অনলাইন
স্ত্রীর যৌতুকের অভিযোগে হতাশ স্বামী হাতকড়া পরা অবস্থায় বিক্রি করছেন চা
মানবজমিন ডিজিটাল
(১৮ ঘন্টা আগে) ১৪ জুন ২০২৫, শনিবার, ৫:৩২ অপরাহ্ন
যৌতুকের জন্য হয়রানি এবং আইনি অবিচারের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদের পথ বেছে নিয়েছেন ভারতের রাজস্থান রাজ্যের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। কৃষ্ণকুমার ধাকর রাজস্থানের আন্তা শহরে, তার শ্বশুরবাড়ির এলাকার ঠিক সামনে একটি চায়ের দোকান খুলেছেন। দোকানের নাম ‘498A T Cafe’। তার স্ত্রী যে ধারায় তার বিরুদ্ধে যৌতুক নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছিলেন, সেই ধারার উল্লেখ করে চায়ের দোকানের নাম রেখেছেন তিনি। দোকান বা চা স্টলের চারিদিকে রয়েছে বিভিন্ন পোস্টার। কোনওটাই লেখা, ‘যব তক নহি মিলতা ন্যায়, তব তক উবলতি রহেগি চাই’ (যতক্ষণ না আমি ন্যায়বিচার পাই, ততক্ষণ চা ফুটতে থাকবে)। আবার কোনওটায় লেখা, ‘আও চায়ে পে করে চর্চা, 125 মে কিতনা দেনা পড়েগা খরচা।’ ২০১৮ সালে মীনাক্ষী মালভকে বিয়ে করেন কৃষ্ণ। স্ত্রী ও নিজের মাকে নিয়ে ছিল সুখের সংসার। স্বামী-স্ত্রী মিলে শুরু করেন মৌমাছি পালনের ব্যবসা। ধীরে ধীরে সমৃদ্ধি বাড়তে থাকে। হঠাৎই সুখের সংসারে ছন্দপতন ঘটে ২০২২ সালে। কৃষ্ণের অভিযোগ, স্ত্রী কোনও আগাম কিছু না জানিয়েই হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে ফিরে যান। কয়েক মাস পরেই কৃষ্ণর স্ত্রী ভারতীয় দণ্ডবিধির 498A (বধূ নির্যাতন) এবং 125 (ভরণপোষণ) ধারায় কৃষ্ণর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। শুরু হয় কৃষ্ণের আইনি সংগ্রাম। এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য ছুটতে হয় তাঁকে। কৃষ্ণের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে কৃষ্ণ বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে আমি ন্যায়বিচারের জন্য এক আদালত থেকে অন্য আদালতে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমার বৃদ্ধ মা আছেন। তিনি আমার উপর নির্ভরশীল। আমি একটি টিনের চালার ঘরে থাকি এবং খোরপোশ দিতে দিতে আমার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। অনেকবার আমার জীবন শেষ করার কথা ভেবেছিলাম, কিন্তু তার পরেই আমার মনে পড়ে আমিই মায়ের একমাত্র ভরসা।’এর পরেই এক অদ্ভুত প্রতিবাদের পথ বেছে নেন কৃষ্ণ। নিজের শ্বশুরবাড়ির সামনেই একটি চায়ের দোকান চালু করেন তিনি। যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন-এর মামলা করা হয়েছে, সেই কারণে দোকানের নামও রাখেন 498A দিয়ে। হাতে শিকল পরেছেন কেন? কৃষ্ণের উত্তর, 'তিন বছর ধরে অপমান এবং যন্ত্রণা সহ্য করেছি। সেই কষ্টের কথা তুলে ধরতেই এই আয়োজন।'তবে তার স্ত্রী মীনাক্ষী মালভ পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন "সে আমার বাবার কাছে জমি কেনার জন্য টাকা চেয়েছিল। আমরা যখন তা দিতে রাজি হইনি , তখন সে আমাকে মারধর করে। তারপর আমি আমার বাবার বাড়িতে ফিরে আসি। আমি বিবাহবিচ্ছেদের জন্য প্রস্তুত, তবে প্রথমে আমার নামে নেওয়া সমস্ত ঋণ শোধ করতে হবে।"
সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে