ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

বেহুদা প্যাঁচাল

উজিরে জ্বালানির খেল, আমজনতার দৌড়

শামীমুল হক
১১ আগস্ট ২০২২, বৃহস্পতিবার
mzamin

প্রশ্ন জাগছে কোনদিকে যাচ্ছে দেশ। বহু মানুষ বাড়তি খরচের ভার সইতে না পেরে ঢাকা ছেড়েছে। কেউ কেউ ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজধানীর মহল্লায় মহল্লায় এখন প্রায় প্রতিটি ভবনে ঝুলছে টুলেট নোটিশ। আবার যারা ঢাকা থাকছেন তাদের বাড়তি বাড়ি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। বাড়িওয়ালারা এসে বলে যাচ্ছেন, তেলের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। জ্বালানির দাম বেড়েছে। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। গ্যাসের দাম বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন
তাই বাড়ি ভাড়াও এই মাস থেকে দুই, তিন কিংবা পাঁচ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিতে হবে। অন্যথায় ঘর খালি করে দেন। তবুও ভালো। খালি পড়ে থাকলেও লাভ। আমরা আর বাড়তি বিল দিয়ে কুলাতে পারছি না। এখানেও আমজনতা পিষ্ট হচ্ছে। পদে পদে আমজনতা পিষ্ট হওয়ার পণ্যে পরিণত হয়েছে। এ থেকে বেরিয়ে আসার আর কোনো উপায় নেই।  এমন এক কঠিন পরিস্থিতি বিশ্বের কোথাও আছে কিনা সন্দেহ। বহু কষ্টে অর্জিত স্বাধীন দেশের অবস্থা এমন হবে কে ভেবেছিল?


আমজনতা। এরা কলুর বলদ। এদের জন্মই হয় পিষ্ট হতে। এদের ওপর দিয়ে ঝড় গেলেও নড়ে না। ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো, বন্যা সবকিছুর সঙ্গে করতে হয় এদের লড়াই। ওদের জীবনটা যেন সমুদ্রের মাঝে পড়ে হাবুডুবু খাওয়া। কূল পাওয়া তো দূরে থাক কূলের দেখাই মেলে না। এ ভাবে এরা ডুবতে ডুবতে এক সময় তলিয়ে যায়। এই আমজনতার ওপর ভর করে যারা চলে তারা দিব্যি আরাম আয়েশে দিন কাটায়। আমজনতাকে পুঁজি করে এরা ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ হয়। ফকির থেকে রাজা হয়। আমজনতাকে পুঁজি করে এরা বিশ্বভ্রমণ করে। আকাশে উড়ে। আমজনতার ওপর ভর করে এরা টাকার মালিক হয়। এরা মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম করে। কানাডার বেগম পাড়ায় গড়ে তুলে অট্টালিকা। আরাম আয়েশে জীবন পার করে। যে আমজনতাকে পিষ্ট করে এরা এগিয়ে গেছে সেই আমজনতাকে দেখলে তারা নাক সিঁটকায়। হ্যান্ডশেক করলে সঙ্গে সঙ্গে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নেয়। ওদের কাছে যেতে হলে আবার আমজনতাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। আর কাছে গিয়ে কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়াতে হয়। ওরা যে পথে যায় সুগন্ধি উড়িয়ে যায়। এ সুগন্ধি কার পয়সায় কেনা সেটা একবারও ভাবে না। নীতির রাজা রাজনীতি এখন আঁকড়ে ধরেছে নীতিহীনকে। নীতিহীন সমাজে আমজনতা কেবল এখন উইপোকা। আর এই উইপোকারা শত ব্যথা বেদনা বুকে নিয়ে দিন পার করে। মহাসমুদ্র পাড়ি দেয়ার মতো। এদের ওপর সকল চাপ। কারণ ওরা ডাণ্ডাবেড়ি পরা। ওরা হাঁটতে পারে না। ওদের মুখ বাঁধা। কথা বলতে পারে না। ওদের চোখ অন্ধ। কোনো কিছু দেখতে পায় না। ওরা পারে শুধু সহ্য করতে। 

