ঢাকা, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

সিএনএন জরিপ: সাত দশকে সবচেয়ে অজনপ্রিয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

মানবজমিন ডিজিটাল

(৪ ঘন্টা আগে) ২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন

mzamin

রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে শক্তিশালী জনসমর্থন পেয়ে দ্বিতীয়বার ওভাল অফিসে ফিরে আসেন ডনাল্ড ট্রাম্প। সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু তার প্রেসিডেন্ট মেয়াদকালের ১০০ দিনের সমাপ্তি যত এগিয়ে আসছে, ততই তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমেরিকানদের দৃষ্টিভঙ্গি গভীরভাবে নেতিবাচক হয়ে উঠেছে।  SSRS এর পরিচালিত একটি নতুন সিএনএন জরিপে বিষয়টি সামনে এসেছে। ট্রাম্পের আগের শাসনামল বিবেচনায় নিয়েও মার্কিনীদের ৪১ শতাংশ তাকে বিবেচনায় রাখছেন যা ডোয়াইট আইজেনহাওয়ারের সময়ের চেয়ে কম এবং যেকোনো নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের চেয়ে সর্বনিম্ন। মার্চ মাসের তুলনায় প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের জনসমর্থন ৪ পয়েন্ট কমেছে এবং ফেব্রুয়ারির শেষের তুলনায় তা ৭ পয়েন্ট কম। মাত্র ২২% বলেছেন যে, তারা ট্রাম্পের দায়িত্ব পরিচালনাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন। দ্বিগুণের বেশি  তীব্রভাবে অসম্মতি জানিয়েছেন ট্রাম্পের প্রতি (৪৫%)। 

মার্চ মাস থেকে ট্রাম্পের প্রতি নারী এবং হিস্পানিক আমেরিকানদের সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে (প্রতিটি গ্রুপে ৭ পয়েন্ট কমে নারীদের মধ্যে ৩৬% এবং হিস্পানিকদের মধ্যে ২৮%)। ট্রাম্প সম্পর্কে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাপকভাবে মেরুকৃত হয়েছে, ৮৬% রিপাবলিকান সমর্থন করেছেন এবং ৯৩% ডেমোক্র্যাটরা অসম্মতি জানিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন মনোভাবাপন্ন মানুষদের মধ্যে প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের রেটিং ৩১%-এ নেমে এসেছে, যা সেই গোষ্ঠীর সাথে তার প্রথম মেয়াদের সর্বনিম্ন অবস্থানের সাথে মিলে যায়। বিশেষ করে অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে ট্রাম্পের অনুমোদনের রেটিং মার্চের শুরু থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। কারণ তার শুল্ক পরিকল্পনা নীতি বাস্তবায়িত হওয়ার ফলে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা এবং মূল্যস্ফীতিতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। 

মুদ্রাস্ফীতির ক্ষেত্রে অনুমোদন ৯ পয়েন্ট কমে ৩৫ শতাংশ হয়েছে এবং শুল্কের ক্ষেত্রেও এটি ৪ পয়েন্ট কমে ৩৫ শতাংশ হয়েছে। অর্থনীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে তার স্কোর ৫ পয়েন্ট কমে ক্যারিয়ারের সর্বনিম্ন ৩৯ শতাংশ অবস্থানে পৌঁছেছে।  ডিসেম্বরে সিএনএন-এর জরিপের তুলনায় আমেরিকানদের মধ্যে মাত্র অর্ধেক (৫২%) অর্থনীতি মোকাবেলার ক্ষেত্রে তার ক্ষমতার উপর আস্থা প্রকাশ করেছেন, যা ১৩ পয়েন্ট কমেছে। 

৫৫ বছর বয়সী ভার্জিনিয়ার এক বাসিন্দা যিনি দুই দশক ধরে ফেডারেল সরকারের হয়ে কাজ করেছেন তিনি বলছেন, ‘আমি হতাশ। আমি তাকে (ট্রাম্প)ভোট দেইনি। ভেবেছিলাম  অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে তিনি হয়তো কিছু  করবেন ... উল্টে তিনি আমার হতাশা বাড়িয়ে দিয়েছেন।’ 

