ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বজমিন

ইউক্রেনই কি এই হামলা চালিয়েছে? ক্রাইমিয়ার রুশ ঘাঁটিতে অনেকগুলো যুদ্ধবিমান ধ্বংস

মানবজমিন ডেস্ক

(১ বছর আগে) ১১ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার, ১:৩৫ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১০:২৫ পূর্বাহ্ন

mzamin

ক্রাইমিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার বিমান ঘাঁটিতে বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ার তরফ থেকে যদিও কোনো দূর্ঘটনা কিংবা হামলার কথা নাকচ করে দেয়া হয়েছিল। তবে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ঘাঁটিতে থাকা যুদ্ধবিমান এবং স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বেশ কয়েকটি বিমান পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে ইউক্রেনই যে এ হামলা চালিয়েছে তা অনেকটাই স্পষ্ট এখন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে জানানো হয়, মঙ্গলবার একের পর এক বিস্ফোরণে কেপে উঠতে থাকে ক্রাইমিয়ার স্যাকি বিমান ঘাঁটি। এতে একজন নিহত হন এবং একজন আহত হন। তবে ইউক্রেন সঙ্গে সঙ্গে জানিয়েছে, তারা এই বিস্ফোরণের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত নয়। রাশিয়াও ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেনি। কিন্তু এখন স্যাটেলাইটের ছবিতে ঘাঁটির যে ভয়াবহ অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তাতে করে পরিকল্পিত হামলার আশঙ্কা জোরদার হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের প্লানেট ল্যাবস স্যাটেলাইট দিয়ে ওই ছবিগুলো তোলা হয়।

বিজ্ঞাপন
এতে দেখা যায় বিমান ঘাঁটির বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণের চিহ্ন রয়েছে। তবে প্রধান রানওয়ে অক্ষত রয়েছে। তারপরেও অন্তত ৮টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কিংবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। 

বিস্ফোরণগুলো ঠিক সেখানেই হয়েছে যেখানে বিমানগুলো রাখা ছিল। এই ছবি প্রকাশের আগে ঘাঁটিটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু কীভাবে এত বড় বিস্ফোরণ হলো তার কারণ নিয়ে কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। রাশিয়া কোনো হামলার অভিযোগ করেনি। ইউক্রেনের তরফ থেকেও একই কথা বলা হয়েছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ বলেন, রুশ সেনাদের অবহেলার কারণে এই বিস্ফোরণ হতে পারে। খুব সম্ভবত তারা অস্ত্রাগারের কাছে সিগারেট খেতে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। 

ইউক্রেন জানিয়েছিল, অন্তত এক ডজন বিমান ধ্বংস হয়েছে রাশিয়ার। তবে সেই দাবি তখন অস্বীকার করেছিল দেশটি। রাশিয়ার তরফ থেকে বলা হয়েছিল, তাদের একটি বিমানও ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। নতুন ছবি যদিও প্রমাণ করে দিচ্ছে যে রাশিয়ার দাবি সত্য ছিল না। 

বৃটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, যেহেতু ঘাঁটিতে একাধিক বিস্ফোরণ হয়েছিল তার মানে এটি দুর্ঘটনা নয়, বরঞ্চ ইউক্রেনের আক্রমণ। তিনি অবশ্য ক্রাইমিয়াতে ইউক্রেনের হামলা চালানোর অধিকার আছে বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের সম্পুর্ন অধিকার ইউক্রেনের আছে। শুধু নিজের ভূমি উদ্ধারই নয়, আগ্রাসনকারীদের হটিয়ে দিতেও ইউক্রেন শক্তি প্রয়োগ করতে পারে। 

তবে ক্রাইমিয়াতে যে কোনো ধরণের আক্রমণকে রাশিয়া ভালোভাবে নেবে না। এটি রাশিয়ার কাছে একটি স্পর্শকাতর বিষয়। দেশটি আগে থেকেই এ নিয়ে ইউক্রেনকে সাবধান করে আসছিল গত মাসেই সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, ক্রাইমিয়াকে টার্গেট করা হলে কেয়ামত শুরু হয়ে যাবে। 

যেই ঘাঁটিতে সম্প্রতি হামলা হলো সেটি সেভাস্তপোল বন্দর থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরে। এটি রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরে থাকা জাহাজের অবস্থানস্থল। এখান থেকেই রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজগুলো ইউক্রেনের উপকূল অবরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যদি শেষ পর্যন্ত ক্রাইমিয়ার বিস্ফোরণের জন্য রাশিয়া ইউক্রেনকে দায়ী করে তাহলে সেটি হবে এ যুদ্ধের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ইউক্রেন এখনও ক্রাইমিয়াতে হামলা করার চেষ্টা করেনি। 

২০১৪ সালে ইউক্রেনের এ অংশটিকে নিজের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে রাশিয়া। তবে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রাইমিয়াকে ইউক্রেনের অংশই মনে করে। যদিও এক গণভোটের মাধ্যমেই রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ক্রাইমিয়া। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সেই গণভোটের স্বীকৃতি দেয় না। অনেক ইউক্রেনীয় মনে করেন, মূলত ২০১৪ সালেই রাশিয়ার সঙ্গে তাদের যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status