অনলাইন
পুশইন ঠেকানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
কূটনৈতিক রিপোর্টার
(১ দিন আগে) ৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৯:৪৪ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৯ পূর্বাহ্ন

পুশইন বন্ধে ফের ভারতকে চিঠি দিচ্ছে বাংলাদেশ। শিগগিরই নতুন করে চিঠি যাবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মানুষকে বলপূর্বক ঠেলে পাঠানো (পুশইন) অব্যাহত রেখেছে ভারত। সমস্যাটি দিনে দিনে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এর সমাধানে কনস্যুলার ডায়ালগের আওতায় ভারতের সঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ। সেগুনবাগিচায় মঙ্গলবার এসব বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। এক প্রশ্নের জবাবে পুশইন ঠেকানো সম্ভব না হওয়ার কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা বলেন, পুশইন হচ্ছে, ফিজিক্যালি ঠেকানো সম্ভব না। এটা নিয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের চিঠি আদান-প্রদান হচ্ছে। আমরা আজকে বা আগামীকাল আরেকটা চিঠি দেবো এ বিষয়ে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি, এটা যেন পদ্ধতি অনুযায়ী যাওয়া হয়। তারা কিছু ক্ষেত্রে বলেছে, এক্ষেত্রে কিছু জট আছে; তোমরা সেগুলো ঠিকমতো করছো না (ভারতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশি)। আমরা চেক করে দেখেছি, খুব দীর্ঘদিনের তালিকার (ভারতে থাকা অবৈধ বাংলাদেশি) মধ্যে আছে একটা এবং আমরা পাশাপাশি এটাও দেখেছি যে, আসলে তাদের তালিকা অনুযায়ী আমরা চেকআপ করে অনেককে নিয়েছি। উপদেষ্টা বলেন, কাজেই দুই পক্ষেরই বক্তব্য থাকতে পারে এখানে। আমরা চেষ্টা করছি কনস্যুলার ইস্যুজ নিয়ে একটা মেকানিজম আছে, সেটাকে ব্যবহার করে এ জিনিসটাকে একটা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসার। আমরা চাইলে নিয়মিত পদ্ধতিতে জিনিসটি হতে পারে। নিয়মের বাইরে যেন না যায়। কনস্যুলার ডায়ালগে বসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় একটা চিঠি পাঠাবো। যেটাতে আমরা কিছু পদ্ধতির কথা আরেকবার উল্লেখ করবো এবং আমাদের যে পদ্ধতি আছে, কনস্যুলার আলাপ-আলোচনার সেটাও আমরা ব্যবহার করার চেষ্টা করবো। কনস্যুলার ডায়ালগ হতে পারে। যেহেতু এখন একটা ইস্যু আছে। এটাও হতে পারে।
গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ভারত এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মানুষকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এসব ব্যক্তি অবৈধভাবে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাস করছিলেন। আর বাংলাদেশ সরকার বলছে, এভাবে পুশইন ঠিক নয়। যদি কোনো অবৈধ বাংলাদেশি ভারতে থেকে থাকে সেটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যেন ফেরত দেয়া হয়। সরকারের সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারত থেকে পুশইন বন্ধে এখন পর্যন্ত পাঁচটি চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এখন আরেকটি চিঠি যাবে দিল্লিতে।
শেখ হাসিনার ফেরানোর চিঠির জবাব এখনো মেলেনি: এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে গত ২৩শে ডিসেম্বর ভারতের কাছে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। সরকারের তরফ থেকে বারবার বলা হয়েছিল, চিঠির জবাব না পেলে ফের চিঠি যাবে ঢাকা থেকে। তবে এখনো দিল্লি থেকে কোনো জবাব আসেনি। আর পাঁচ মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও অন্তর্বর্তী সরকার পরবর্তী চিঠি পাঠায়নি। এ প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা এখনো কোনো পত্র দেইনি। এটুকু আমি বলতে পারি। আরেকটি পত্র দেইনি। তবে প্রয়োজন হলে অবশ্যই দেয়া হবে। শেখ হাসিনার ব্যাপারে আমরা যেটুকু জানিয়েছি, সেটার কোনো প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে নাই।
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে সরকার এখন নমনীয়?
৫ই আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর সীমান্তে কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু হলে কঠোর অবস্থান বা বিবৃতি দেয়া হতো। শুধু তাই, ঢাকায় ভারতীয় দূতকে তলবও করা হয়েছে দফায় দফায়। তার পাল্টা তলবও দেখা গেছে দিল্লির দিক থেকে। দিল্লিতে বাংলাদেশি দূতকে তলব করেছে ভারত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একই ইস্যুতে সরকারকে বেশ নমনীয় অবস্থায় দেখা গেছে, সেই অর্থে কোনো বিবৃতিও আগের মতো দেখা যাচ্ছে না। এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন- সরকারের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। এটা নিয়ে নমনীয়তা দেখানো সম্ভব না। আমরা এটার প্রতিবাদ করছি এবং এই প্রক্রিয়া চালু আছে এবং অবশ্যই এ ব্যাপারে খুব শক্তভাবে প্রতিবাদ করবো। এই ফ্যাক্টরটাকে কখনো মেনে নেয়া হবে না যে, গুলি করে সীমান্তে মানুষ মেরে ফেলা হবে। এটা পৃথিবীর আর কোনো সীমান্তে নেই। প্রসঙ্গত, গত শনিবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রদীপ বৈদ্য (২২) নামের এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন।
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে ভারতনির্ভরশীলতা কমেছে:
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাতিলের ব্যাপারে আমরা যেটা দেখতে পেয়েছি, এটা একটা শাপে বর হয়েছে আমাদের। তাদের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা কমেছে। আমাদের এক্সপোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না এবং একটা মেকানিজম দাঁড়িয়ে গেছে- দিল্লির পরিবর্তে সিলেট থেকে হচ্ছে। তৌহিদ হোসেন বলেন, ট্রেড যাচ্ছে এবং কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আমি মনে করি, এটা এক দিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। আমাদের কেন সবকিছুর জন্য অন্য দেশ থেকে ট্রানজিট করতে হবে? যেহেতু এখান থেকে সরাসরি ফ্লাইট যাচ্ছে, এখন স্পেনে যাচ্ছে। ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পাল্টা জবাব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরাও আমাদের একটা প্রয়োজনীয় সুবিধা বাতিল করেছি। সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা যেটা করেছে তাদের প্রয়োজনের জন্য করেছে কিনা, আমরা জানি না।
পাঠকের মতামত
ইনিই তো বলেছিলেন, ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। তো কি এমন হলো যে এখন চোখ বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে।
ফালায় দেন - কাম হইবো
পুশইন ঠেকান সম্ভব নয়, এটা আমাদের এভাবে ওপেনলি বলার কি দরকার। এইভাবে নিয়ম বহির্ভূত পুশইনের বিরুদ্বে সতর্ক থাকতে হবে। জনগণ ও বর্ডার বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
Not possible, to stop push ins? Is our foreign adviser familiar with the concept of brainstorming - to come up with ingenious ideas that are not conventional? We need some extra clever/competent people to deal with this matter, URGENTLY.
জনাব তৌহিদ আপনি হচ্ছেন “শোকেস ফরেন উপদেষ্টা” পুশ ইন ঠেকানো সম্ভব না হলে পদত্যাগ করুন।