অনলাইন
সিনেমার টিকিট জমিয়ে গিনেস বুকে নাম তুললেন কলকাতার শিক্ষক
সেবন্তী ভট্টাচার্য , কলকাতা থেকে
(২ সপ্তাহ আগে) ২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ৫:৪১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ১২:০১ পূর্বাহ্ন

সিনেমাহলে দাঁড়িয়ে আজকাল টিকিট কাটেন ক’জন। সবই এখন হয় অনলাইনে। তবে সব কিছুরই যে ব্যতিক্রম থাকে তা প্রমাণ করলেন কলকাতার বছর ছত্রিশের যুবক দেবাঞ্জন শীল। এই যুগে দাঁড়িয়েও সিনেমাহলের কাউন্টারে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটা এবং তার জমানোই নেশা দেবাঞ্জন শীলের। আর এই নেশার সৌজন্যেই কলকাতার শিক্ষক নাম তুলেছেন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। গিনেস-এর হিসেবে তার সংগ্রহ ১৯৭টি সিনেমা হলের ১,০৩৪টি ভিন্ন শো ও ভিন্ন ছবির টিকিটের কাউন্টারপার্ট। তবে এই সংখ্যা আরও কিছুটা বেশি হতে পারে। কারণ ‘গিনেস’-এ আবেদন করার পরেও দেবাঞ্জন কয়েকটি সিনেমা দেখেছেন। গত রবিবারই ‘মিনার’ সিনেমা হলে দেখে এসেছেন ‘পুরাতন’। সেই টিকিটেরও কাউন্টারপার্ট দেবাঞ্জন রেখে দিয়েছেন তার সংগ্রহে। ছোট থেকেই সিনেমার পোকা।
দেবাঞ্জন জানালেন, ২০০৩-এ অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে লেক টাউনের জয়া সিনেমা হলে গিয়েছিলেন ‘বোম্বাইয়ের বোম্বেটে’ দেখতে। সেই প্রথম তার হাতে টিকিটের কাউন্টার পার্ট আসে, যা বইয়ের পাতায় লুকিয়ে রাখা ছিল দীর্ঘদিন। এর পরে ডাকটিকিট বা রেল-বাসের টিকিটের মতোই সিনেমার টিকিট জমানোর শখ তৈরি হয়। একে একে রক্সি, প্যারাডাইস, এলিট, ছবিঘর, মিনার, বিজলি- কলকাতার সর্বত্র ছুটে গিয়েছেন সিনেমা দেখতে। সিনেমা ভালো না খারাপ, অনেক সময়ে সে হিসেব করেননি। লক্ষ্য ছিল যত বেশি সম্ভব টিকিট জমানোর। শুধু কলকাতা নয়, বারুইপুর থেকে বারাসত পেরিয়ে মেদিনীপুর, বর্ধমান, বীরভূম এমনকী উত্তরবঙ্গেও পাড়ি দিয়েছেন দেবাঞ্জন। এ ভাবেই ১৯৭টি হলের বিভিন্ন ছবির ১,০৩৪টি ভিন্ন শো-এর টিকিট সংগ্রহ করে পাঠান ‘গিনেস’ কর্তৃপক্ষকে। বাগুইআটির জ্যাংরার বাসিন্দা দেবাঞ্জন। পেশায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক। আবেদন খতিয়ে দেখার পর তার বাড়িতে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তরফ থেকে মেডেল এবং সার্টিফিকেট পৌঁছে গিয়েছে। তা হাতে পেয়ে বেজায় খুশি দেবাঞ্জন।
দেবাঞ্জনের কথায়, ‘একসময়ে লাল, হলুদ, নীল খসখসে কম দামি কাগজে ব্যালকনি বা রেয়ার স্টলের টিকিট মিলত। পরে রেলওয়ের মতো টিকিট এল। কিছু দিন আগেও মাল্টিপ্লেক্সে সরু লম্বা কাগজে কম্পিউটার প্রিন্টেড টিকিট দেওয়া হতো। এখন তো অধিকাংশ জায়গায় কিউআর কোডে ডিজিটাল টিকিট। আগামী দিনে এই কাগজের টিকিট থাকবে না।কাগজের টিকিট বিক্রি করা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একে একে। এগুলোও হয়তো বেঁচে থাকবে এই টিকিটের মধ্যেই।