শেষের পাতা
করোনা ও ডেঙ্গু সতর্ক সিলেট
ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৮ জুন ২০২৫, বুধবারকরোনা ও ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক সিলেট। শনিবার করোনা আক্রান্ত দুই রোগী সিলেটে শনাক্ত হয়েছেন। তাদের করোনা ডেডিকেটেড শামসুদ্দিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গতকাল শামসুদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা আক্রান্ত দুই রোগীকে দেখে এসেছেন জেলা সিভিল সার্জনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন- আক্রান্তদের মধ্যে একজন বয়স্ক লন্ডন প্রবাসী। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। শনিবার ভর্তির দিন তার শারীরিক অবস্থা কিছুটা খারাপ ছিল। তবে দিন দিন উন্নতি হচ্ছে। এ ছাড়া ভর্তি থাকা আরেক মহিলার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তারা জানিয়েছেন- রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত নতুন করে আর কোনো করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ফলে পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে । স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- শনিবার করোনার দুই রোগী শনাক্ত হওয়ার পরপরই শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালকে করোনার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল করার চিন্তা ভাবনা করা হয়। আগেও ওই হাসপাতাল করোনা রোগীদের জন্য বরাদ্দ ছিল। ওদিকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত এক রোগী চিহ্নিত হয়েছে খবর রটলেও মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত এর সত্যতা মিলেনি। সিলেটে করোনা পরীক্ষা করার জন্য এখন র্যাপিড এন্টিজেন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এর কীট আসে ঢাকা থেকে। তবে কীটের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে র্যাপিড এন্টিজেন কীট ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে করোনার সঠিক পরীক্ষা পদ্ধতি যেটি সেটি হচ্ছে আরটিপিসিআর টেস্ট। এ পদ্ধতির মেশিন একমাত্র ওসমানীতেই রয়েছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করার ফলে পরীক্ষার অনেক উপকরণ নেই। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে উপকরণের জন্য সহায়তা চাওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন- আগামী ক’দিনের মধ্যে হাসপাতালে উপকরণ চলে এলে সঠিক পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে। করোনার জন্য সতর্ক রাখা হয়েছে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মেডিকেল টিমকে। সিভিল সার্জনের একটি টিম বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন। সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন জন্মোজয় দত্ত মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ওসমানী বিমানবন্দরে একটি আইসোলেশন কক্ষ রয়েছে। সেটি চালু করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এছাড়া বিমানবন্দরে যে মেডিকেল টিম রয়েছে সেখানে লোকবল বাড়ানো হয়েছে। নির্দেশনা রয়েছে; বাইরে থেকে করোনার লক্ষণ নিয়ে কেউ এলে তাকে পরামর্শ দেয়া। বাসায় গিয়ে যাতে তিনি আইসোলেশনে থাকেন সে ব্যাপারে সতর্ক করা হবে। একই সঙ্গে করোনা পরীক্ষার জন্য পরামর্শ দেয়া হবে। সিলেটে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেশি না হলেও স্বাস্থ্য বিভাগে দুশ্চিন্তা রয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- গতবার সিলেটে ডেঙ্গুর হটস্পট ছিল জাফলং। এর কারণ হচ্ছে- জাফলংয়ে সিলেটের বাইরে থেকে প্রচুর মানুষ আসেন। তাদের দ্বারা ডেঙ্গুর ট্রান্সমিশন হয়। এবারো জাফলং, সাদাপাথর সহ সিলেটের পর্যটনস্পটগুলোতে বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসেছিলেন। তবে তাদের দ্বারা ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমান মিলেনি। তারপরও পর্যটন এলাকার লোকজনকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১লা জানুয়ারি থেকে ১৭ই জুন পর্যন্ত সিলেট জেলায় ৭ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গোটা বিভাগে ৬ মাসে ২৪ জন রোগী শনাক্ত হন। বর্তমানে নগরীর নর্থইস্ট হাসপাতালে একজন রোগী ভর্তি রয়েছেন। সিলেটে দক্ষিণ সুরমা হচ্ছে ডেঙ্গুপ্রবণ এলাকা। ওইসব এলাকায় নিয়মিত লার্ভা সার্সিং কর্মসূচি চলছে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন- লার্ভা সার্সিং কর্মসূচির মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবিলা করা সম্ভব।