অনলাইন
এবারের ডাকসু ঘিরে যত প্রশ্ন
আসাদুজ্জামান খান
(৫ ঘন্টা আগে) ১৭ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৩:১০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৭:০০ অপরাহ্ন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক ৯ দফার একটি ছিল ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র সংসদ চালু করা। ১০ মাস পর অনেক নাটকীয়তা শেষে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে। কারা হতে পারবেন প্রার্থী, কারা হবেন ভোটার, কয়টি পদে হবে লড়াই তা নিয়ে নিরন্তর প্রশ্ন, আলোচনা-সমালোচনা।
ঢাবির উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার সঙ্গে আরও ৯ জন শিক্ষককে রিটার্নিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
যদিও সবশেষ ডাকসুতে ৬ জনের কমিশন ছিল। ‘অধিকতর স্বচ্ছতা’ এবারের এই বর্ধিত কমিশনের কারণ হিসাবে দেখানো হচ্ছে।
যারা হতে পারবেন প্রার্থী ও ভোটার: সবশেষ সংস্কারকৃত ডাকসু গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হতে হলে শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হতে হবে। যিনি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে স্নাতক, মাস্টার্স বা এম.ফিল. প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত এবং কোনো আবাসিক হলে অবস্থানরত বা সংযুক্ত। সান্ধ্যকালীন কোর্স, পেশাদার বা এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট ও ভাষা কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। একইভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও সংযুক্ত কলেজ/ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। যদিও এর আগে ডাকসুর প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ৩০ বছরের অধিক বয়স্ক হলে প্রার্থী হওয়া যাবে না বলে জানানো হয়েছিল,তবে সবশেষ সিন্ডিকেটে এই বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়া হয় ।
ভোট হবে ২৮ পদে, বাড়তি ৪টি পদ, পরিমার্জিত ৩টি: এ বছর বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ৪টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসব পদ হচ্ছে-গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক; ক্যারিয়ার উন্নয়ন সম্পাদক; স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক। তিনটি পদের হয়েছে পরিবর্তন-পরিমার্জন। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদের নাম পরিবর্তন করে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক’ পদ রাখা হয়েছে। এছাড়া কমন রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদককে ‘রিডিং রুম’ যোগ করে ‘কমন রুম, রিডিং রুম এবং ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক’ করা হয়েছে। আগে সাহিত্য সম্পাদক এবং সংস্কৃতি সম্পাদক দুটি আলাদা পদ ছিল। এখন সেটি ‘সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক’ পদ করা হয়েছে। নির্বাচিত পদের মধ্যে রয়েছে, সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) তিনটি পদ, সদস্য পদ ১৩ এবং ৫টি সম্পাদক পদে কোনো পরিবর্তন আসছে না। অপরিবর্তিত ৫টি সম্পাদক পদ হলো- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক; আন্তর্জাতিক সম্পাদক; ক্রীড়া সম্পাদক; ছাত্র পরিবহন সম্পাদক এবং সমাজসেবা সম্পাদক। তবে, নিয়ম অনুযায়ী, ডাকসুর সভাপতি ক্ষমতাবলে উপাচার্যই থাকছেন এবং তিনি একজন অধ্যাপককে কোষাধ্যক্ষ মনোনীত করেন। ফলে এ দুটি পদে কোনো ভোটগ্রহণ হবে না।
নির্বাচন কি জুলাই মাসেই?
নির্বাচন কমিশন গঠনের পর একাধিক গণমাধ্যম ঢাবি প্রক্টরের বরাত দিয়ে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ কিংবা জুলাইয়ের ৩১ তারিখকে ডাকসু নির্বাচনের সময় বলে সংবাদ প্রকাশ করে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রশ্ন জাগে- আদৌ এত দ্রুত নির্বাচন হবে কিনা।
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে কখন নির্বাচন হবে। আমরা তো গতকাল মাত্র দায়িত্ব পেলাম। এখনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে আমরা সকলে বসবো, বসে ডেট ফিক্সড করব। আর গণমাধ্যমে যে খবরটা গিয়েছে সেটা হচ্ছে সম্ভাব্য, হতেও পারে নাও হতে পারে- এটাই একেবারে সঠিক এমনটা নয়। আমাদের এখনো অনেক আলোচনা বাকি।
তবে প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জুলাই মাসের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে প্রশাসন।