অনলাইন
ইসরাইল-ইরান সংঘাতের আবহে জি-৭ ছেড়ে তড়িঘড়ি আমেরিকা ফিরছেন ট্রাম্প
মানবজমিন ডিজিটাল
(৪ ঘন্টা আগে) ১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ১:০৮ অপরাহ্ন

ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে দ্রুত বর্ধনশীল সংঘাতের আবহে সোমবার রাতে কানাডায় অনুষ্ঠিত হতে চলা গ্রুপ অফ ৭ সম্মেলন বা জি-৭ বৈঠক ছেড়ে তড়িঘড়ি আমেরিকা ফিরছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট ট্রাম্পের আকস্মিক প্রস্থানের বিষয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি। তিনি এক্স-এ লিখেছেন যে, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যা ঘটছে তার কারণে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ রাতে রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে নৈশভোজের পরে চলে যাবেন।’ সোমবারের শুরুতে, ট্রাম্প সাংবাদিকদের কাছে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি মধ্যপ্রাচ্য সংকটে আরও বেশি জড়িয়ে পড়ার চাপ অনুভব করছেন। তাই হয়তো তাকে জি-৭ বৈঠক ছেড়ে ছিল যেতে হবে। কিন্তু দুই দিনের বৈঠকের মাঝপথে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও, তিনি কী করতে চেয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। মঙ্গলবার রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত নিয়ে মিত্রদের সাথে একটি অধিবেশনে অংশ নেয়ার এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে মুখোমুখি সাক্ষাতের কথা ছিল ট্রাম্পের। সোমবার সকালে ইরানের উপর হামলায় ইসরাইলের পক্ষে সামরিকভাবে জড়িত হতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে জানতে চাইলে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না।’
সোমবার সন্ধ্যায় একই সম্ভাবনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে লিভিট বলেন, ‘আমেরিকান বাহিনী তাদের প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান বজায় রেখেছে এবং এটির পরিবর্তন হয়নি।’
ইসরাইল ট্রাম্পকে তাদের সামরিক আক্রমণে সামিল হতে উৎসাহিত করে আসছে। ইসরাইলের দাবি, ইরানকে পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যেই এই আক্রমণ। কিন্তু সোমবার রাত পর্যন্ত, ট্রাম্প মার্কিন সামরিক বাহিনীর যুদ্ধে যোগদানের কোনও পরিকল্পনা ঘোষণা করেননি, কেবল ইসরাইলকে আত্মরক্ষায় সহায়তা করার ইচ্ছে ব্যক্ত করেছেন।
হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা আগে বলেছিলেন যে, ট্রাম্প ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়ে ৭টি শিল্পোন্নত দেশের গ্রুপ কর্তৃক প্রস্তুত করা একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায়, যখন ট্রাম্প ওয়াশিংটনে ফিরে যাওয়ার জন্য কানাডা ত্যাগ করেন, তখন তিনি ইরানের একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন। ট্রাম্প এবং অন্যান্য নেতাদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরান আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা এবং সন্ত্রাসের প্রধান উৎস। আমরা ধারাবাহিকভাবে বলে এসেছি যে ইরান কখনই পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না। আমরা জোর দিয়ে বলছি যে ইরান সংকটের সমাধান মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে শত্রুতা হ্রাসের দিকে পরিচালিত করবে, যার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতিও অন্তর্ভুক্ত।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায়, ট্রাম্প একটি ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, ইরানের রাজধানী তেহরানের সমগ্র জনগণের উচিত স্থান পরিত্যাগ করা। ট্রাম্প স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে, ইসরাইলের হামলার পর শুরু হওয়া সংঘাতের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ইসরাইলি হামলার ফলে ইরান থেকে প্রতিশোধমূলক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন আঘাত হানতে শুরু করেছে, যার মধ্যে কিছু ইসরাইল জুড়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। ইরান বারবার বলেছে যে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইচ্ছা পোষণ করে না তবে দেশের প্রয়োজনে পারমাণবিক শক্তি বিকাশের অনুমতি পাওয়ার উপর জোর দিয়েছে।
সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস