বাংলারজমিন
কবর খননে অন্যরকম সেঞ্চুরি উখিয়ার আবদুল আলমের
স্টাফ রিপোর্টার, উখিয়া থেকে
২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
ক্রিকেটাররা সেঞ্চুরি করেছেন ক্রিকেট খেলে, কেউ কেউ বিয়ের সেঞ্চুরি করেছেন, আবার কেউ ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদ্যাপন করেছেন, সেখানে ব্যাতিক্রম উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের উত্তর পুকুরিয়ার বাসিন্দা আব্দুল আলম। তিনি কবর খননের মতো মহৎ কাজে করেছেন সেঞ্চুরি। আলম পেশায় একজন কৃষক। বয়স ৫০ ছুঁই ছুঁই। কৃষিকাজ করে নির্বাহ করেন জীবিকা। বয়স যখন ১৩ তখন থেকেই এলাকার কেউ মারা গেলে, তার বাবার সঙ্গে স্বেচ্ছায় কবর খুঁড়তে যেতেন তিনি। তবে একার পক্ষে যেহেতু সম্ভব হতো না। তাই এলাকার ১/২ জনকেও তার সঙ্গে ডেকে নিতেন। শুধু এলাকায় নয়, এলাকার বাইরে গিয়েও একাধিক কবর খনন করেছেন তিনি। এ পর্যন্ত ১২০টির মতো কবর খনন করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আলম বলেন, ১৩ বছর বয়স থেকে কবর খনন শুরু করি। তার বাবা ছৈয়দুর রহমান পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। মৃত্যুর আগে ছৈয়দুর রহমান তাকে বলেছিলেন তার বাবা মারা যাওয়ার পরেও যাতে আব্দুল আলম কবর খনন অব্যাহত রাখেন। বাবার কথা রাখতে আজ পর্যন্ত কবর খুঁড়ে যাচ্ছেন আব্দুল আলম। নিজ এলাকা উত্তর পুকুরিয়াসহ উখিয়ার বিভিন্ন এলাকার কবরস্থানে এ পর্যন্ত ১২০টি মত কবর খুঁড়েছেন তিনি। তখন তার পিতা ও একই এলাকার আব্দুল শুক্কুরসহ তারা তিনজন মিলে কবর খনন করতেন। পরে তার বাবা মারা যাওয়ার পর শুক্কুরকে নিয়ে কবর খননের কাজ চালিয়ে গেছে। পরে শুক্কুর মারা গেলে সহযোগীহারা হয়ে যান আলম। পরবর্তীতে একই এলাকার মোহাম্মদ ইসমাইল ও মফিদুল হক স্বেচ্ছায় তার সঙ্গে কবর খননের কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আলম তারা দু’জনকে কবর খননের কাজে যুক্ত করেন।
মোহাম্মদ ইসমাইল ও মফিদুল হক জানান, আমরা দু’জন দীর্ঘদিন ধরে আলমের সঙ্গে কবর খননের কাজে স্বেচ্ছায় যুক্ত হয়েছি। এতে কোনো পারিশ্রমিক নেই জেনেও আমরা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এই কাজ করে যাচ্ছি। তবে কবর খননে অনেক সরঞ্জাম প্রয়োজন হয়। এসব সরঞ্জাম তাদের তিনজনের কাছে না থাকায় প্রতিবেশীদের কাছ থেকে নিয়ে কবর খনন করতে হয় বলে জানান আলম। উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক এসব সরঞ্জাম তাদেরকে দেয়া হলে, কবর খননের কাজ আরও সহজভাবে করতে পারবেন বলে জানান আলম।