খেলা
নারী সাব চ্যাম্পিয়নশিপ
ভারত না থাকলে সাফে সুযোগ বাড়বে বাংলাদেশের
স্পোর্টস রিপোর্টার
১৮ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে ভারত না খেলা মানেই বাংলাদেশের সুযোগ বেড়ে যাওয়া। সেটা যেকোনো স্তরেই হোক না কেন। নারী ফুটবল, ছেলেদের বয়সভিত্তিক ফুটবলে এই সম্ভাবনা বেশি। ভারতকে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। কাল আনুষ্ঠানিক সভা করে নিষিদ্ধ ভারতকে বাইরে রেখে পথ চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)। ভারত দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে পরাশক্তি। আসন্ন টুর্নামেন্টগুলোতে তারা না থাকলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে।
মেয়েদের সাফে কখনোই বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়নি। ২০১৬ সালে শিলিগুড়িতে একবার রানার্সআপ হয়েছে, সেটি ছিল মেয়েদের চতুর্থ সাফ। ওই আসরের ফাইনালে ভারতের কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত পাঁচ আসরের সবকটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার নাও থাকতে পারে ভারত। যদিও ভারতের জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করবে সাফ। গতকাল ভার্চুয়াল সভা শেষে সাফের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল বলেন, ‘সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত আমরা ভারতের জন্য অপেক্ষা করবো। এর মধ্যে যদি ফিফা থেকে কোনো আপডেট হয়, তাহলে তো কথা নেই। আর যদি এভাবেই থাকে, তাহলে ভারতকে বাদ দিয়েই আমাদের টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে হবে।’ যদি ভারতকে রেখেই টুর্নামেন্ট করতে হয় তাহলে কি নতুন করে গ্রুপিং ও ফিকশ্চার হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে হেলাল বলেন, ‘মেয়েদের টুর্নামেন্টে দল আছে ৭টি। ভারত না থাকলে হবে ৬টি। যে কারণে, গ্রুপিং বদলাবে না। শুধু ভারতকে বাদ দিয়ে ফিকশ্চার ঠিক করতে হবে।’ শেষ পর্যন্ত ভারত না থাকলে শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা জাগবে নেপালেরও। বাংলাদেশ যদি তার সেরাটা দিতে পারে প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আছে। তবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বিষয়টি এতো সহজ ভাবে দেখছেন না। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, সাফে মেয়েদের সিনিয়র বিভাগে সব দেশই ভালো। কাজেই এটা বলা যাবে না ভারত না থাকায় আমরা বিরাট সুবিধা পাবো। তবে ভারত না থাকলে সুযোগ অবশ্যই বাড়বে। ওরা না থাকা মানে মানসিক বাধাও দূর। ভারত শেষ পর্যন্ত না থাকলে আমরা চেষ্টা করবো ভালো করতে। তবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবো, এমনটা বলা যাবে না।’ ভারত না থাকায় বাংলাদেশের সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি দেখছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো। কিছুদিন আগে আমরা মালয়েশিয়াকে হারিয়েছি। টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে আরব আমিরাতের সঙ্গে আরো দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবো। এবারই পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়ে সাফে যাচ্ছি আমরা। সেখানে ভারত থাকলে ভালো হবে। আমরা তাদের হারিয়েই সাফে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’ মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে বরং সুযোগটা বেশি। এর আগে ছেলেদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ও ১৬ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অনূর্ধ্বÑ১৭ বিভাগ এই প্রথম টুর্নামেন্ট হচ্ছে। এই বিভাগে তুলনামূলক বেশি ভালো করা সম্ভব মনে করছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সদ্য সমাপ্ত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবলে রানার্সআপ হওয়া বাংলাদেশ দলের কোচ পল স্মলি অনূর্ধ্বÑ১৭ দলেরও কোচ। তিনিও মনে করেন, ভারত শেষ পর্যন্ত না খেললে বাংলাদেশের সুযোগ বাড়বে। এ বছরের নভেম্বরে ঢাকায় হওয়ার কথা সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ ফুটবল আসর। বয়সভিত্তিক নারী ফুটবলে এমনিতেই বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী। বিভিন্ন বিভাগে চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। ফলে ভারত না থাকা মানে বয়সভিত্তিক নারী বিভাগে বাংলাদেশ আগের চেয়েও আত্মবিশ্বাসী হতে পারে।