ঢাকা, ১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ জিলহজ্জ ১৪৪৬ হিঃ

প্রথম পাতা

র‌্যাবের পোশাক পরে উত্তরায় কোটি টাকা ছিনতাই

স্টাফ রিপোর্টার
১৫ জুন ২০২৫, রবিবার
mzamin

ফিল্মি কায়দায় ঢাকার উত্তরা থেকে মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস নগদের ১ কোটি ৮ লাখ ৪৪ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এলিটফোর্স র‌্যাবের কটি পরিহিত ছিনতাইকারীরা কালো মাইক্রোবাসে এসে দুই বাইকে থাকা চারজনের তিনজনকে তুলে নিয়ে তাদের কাছে থাকা টাকার ব্যাগ নিয়ে চলে যায়। গতকাল সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২নং রোডে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পুলিশ তদন্তও শুরু করেছে। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাও এ নিয়ে কাজ করছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে প্রকাশ্য র‌্যাবের পোশাক পরে এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা কিছু বিষয়কে সন্দেহের তালিকায় রেখেছে। এসব বিষয় যাচাই বাছাই করার পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, এটি পরিকল্পিত ছিনতাইয়ের ঘটনা হতে পারে। এজেন্টের ভেতর থেকে কারও যোগসাজশ ও সহযোগিতায় এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তাই কাউকে সন্দেহের বাইরে রাখা হচ্ছে না। 

ভুক্তভোগী, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, কালো মাইক্রোবাসে করে যারা এসেছিল তাদের প্রত্যেকের পরনে র‌্যাবের কটি পরা ছিল। তারা  প্রথমে হঠাৎ করে দুটি মোটরসাইকেলের চারজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। যারা নগদ এজেন্টের নিকটস্থ বাসা থেকে ওই টাকা বহন করে ডিস্ট্রিবিউটর কার্যালয়ে আনছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে ওই টাকাসহ জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেয়া হয়। জোরপূর্বক উঠিয়ে নেয়ার সময় আরেকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তার কাছেও একটি টাকার ব্যাগ ছিল। বাকি তিনজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকারীরা টাকা রেখে উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে ফেলে রেখে চলে যায়। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ছিনতাইয়ের ঘটনায় যে কালো মাইক্রোবাস ব্যবহার করা হয়েছে সেটির নাম্বার ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে ছিনতাইকারীদের শনাক্তের কাজ চলছে। এ ছাড়া নগদের ভুক্তভোগী এজেন্টদের থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে উত্তরা পশ্চিম থানা। 

পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নগদের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়ন উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৩৭ বাসার তিনতলায় বসবাস করেন। সেখান থেকে হেঁটে পাঁচ মিনিট দূরত্বেই নগদের ডিস্ট্রিবউটিং অফিস। ছিনতাই হওয়া টাকা নয়নের বাসায় ছিল। গতকাল নগদের ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের চারজন মোটরসাইকেলযোগে ওই টাকা ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে আনছিলেন। তার পাশের একটি মোড়েই আগে থেকে একটি হায়েস গাড়ি নিয়ে ওত পেতে ছিল ছিনতাইকারীরা। যখন তারা টাকা নিয়ে ওদিকে যাচ্ছিলেন তখন র‍্যাব সদস্য পরিচয়ে ও র‍্যাবের কটি পরিহিত কয়েকজন তাদেরকে অস্ত্রের মুখে আটকায়। চারজনের মধ্যে কাউসার, লিয়াকত ও আব্দুর রহমান নামে তিনজনকে পিস্তল দেখিয়ে জিম্মি করে টাকার ব্যাগসহ হায়েস গাড়িতে ওঠানো হয়। আরেকজন ওমর হোসেন একটি ব্যাগসহ দৌড়ে পালাতে সক্ষম হয়। 

ডিএমপি’র উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষ চারজনকে থানা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছিনতাই হওয়া টাকার পরিমাণ সম্পর্কে তারা জানিয়েছেন, দু’টি মোটরসাইকেলে করে টাকা আনা হচ্ছিল। এক মোটরসাইকেলে ছিল ১ কোটি ৮ লাখ ৪২ হাজার। ওমর হোসেন জানিয়েছে, তিনি যে ব্যাগ নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন তাতে এক লাখের কিছু বেশি টাকা ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত তিনজন জানিয়েছেন, ছিনতাইকারীরা তাদের চড় থাপ্পর মেরেছে। কিন্তু কেনো নগদের ডিস্ট্রিবিউটর নয়নের বাসায় টাকাগুলো রাখা হয়েছিল? বন্ধের দিনে এতো সকালে এতোগুলা টাকা কেন বাসা থেকে অফিসে নেয়া হচ্ছিল তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে আলাদাভাবে টাকা বহন করা হচ্ছিল জানালেও একটি মোটরসাইকেলে ছিল ১ কোটি ৮ লাখ টাকা। আর সেই টাকা টার্গেট করাটা সন্দেহজনক। ডিসি আরও জানান, নগদের ওই ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের পার্টনার দুইজন। একজন আব্দুল খালেক নয়ন। টাকাটা তার বাসায় রাখা ছিল। আরেক পার্টনার তারিকুজ্জামান। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে এখনো ঢাকা ফেরেননি। আমরা নয়নকে থানায় ডেকেছি। আরও বিস্তারিত  জানার চেষ্টা করছি। তারা কাউকে সন্দেহ করছেন কিনা! আমরাও আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিগত সহায়তায় জড়িত ছিনতাইকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছি। ডিসি আরও বলেন, অনেক সময় ভেতরেই ইনফর্মার থাকে। আমরা এখনো জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তবে ক্লু পেতে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
 

পাঠকের মতামত

খোজ নিয়ে দেখেন ওরা র‌্যাবেই কাজ করে কোন না কোন ক্যাপাসিটিতে

জামুরা
১৫ জুন ২০২৫, রবিবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

প্রথম পাতা থেকে আরও পড়ুন

প্রথম পাতা সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status