ওদের বুক ফাটে তবুও মুখ ফুটে না। কারণ ওরা আমজনতা।  ওদের ঘাড়ে চাপে দাম বৃদ্ধির প্রভাব। ওদের ঘাড়ে চাপে চোখ রাঙানির প্রভাব। লুটেরাদের লুট করে নেয়া সম্পদের হিস্যাও  ওদের বহন করতে হয়। আর তা করতে হয় বলেই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবও ওদের ওপর পড়ে। বিদ্যুতের দাম বাড়লে খেসারত দিতে হয় আমজনতারই। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ভাড়ার মাশুলও ওদের দিতে হয়। রমজান এলেও আমজনতাকে পোহাতে হয় পণ্যমূল্যের চোখ রাঙানি। কোরবানি এলে বাজার হয়ে উঠে অস্থিতিশীল। এর মাশুলও দিতে হয় আমজনতাকে। চালের ভরা মওসুমেও এরা চালখেকোদের খপ্পরে পড়তে হয়। আগে ভরা মওসুমে চাল ৩০/৪০ টাকা কেজি বিক্রি হতো। এখন সেই চাল ৭০ টাকা কেজিতে কিনতে হয়েছে। চালের বাজারও নাকি এখন ক’টি করপোরেট হাউজের দখলে চলে গেছে। ওদের শায়েস্তা করার কেউ নেই। তাই ওরা যা ইচ্ছা তা করছে। আমজনতাকে পুতুলের মতো নাচাচ্ছে। একবার যখন মওকা পেয়ে গেছে এই করপোরেট গ্রুপ আর এ থেকে রক্ষা নেই। ওদিকে রাস্তায় বেরুলে হাইজাকার, পকেটমার, টানা পার্টির সদস্যদের টার্গেটও এরাই। কোনো সরকারি দপ্তরে কাজ করাতে গেলে স্যারেরা উপরি পয়সা বের করে নেয় ওদের পকেট থেকেই। ওরা কোথাও গিয়ে শান্তি পায় না। 

বিশেষ করে ওরা তখনই কষ্ট পায় যখন বলা হয় জনগণ দেশের মালিক। দেশের মালিকদের  যখন এই অবস্থা তখন দেশের অবস্থা কী হবে তাতো বুঝাই যায়। আবার দেশের মালিক কথাটি শুনলে মুচকি হাসে আমজনতা। তখন তাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে জমিদার আর প্রজার সম্পর্কের বিষয়টি। সব কিছু ভেসে যাক- জমিদারকে জমিদারি সময়মতো দিতেই হবে। সেটা যেভাবেই হোক। নিজে মরে গিয়ে হলেও তা শোধ করতে হবে। অন্যথায় নেমে আসবে নির্যাতন। জ্বালানির দাম বাড়ার ফলে আমজনতার ওপর কীভাবে প্রভাব পড়েছে? জ্বালানির বাড়তি দাম তো দিতেই হচ্ছে। এরপর গুনতে হচ্ছে গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির ব্যয়। জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রভাবে ৩০ টাকার পরিবহন ভাড়া এখন গুনতে হচ্ছে ৪৫ টাকা। জ্বালানির দাম বাড়ার ফলে বাজারে সবজির দাম বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। কারণ জ্বালানির কারণে ট্রাকের ভাড়া হয়েছে ডাবল। আগে যেখানে ১০ হাজার টাকা ট্রাক ভাড়া লাগতো এখন দিতে হচ্ছে ২০ হাজার টাকা। পথে পথে চাঁদাবাজি তো রয়েছেই। মুদি দোকানে গিয়ে দেখা গেছে- একই অবস্থা। পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। ৩৫ টাকার পাউরুটি এখন ৫০ টাকা। ৭০ টাকার তরল দুধ ৮০ টাকা। ৯০ টাকার হুইল পাউডার এখন ১৫০ টাকা। ৩০/৩৫ টাকার সাবান কখন যে হয়ে গেছে ৬০/৬৫ টাকা তা আমজনতা টেরই পায়নি। 

