অনলাইন
এনসিপি’র বাজেট প্রতিক্রিয়া
চেষ্টা থাকলেও অর্থনৈতিক রূপান্তরের ভিশন সম্পূর্ণভাবে আসেনি
স্টাফ রিপোর্টার
(১ দিন আগে) ৩ জুন ২০২৫, মঙ্গলবার, ৭:৫০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৭ পূর্বাহ্ন
এই বাজেট নিয়ে সরকারের ভেতরে অনেক চেষ্টা ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক রূপান্তরের সেই ভিশন এই বাজেটে সম্পূর্ণভাবে আসেনি বলে মতামত দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
মঙ্গলবার বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলন করে এনসিপি। রাজধানীর বাংলামোটরের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো অ্যাড্রেস করতে পেরেছে। কিন্তু এর সঠিক সমাধান-কৌশল কিংবা বৈষম্যহীন সমাজের ভিশন এই বাজেটের মধ্য দিয়ে আসেনি। নতুন বন্দোবস্তে অর্থনৈতিক রূপান্তরের যে আকাঙ্ক্ষা তার পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেনি।
তিনি বলেন, মানুষের আকাঙ্ক্ষা ছিল, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া নতুন বাংলাদেশে ধনী-গরিবের আয়বৈষম্য কমে আসবে। কিন্তু বাজেটে এর কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দেয়, তাদের করের আওতায় আনার তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। এর ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ওপর করের চাপ অব্যাহত থাকবে। কিছু নিত্যপণ্যে কর কমানো হলেও নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ওপর যে চাপ, তা গুণগতভাবে কমবে না।
নাহিদ বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার একটা ভিশন, অর্থনৈতিক রূপান্তরের একটা নীতি এই বাজেটে মধ্যে দিয়ে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু বাজেটে আগের অর্থনৈতিক কাঠামোরই ছাপ দেখা যাচ্ছে। যেহেতু আগের লুটপাট ও ঋণগ্রস্ত অর্থনৈতিক বাস্তবতায় অন্তর্বর্তী সরকারকে পরিচালিত হতে হচ্ছে, ফলে সেই কাঠামোর ভেতরেই এই বাজেট প্রণয়ন করতে হয়েছে। যে কারণে আগের অর্থনৈতিক কাঠামোর অনেক ছাপ বাজেটে দেখা যাচ্ছে।
তিনি বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেন। এরমধ্যে বেকার সমস্যার সমাধান নেই উল্লেখ করে বলেন, বেকার সমস্যা থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল। কর্মসংস্থানের আন্দোলন থেকেই কিন্তু এই গণ-অভ্যুত্থানের সূত্রপাত। ফলে তরুণদের ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা ছিল বেকার সমস্যার সমাধান ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ থাকবে। কিন্তু সেটি বাজেটে দেখা যাচ্ছে না। গত এক বছরে ২৬ লাখ বেকার বেড়েছে। কিন্তু কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য যে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন ছিল, সেই নীতি গ্রহণ করা হয়নি। ফলে এই বাজেট বা অর্থনৈতিক নীতি থেকে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে অথবা বেকার সমস্যা কার্যকরভাবে নিরসন হবে, এমনটি মনে হচ্ছে না।
এছাড়াও তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি খাতে নতুনত্ব নেই বলে উল্লেখ করেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমিয়ে অর্ধেক করার নিন্দা জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট কমানো উচিত নয়। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে যতটুকু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, সেটিও যখন কমানো হয়, তখন প্রবাসী কর্মীদের জন্য সরকারের উদ্যোগ আসলে কী, সেটি পরিষ্কার হয় না। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে ইনসেনটিভ থাকবে এটা প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু বাজেটে সে ধরনের উদ্যোগ দেখা যায়নি।
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বন্ধ করা উচিত উল্লেখ করে এনসিপি’র এই নেতা বলেন, একটা রেজিম চেঞ্জ হয়েছে। এখন ইনসেনটিভ দিয়ে আসলে কালোটাকা সাদা করা যে খুব সম্ভব হবে, তা মনে হয় না। এসময় তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য ৪০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানান এবং বলেন, যথাযথ পুনর্বাসনের জন্য পরিকল্পনামাফিক যাতে টাকাটা খরচ করা হয়। তাদের জন্য দেয়া প্রতিশ্রুতিগুলো যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পূরণ করা হয় এই আহ্বান জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্যসচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, মুশফিক উস সালেহীন প্রমুখ।
পাঠকের মতামত
এই প্রতিবন্ধীগুলো বাজেট নিয়ে কথা বলে? এরা কি আঁড্ডা কচু বুঝে?
No election before rashtra samsker as we don't want facisim again n don't kick any political party out from BD like Indian league /BAL