ফেডারেল সরকারের কর্মীবাহিনী পুনর্গঠনের জন্য তার সুদূরপ্রসারী প্রচেষ্টার পরও ফেডারেল সরকার পরিচালনার জন্য ট্রাম্পকে  অনুমোদন জানিয়েছেন ৪২% , যা মার্চ থেকে ৬ পয়েন্ট কমেছে। মাত্র ৪৬% ট্রাম্পের উপর আস্থা প্রকাশ করেছেন যে, তিনি সেরা ব্যক্তিদের অফিসে নিয়োগ দেবেন। এছাড়া ট্রাম্প সরকারি অনুশীলন এবং নীতিতে পরিবর্তন আনার নির্দেশ দিয়ে বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন যা আদালতে অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান উভয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠসহ অর্ধেকেরও বেশি আমেরিকান (৫২%) বলেছেন যে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় শাসনকাল দেশটির স্থায়ীভাবে পরিবর্তন আনবে। এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি (৩৬%) মনে করেন ট্রাম্প যে কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনলেও, তিনি ক্ষমতা ছাড়ার পর তা ম্লান হয়ে যাবে এবং মাত্র ১২% মনে করেন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে দেশে কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে না। 

উইসকনসিনের ওয়াওয়াটোসার একজন ডেমোক্র্যাট ডেরেক স্টেইনমেটজ বলেছেন যে, তিনি ট্রাম্পের নিয়ম, নীতিমালা এবং সরকারি কাঠামোর প্রতি চরম অবজ্ঞা নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।ট্রাম্পের বৈদেশিক বিষয়ক কিছু পদক্ষেপ-যার মধ্যে ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি আরও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব এবং অনেক বৈদেশিক সাহায্য কর্মসূচি বন্ধ করা অন্তর্ভুক্ত ছিল-সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিউ মেক্সিকোর সান্তা ফেতে বসবাসকারী একজন ট্রাম্প ভোটার এবং অবসরপ্রাপ্ত আইনজীবী জর্জ মাস্ট্রোডোনাটো বলছেন, ‘প্রেসিডেন্ট যে আদেশগুলো জারি করছেন সেগুলোর অধিকাংশই আদালত কর্তৃক ধাক্কা খেয়েছে, কারণ আপনার তা করার অধিকার নেই। আমি চাই তিনি আরেকটু বিচক্ষণ হোন এবং   জারি করা নির্বাহী আদেশের উপর মনোযোগ দিন। যাতে তিনি আদালতে  জয়লাভ করতে পারেন’।

ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন কিনা তা নিয়ে আমেরিকানরা গভীরভাবে দ্বিধা বিভক্ত। অর্ধেকেরও কম মাত্র ৪৮% বলেছেন যে, তিনি ভালো কাজ করছেন। ৫১% বলেছেন ট্রাম্প যেভাবে কাজ করছেন তা তার প্রথম মেয়াদের সাথে মিলে যায়। ৫৫% সংখ্যাগরিষ্ঠ বলেছেন যে, তিনি জাতির সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে সমাধানের জন্য অন্তত কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন, যদিও মাত্র ২৮% বিশ্বাস করেন যে, তিনি এমন কিছু করেছেন যা ইতিমধ্যেই দেশের সমস্যা সমাধানে কাজ করতে শুরু করেছে। 

অনলাইন এবং টেলিফোন সাক্ষাৎকার নিয়ে ১৭-২৪ এপ্রিল পর্যন্ত SSRS দেশব্যাপী ১,৬৭৮ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে সিএনএন জরিপটি পরিচালিত করে। উত্তরদাতাদের সাথে প্রাথমিকভাবে ডাক, ফোন বা ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছিল।

সূত্র : সিএনএন

পাঠকের মতামত

পিকচার আভি ভি বাকী হ্যায়

জনতার আদালত
২৮ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ১:২০ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status