এভাবে সব পণ্যই দ্বিগুণ, তিনগুণ হয়ে গেছে। এসব পণ্যের দাম বাড়ে গোপনে। 

আর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর সরকার প্রকাশ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাস ভাড়া বাড়িয়েছে।  ডিজেলচালিত বাস ও মিনিবাসের সর্বোচ্চ ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করে ৭ই আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ২০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী মিনিবাস এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলার অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৪০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া যথাক্রমে ১০ টাকা ও ৮ টাকা নির্ধারিত হলো। ভাড়া বৃদ্ধি গ্যাসচালিত মোটরযানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কোন গাড়ি গ্যাসচালিত আর কোন গাড়ি ডিজেলচালিত আমজনতা জানবে কোথা থেকে? ফলে গণপরিবহনে নৈরাজ্য চলে আসছে, চলবেই। আবার নৌ যানেও ভাড়া শতভাগ বাড়ানোর দাবি উঠেছে। এ নিয়ে বৈঠক চলছে। অবশ্যই বাড়বে। তবে কতোটুকু বাড়ে তা দেখার বিষয়। এ ভাড়া বাড়ানো নিয়ে বাস-মিনিবাসে যে কতো দুর্ঘটনা ঘটছে, ঘটবে এর দায় কার? এখন শোনা যাচ্ছে বিদ্যুতের দামও বাড়বে। আগে যেখানে বিদ্যুৎ বিল আসতো হাজার বার শ’ টাকা।

 বিদ্যুৎ বিল বাড়ানোর পর এখন দিতে হয় কম করে হলেও দুই হাজার টাকা। ওদিকে ওয়াসা চাচ্ছে পানির দামও বাড়াতে। বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়লে আরেক দফা বাড়বে নিত্যপণ্যের দাম। এরজন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে সবাইকে। করোনার ধাক্কার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এখন মোক্ষম অস্ত্র হলো করোনা আর যুদ্ধ। ওদিকে করের বোঝা তো আছেই আমজনতার ওপর। ভ্যাট দিতে হচ্ছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। আমজনতাই এ ভ্যাট পরিশোধ করে। সময়মতো ট্যাক্স না দিলে তো আবার লাল চিঠি এসে যাবে। এ থেকে বাঁচতে আমজনতাকে আগে ট্যাক্সের ফাইল ঠিক রাখতে হয়।  এর আগে সয়াবিন তেল নিয়ে মিল মালিকরা ঘটিয়েছে অকাণ্ড। ৮০/৯০ টাকার সয়াবিন ২২০ টাকা কিনতে হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো- তখন খোলা সয়াবিন তেল বন্ধ করে দেয়া হয়। আবার এক লিটার বোতলও বাজারশূন্য। নিতে হলে দুই লিটার বা পাঁচ লিটার নিতে হবে। উজিরে বাণিজ্য আবার ঘটান আরেক ঘটনা। দাম বাড়ার আগেই তিনি দিন তারিখ ধার্য করে বলে দেন এত তারিখ থেকে তেল এত টাকা ধরে বিক্রি হবে। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীরা তা বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি শুরু করেন। আবার যখন সরকার তেলের দাম কমায় বাজারে এর প্রভাব পড়ে না। কারণ দোকানে দোকানে স্টক করা তেল বাড়তি দামে কেনা। ফলে কমতি দামে আর বিক্রি হয় না। 

তেল কমতি দামে কেনার আগেই শোনা যাচ্ছে আবারো নাকি তেলের দাম বাড়বে।  আমজনতার কোনো দল নেই। তাই তারা কিছু বলতে পারেন না। মুখ বুঝে সহ্য করে নেন। কথায় কথায় এক কথা থেকে আরেক কথায় চলে যেতে হয়। ফিরে আসা যাক জ্বালানির দাম বৃদ্ধিতে।  জ্বালানির দাম হঠাৎ এক লাফে এত বৃদ্ধির সমালোচনা চলছে সর্বত্র। বিশ্ব পরিস্থিতির কারণকে উল্লেখ করা হলেও দেশের ইতিহাসে এত বৃদ্ধি আর হয়নি কখনো। একান্ন শতাংশ দাম বৃদ্ধি এ যে অকল্পনীয়।  ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে কৃষি খাত কঠিন অবস্থায় পড়ে গেল। সেচের পেছনে আরও ৫০ শতাংশ খরচ বাড়বে। এমনিতেই কৃষকের মূলধনের সংকট, তার ওপর হঠাৎ জ্বালানি তেলের একসঙ্গে এত বেশি দাম বাড়ার ধাক্কা সামলানো তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠবে। জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে চলতি মূলধনের সঙ্গে আরও মূলধন যোগ করতে হবে। কৃষকের কথা- বাড়তি বিনিয়োগের বোঝা টানা তাদের জন্য অনেকটাই অসম্ভব। আগে শ্যালো মেশিনে এক ঘণ্টা সেচ দিতে ১০০ টাকা লাগলেও এখন এর পেছনে ব্যয় হবে ১৫০ টাকা। এরপর সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়ায় সেটিও যোগ হবে উৎপাদনে। নিশ্চিতভাবে এই দাম বাড়ার বড় একটা প্রভাব পড়বে উৎপাদন ব্যয়ে। শেষমেশ চালের বাজারে গিয়ে ঠেকবে এর প্রভাব। প্রভাব পড়বে শাক সবজিতেও।

