বিশ্বজমিন
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা, পরীক্ষার মুখে ভারতের সামরিক শক্তি
মানবজমিন ডেস্ক
(৩ ঘন্টা আগে) ২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ২:৪৯ অপরাহ্ন

জন্মলগ্ন থেকেই একে অপরকে চিরশত্রু হিসেবে বিবেচনা করে আসছে ভারত ও পাকিস্তান। সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে নানা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও দুদেশের উত্তেজনা কখনই নাই হয়ে যায়নি। সম্প্রতি ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কের উত্তেজনা ফের তুঙ্গে। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনায় এসেছে ভারতের সামরিক প্রস্তুতির বিষয়। তাদের সামরিক শক্তি নিয়ে পুরোনো জিজ্ঞাসাই নতুন করে তুলেছেন বিশ্লেষকরা। যেহেতু ভারতের বেশিরভাগ সামরিক সরঞ্জাম এখনও পুরোনো। তাই বলা হচ্ছে ভারতের সামরিক বাহিনীর সামনে উপস্থিত হয়েছে কঠিন পরীক্ষা। অন্যদিকে ভারতনিয়ন্ত্রিত স্থানে সন্ত্রাসী হামলা হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ চাপে পড়েছে মোদি সরকার। তাদের হাতে এ বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। এমন বাস্তবতায় ভারত কি পাকিস্তানের সঙ্গে বড় কোনো সংঘাতে জড়াবে নাকি কৌশলগত সীমিত অভিযান পরিচালনা করবে- সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
যেখানে বলা হয়েছে, মনে হচ্ছে আবারও সামরকি সংঘাতের দিকে আগাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। ওই হামলার জন্য একতরফাভাবে ইসলামাবাদের ওপর দোষ চাপিয়েছে তারা। পরিস্থিতি এখন এতই উত্তপ্ত যে, পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত সিন্ধু নদের পানি আটকে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর আগে দুই দেশের কোনো যুদ্ধের সময়ও এমন পদক্ষেপ নেয়নি ভারত।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান বলেছে, সিন্ধু নদের পানি আটকানো ‘যুদ্ধের উস্কানি’ হিসেবে বিবেচনা করবে তারা। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘস্থায়ী এবং বিপজ্জনক অচলাবস্থার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা। কেননা শেষ কয়েক বছর ধরে দুই দেশের কূটনৈতিক চ্যানেলগুলোও তেমন সচল নেই। এছাড়া বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোও অন্যান্য সংকট নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে।
যদিও ভারতের সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারতের সামরিক বাহিনী এখনো আধুনিকায়নের পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় দুর্বলতা ফাঁস হওয়ার ভয়ে জবাব দেয়ার ক্ষেত্রে সংযমী হতে পারে ভারত। ভারতের সামরিক সরঞ্জামের ৬৮ শতাংশই পুরোনো বলে ২০১৮ সালে একটি সংসদীয় প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। আর বাকি ২৪ শতাংশ সমসাময়িক এবং মাত্র ৮ শতাংশকে অত্যাধুনিক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের সামরিক পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়েছে সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
সামরিক কর্মকর্তারা স্বীকার করেন যে, চ্যালেঞ্জ অনুযায়ী সামরিক প্রস্তুতিতে তেমন উন্নতি করতে পারেনি ভারত।
যদিও ২০২৩ সালের সংসদীয় শুনানিতে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সর্বাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, তবু একটি আধুনিক সেনাবাহিনীর মানের বিবেচনায় এটি অনেক কম। অর্ধেকেরও বেশি সরঞ্জাম এখনো পুরোনোই রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব সীমাবদ্ধতার কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তুলনামূলক সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক হামলার পথ বেছে নিতে পারেন। যেমন, সীমিত পরিসরে বিমান হামলা বা পাকিস্তান সীমান্তের কাছে বিশেষ বাহিনীর অভিযান। এসব অভিযান জনরোষ প্রশমিত করবে, সম্ভাব্য বিব্রতকর ভুলের ঝুঁকি কমাবে এবং প্রতিশোধমূলক হামলা এড়াতে কাজে আসবে।
এদিকে পাকিস্তান সরকার ইতিমধ্যে সতর্ক করেছে, ভারত হামলা করলে তারাও একই ধরনের জবাব দেবে।
পাঠকের মতামত
৬৮ শতাংশ পুরানা জং দরা অস্রে গোমুএ মাখায়ো দাদাবাবুরা