রাক্কলন করা হয়েছে। এ ধরনের সমীক্ষা এই প্রথম করেছে ডিএনসি। এর আগে ২০১৮ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট একটি সমীক্ষা করেছিল, সেখানে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছিল ৩৬ লাখ।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ উমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা যদি ৮৩ লাখে পৌঁছে যায়, তবে সেটি দেশের মাদক পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি নির্দেশ করে। এটা প্রমাণ করে, দেশে মাদক একেবারেই নিয়ন্ত্রণে নেই। তিনি মনে করেন, মাদক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোর কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার দেশে পালিত হবে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘দ্য এভিডেন্স ইজ ক্লিয়ার: ইনভেস্ট ইন প্রিভেনশন। ব্রেক দ্য সাইকেল। স্টপ অর্গানাইজড ক্রাইম।’ মানে হলো, ‘প্রমাণ স্পষ্ট, প্রতিরোধে বিনিয়োগ করুন। চক্র ভেঙে ফেলুন। সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন করুন।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমীক্ষাটি শিগগিরই প্রকাশিত হবে। অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, সমীক্ষায় দেশের আট বিভাগের ১৬টি জেলা থেকে ৫ হাজারের বেশি মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে মাদকাসক্তির হিসাব তৈরি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গবেষকেরা স্বীকৃত গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন।
কালের কণ্ঠ
‘সংবিধানের মূলনীতি নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত দলগুলো’-এটি দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঐকমত্যে পৌঁছানোর স্বার্থে প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) নাম পরিবর্তন করে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর গঠন প্রক্রিয়ায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এই প্রস্তাবে একমত হলেও বিএনপিসহ কয়েকটি দল আপত্তি জানিয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পরও এ বিষয়ে একমত হতে পারেনি দলগুলো।
বিএনপি জানিয়েছে, এনসিসিতে ভিন্নমত হলেও একজন ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছর থাকার বিষয়ে তারা সম্মত। একইভাবে সংবিধানের চার মূলনীতির দুটিতে দলগুলোর মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি লক্ষ্য করা গেছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। সংলাপ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে ঐকমত্য কমিশন এনসিসি প্রস্তাব থেকে সরে এসেছে।
এনসিসির পরিবর্তে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ কমিটি শুধু সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। প্রস্তাবিত কমিটির কাঠামোতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল ও তিন বাহিনী প্রধানের নিয়োগ এ কমিটির অন্তর্ভুক্ত হবে না।
সমকাল
দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর ‘প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছর মেয়াদে শর্তসাপেক্ষে রাজি বিএনপি’। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমলে মেয়াদ নির্ধারণে রাজি নয় বিএনপি। দলটি জানিয়েছে, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকলে তবেই প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ নির্ধারণের প্রস্তাবে সায় দেবে। তা না হলে 'কেউ জীবনে ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না'- এ প্রস্তাব সংবিধানে যুক্ত করতে একমত হবে না।
নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন এবং বিস্তারিতয়ানোয় আতার সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনে বিএনপির ঘোর আপত্তি থাকায় নতুন প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে প্রস্তাবিত 'সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি' গঠনেও সায় দেয়নি বিএনপি। দলটির ভাষ্য, এনসিসি এবং নিয়োগ কমিটি একই ধরনের। এ ধরনের পর্যদ হলে নির্বাহী বিভাগ তথা সরকারের ক্ষমতা কমবে; তাহলে বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ নির্ধারণে রাজি হবে না।
গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কারের দ্বিতীয় দফার সংলাপের যষ্ঠ দিনে বিএনপি এ অবস্থান নিলেও অধিকাংশ দল প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ নির্ধারণে একমত হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ২৩টি দল 'সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি' গঠনেও রাজি।
ইত্তেফাক
‘সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন চায় জামায়াত’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বুধবার নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে এ অনুরোধ জানান দলটির তিন সদস্যের প্রতিনিধি। তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেওয়ার বিধান চালু করারও দাবি জানিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়ে নিবন্ধন প্রজ্ঞাপন জারির পরদিন সাক্ষাতে এসব দাবি জানালেন দলটির নেতারা।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও কর্মপরিষদ সদস্য জসিম উদ্দিন সরকার। গতকাল বেলা ১০টা ৪০ মিনিটে জামায়াতের প্রতিনিধিদল সিইসির সঙ্গে সাক্ষাতে আসেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেছি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে হয়, তাহলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হলে দলীয় প্রার্থীদের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মেয়র বানাতে দলীয় প্রভাব কাজে লাগানো হয়। জনমতের প্রতিফলন হয় না। যেটি আমরা অতীতেও দেখেছি। এজন্য আমরা বারবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘অত্যন্ত নাজুক বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের আকাশে ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র যখন বৃষ্টির মতো ঝরেছে, তখন আকাশেই তার অধিকাংশ ঠেকিয়ে দিয়েছে ‘আয়রন ডোম’। ১২ দিনের যুদ্ধে ইরান প্রায় ৫৩২টি মিসাইল ছুড়েছে ইসরায়েলে, যার মধ্যে ৪২টি মিসাইল ভূমিতে আঘাত হেনেছে। অর্থাৎ প্রায় ৯২ শতাংশ মিসাইল আকাশেই ঠেকিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল ঠেকাতে ইউক্রেনের আকাশে গর্জে উঠছে আমেরিকান প্যাট্রিয়ট, জার্মান আইআরআইএস-টি ও ইসরায়েলি ডেভিডস স্লিং। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত-পাকিস্তানের অতিসাম্প্রতিক যুদ্ধে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ভারতে গর্জে উঠতে দেখা গেছে রাশিয়ায় তৈরি অত্যাধুনিক এস-৪০০ কিংবা ভারত-ইসরায়েলের যৌথভাবে তৈরি বারাক-৮। বিপরীতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে পাকিস্তান ব্যবহার করেছে চীনে দীর্ঘপাল্লার এইচকিউ ৯/পি ও মাঝারি পাল্লার এলওয়াই-৮০।
রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ার পর বিপর্যস্ত জান্তা সরকার একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যার অভিঘাত বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলেও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সব মিলিয়ে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই পরিণত হয়েছে আধুনিক যুদ্ধের প্রথম ও প্রধান প্রাচীর হিসেবে। প্রতিটি দেশ এখন আকাশকে পরিণত করছে রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র-নিয়ন্ত্রিত প্রতিরক্ষার অভেদ্য দুর্গে।
ভারত ও চীনের আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের মধ্যে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বঙ্গোপসাগরের উত্তর উপকূলে এবং মিয়ানমারের সীমান্তসংলগ্ন বাংলাদেশ এখন ভূরাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু ভূরাজনৈতিকভাবে এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকা বাংলাদেশের আকাশ কতটা সুরক্ষিত? দেশের সামরিক বাহিনী কতটা প্রস্তুত একটি উচ্চগতির ফাইটার জেট, ক্রুজ মিসাইল বা স্টিলথ ড্রোন মোকাবেলা করতে? তথ্য বলছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী ও পূর্ণাঙ্গ আকাশ প্রতিরক্ষা বলয় গড়ে তুলতে পারেনি। বিশ্বের সামরিক শক্তিগুলো যখন নিজেদের নিরাপত্তা বলয় গঠনে ‘মাল্টি-লেয়ার্ড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’-এর ওপর নির্ভর করছে, তখন বাংলাদেশ এখনো মূলত পুরনো স্বল্পপাল্লার প্রতিরক্ষা কাঠামোর মধ্যেই আবদ্ধ।
আজকের পত্রিকা
‘শর্তে-দ্বিমতে সবকিছুতে আটকে যাচ্ছে ঐকমত্য’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, শর্ত সাপেক্ষে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের প্রস্তাবে একমত বিএনপি। এ ক্ষেত্রে দলটির শর্ত—সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে সাংবিধানিক কমিটি করা যাবে না। তাই প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণে অধিকাংশ দল একমত হলেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গেল ঝুলে। আবার জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) পরিবর্তে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির প্রস্তাবেও ঐকমত্য আটকে গেছে বিএনপি দ্বিমতের কারণে। অন্যদিকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিবিষয়ক প্রস্তাবটি বামপন্থীদের বিরোধিতার কারণে স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে কমিশন পেশ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ষষ্ঠ দিনে এসব আলোচনা হয়। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বেলা ১১টা থেকে সংলাপ শুরু হয়। দুপুর ১২টার পরে ২০ মিনিট এবং দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে বিকেল ৫টার পরে অধিবেশন মুলতবি হয়। গতকালের আলোচনায় সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়।
দেশ রূপান্তর
দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের ফল’। খবরে বলা হয়, ২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর হত্যাকান্ড একটি ‘দীর্ঘমেয়াদি ষড়যন্ত্রের’ ফল বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত পাওয়া সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করেছে, যা বর্তমানে কমিশনের সদস্যরা পর্যালোচনা করছেন। কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে এটি ছিল ষড়যন্ত্র। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নানা মাত্রার সংশ্লিষ্টতার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং বর্তমানে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’
গতকাল বুধবার পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকান্ড তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের তৃতীয় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান কমিশনের সভাপতি। তিনি বলেন, ৮ জন সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের সাক্ষাৎকার জেলে নেওয়া হয়েছে। ৩ জন উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২ জন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ইমেইলে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
পিলখানায় বিডিআর হত্যাকান্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিশন দুজন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতার সাক্ষ্য নিয়েছেন। ওই দুই নেতা ইমেইলে তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী মির্জা আজম।
বাংলাদেশ প্রতিদিন
‘প্রধানমন্ত্রী ১০ বছরে বিএনপি সম্মত’-এটি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী পদের সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছরের বিষয়ে একমত হয়েছে প্রায় সব রাজনৈতিক দল। তবে এ ক্ষেত্রে বিএনপি শর্ত দিয়েছে। তারা জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল না থাকলে এ বিষয়ে একমত আছে।
ঐকমত্যে পৌঁছানোর স্বার্থে প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) নাম পরিবর্তন করে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব করেছে কমিশন। দীর্ঘ আলোচনার পরও এ বিষয়ে একমত হতে পারেনি দলগুলো। একইভাবে সংবিধানের মূলনীতির প্রশ্নেও তাদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি লক্ষ করা গেছে। গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে এ আলোচনা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে, এক ব্যক্তি ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, সংবিধানে এমন বিধান যুক্ত করার বিষয়ে একমত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।