 এমনিতেই আমজনতা দিন চালাতে গিয়ে খরচে কাঁটছাট করছে। আরাম আয়েশ তুলে রেখেছে বাক্সবন্দি করে।  প্রশ্ন জাগছে কোনদিকে যাচ্ছে দেশ। বহু মানুষ বাড়তি খরচের ভার সইতে না পেরে ঢাকা ছেড়েছে। কেউ কেউ ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজধানীর মহল্লায় মহল্লায় এখন প্রায় প্রতিটি ভবনে ঝুলছে টুলেট নোটিশ। আবার যারা ঢাকা থাকছেন তাদের বাড়তি বাড়ি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। বাড়িওয়ালারা এসে বলে যাচ্ছেন, তেলের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। জ্বালানির দাম বেড়েছে। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। গ্যাসের দাম বেড়েছে। তাই বাড়ি ভাড়াও এই মাস থেকে দুই, তিন কিংবা পাঁচ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিতে হবে। অন্যথায় ঘর খালি করে দেন। তবুও ভালো। খালি পড়ে থাকলেও লাভ। আমরা আর বাড়তি বিল দিয়ে কুলাতে পারছি না। এখানেও আমজনতা পিষ্ট হচ্ছে। পদে পদে আমজনতা পিষ্ট হওয়ার পণ্যে পরিণত হয়েছে। এ থেকে বেরিয়ে আসার আর কোনো উপায় নেই।  এমন এক কঠিন পরিস্থিতি বিশ্বের কোথাও আছে কিনা সন্দেহ। বহু কষ্টে অর্জিত স্বাধীন দেশের অবস্থা এমন হবে কে ভেবেছিল?   সবচেয়ে বড় কথা আসল খেলা খেলে দিয়েছেন উজিরে জ্বালানি। ক’দিন ধরেই বলে আসছিলেন জ্বালানির দাম বাড়ানোর চিন্তা করা হচ্ছে। তিনি যে হঠাৎ করে মধ্যরাতে চিন্তা করবেন এটা আমজনতা বুঝতেই পারেনি। আর বুঝতে পারেনি বলেই আমজনতা মধ্যরাতের এ ঘোষণার পর দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। বাইকাররা তাদের বাইক নিয়ে হাজির হন তেলের পাম্পগুলোতে।

 প্রাইভেট কারের চালকরা ছুটে যান পাম্পে। কি এক অবস্থা সে রাতে দেখেছে আমজনতা। তেল নিয়ে কাড়াকাড়ি। এর সুযোগ নিয়েছে পাম্পগুলোও। তারাও পাম্পগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। আবার কোনো কোনো পাম্প জ্বালানি দিলেও দুই লিটারের বেশি দেয়নি। এক হ-য-ব-র-ল অবস্থা সৃষ্টি হয় সেখানে। সবাইকে তেল নিতেই হবে। না  হলে সকালে আর পাওয়া যাবে না- এমন অবস্থা।  সবশেষে বলতে হয়, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গতকাল এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, চলতি বছরে তেল বিক্রি করে ১ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা লাভ করলেও ৮ হাজার ১৫ কোটি টাকা লোকসানের কথা বলছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এ ছাড়া ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা লাভ করেছে বিপিসি। অন্যদিকে সামপ্রতিক মাসগুলোতে সারা বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম কমছে অথচ আমাদের দেশে বৃদ্ধি করা হলো। কেউ বলছে, আমাদের দেশ থেকে নাকি অন্যদেশে কম। কিন্তু নেপাল ও শ্রীলঙ্কা ছাড়া কোথাও তেলের দাম বাড়তি নেই। সিপিডি’র দেয়া এ তথ্য ঠিক হলে নিশ্চয় অন্য কোনো মতলব আছে সরকারের। সেটি আমজনতাকে জানিয়ে দিলেই হয়।

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status