বিশ্বজমিন
চীনের বিরল পদার্থের রপ্তানি বন্ধ কাটিয়ে উঠতে পারবে অস্ট্রেলিয়া!
মানবজমিন ডেস্ক
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার
পৃথিবীতে প্রাপ্ত বিরল সতেরটি পদার্থ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে চীন। পক্ষান্তরে এসব সম্পদ আহরণে ৫৮ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ব জুড়ে যে বাণিজ্যিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে তার মধ্যেই আলবানিজ বলেছেন- আগামী মাসে তার দেশে নির্বাচন হবে এবং তাতে তিনি বিজয়ী হলে ওই পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। উল্লেখ্য, বৈদ্যুতিক গাড়ি, যুদ্ধবিমান ও রোবট সহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অত্যাবশ্যকীয় পণ্য তৈরিতে বিরল ওই সতেরটি পদার্থ দরকার হয়। কিন্তু চীন তা রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। এটা বিশ্বের সব দেশের জন্যই প্রযোজ্য। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রতিশোধ হিসেবে দেখা হয় চীনের এই পদক্ষেপকে। এর প্রেক্ষিতে আলবানিজ বলেন, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এমন খনিজ বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবে অস্ট্রেলিয়া। তিনি তার দেশের কৌশলগত অবস্থানে যদি সত্যি বিরল এসব পদার্থ অনুসন্ধানে বিনিয়োগ করেন এবং সফল হন, তাহলে কি চীনের আধিপত্যের জন্য তার এ পরিকল্পনা কোনো চ্যালেঞ্জ হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে বিবিসি। উল্লেখ্য, ১৭টি বিরল উপাদানের একটি গ্রুপকে ‘রেয়ার আর্থ’ উপাদান হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এর সাধারণ নাম দেয়া হয়েছে ‘রেয়ার’ বা বিরল। কারণ, এসব উপাদানকে আহরণ করা এবং তার শোধন প্রক্রিয়া মারাত্মকরকম কঠিন। এমন পদার্থের মধ্যে আছে সামারিয়াম এবং টারবিয়াম। সামনের দশকগুলোতে প্রযুক্তি বদলে দেবে বিশ্বকে। তাতে প্রযুক্তিগত উৎপাদনে এসব পদার্থের ভূমিকা অত্যাবশ্যক। বৈদ্যুতিক গাড়ি, উচ্চ মাত্রায় অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থায়ও ব্যবহার হয় এসব উপাদান। উল্লেখ্য, অন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে শীর্ষ স্থানীয় অস্ট্রেলিয়া। এ উপাদানের মধ্যে আছে লিথিয়াম এবং কোবাল্ট। চীন এবং অস্ট্রেলিয়া- এ দু’টি দেশের কাছেই বিরল পার্থিব পদার্থের মজুত আছে। কিন্তু বিরল এসব পদার্থের শতকরা ৯০ ভাগই করা হয় চীনে। এর ফলে এ খাতে উল্লেখযোগ্য নেতৃত্ব রয়েছে চীনের হাতে। এ কারণে পশ্চিমাদের মাথাব্যথা শুরু হয়েছে।
বেইজিং বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের ওপর শতকরা ১৪৫ ভাগ শুল্ক আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর প্রেক্ষিতে তারা বিরল এসব পার্থিব পদার্থের বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলেন, এসব পদার্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ওয়াশিংটনের অক্ষমতা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য অন্যতম প্রধান উদ্বেগে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বেইজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক উত্তেজনা গভীর হয়েছে। ইউএস জিওলোজিক্যাল সার্ভের মতে, ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ বিরল এসব পদার্থ আমদানি করেছে তার মধ্যে শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগই নিয়েছে চীন থেকে।