অনলাইন
সরকারি কর্মীদের চীনা নাগরিকদের সঙ্গে প্রেম বা যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ করল আমেরিকা
মানবজমিন ডিজিটাল
(১ সপ্তাহ আগে) ৯ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ৫:৩৩ অপরাহ্ন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার চীনে নিযুক্ত কূটনীতিক, নিরাপত্তা অনুমোদনপ্রাপ্ত কর্মী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চীনা নাগরিকদের সঙ্গে প্রেম বা যৌন সম্পর্ক স্থাপন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ( এপি ) এখবর জানিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞানসম্পন্ন চারজন ব্যক্তি এপিকে এই নীতি সম্পর্কে জানিয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীন ত্যাগ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকোলাস বার্নস। তিনি দফতর ছাড়ার মুখে এই কড়া বিজ্ঞপ্তি জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন। আগে শুধু নির্দিষ্ট পেশার চীনা নাগরিকদের সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত ছিল, কিন্তু এবার সম্পূর্ণ "নন-ফ্রাটারনাইজেশন" বা ভ্রাতৃত্বহীন নীতি চালু হয়েছে। অন্যান্য দেশে আমেরিকান কূটনীতিকদের স্থানীয়দের সাথে ডেট করা এবং এমনকি তাদের বিয়ে করা অস্বাভাবিক নয়। প্রাথমিক ভাবে বেজিংয়ের মার্কিন দূতাবাসের জন্য এই কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওয়াশিংটন। পরে চীনের গুয়াংজ়ু, সাংহাই, শেনিয়াং এবং উহানের দূতাবাসেও সংশ্লিষ্ট নিয়ম জারি করা হয় বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, এর আওতাভুক্ত হয়েছেন হংকং -এ কর্মরত মার্কিন নাগরিকেরাও। যে সমস্ত আমেরিকাবাসী চীনের বাইরে অন্য দেশে কর্মরত রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। আবার যে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে আগে থেকেই কোনও চীনা নাগরিকের সঙ্গম বা প্রণয়ের সম্পর্ক রয়েছে, তাঁরাও এর থেকে ছাড় পাবেন বলে জানা গিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের জারি করা নতুন নির্দেশিকা অমান্য করলে মার্কিন নাগরিকদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। সে ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের নির্দেশে চাকরি খোয়াতে হতে পারে তাঁদের।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনায় অপরাধের গুরুত্ব বুঝে কাউকে বরখাস্ত বা পদত্যাগে বাধ্য করবে আমেরিকা। যদিও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির হাউস সিলেক্ট কমিটি মন্তব্যের জন্য অনুরোধের জবাব দেয়নি। এই নতুন নীতির কথা জানুয়ারিতে চীনে অবস্থানরত আমেরিকান কর্মীদের কাছে মৌখিক এবং ইমেলে জানানো হয়েছিল , কিন্তু প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়নি। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নস এ বিষয়ে কোনো ইমেলের জবাব দিতে চাননি। বিশ্বজুড়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহের জন্য আকর্ষণীয় পুরুষ এবং নারীদের হানিট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে, যা ঠান্ডা যুদ্ধের সময় বিখ্যাত ছিল। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং চীনে আমেরিকার অন্যান্য সরকারি কর্মীদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর কঠোর নজরদারি চালারয়েছে , সেইসাথে রাশিয়া বা কিউবার মতো উচ্চ গোয়েন্দা হুমকি হিসাবে বিবেচিত প্রতিদ্বন্দ্বীদের দেশের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। গোপনীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের নথি থেকে দেখা যায় যে, ১৯৮৭ সালে, মস্কোতে একজন মার্কিন মেরিন একজন সোভিয়েত গুপ্তচরের ফাঁদে পা দেবার পর, সোভিয়েত ব্লক এবং চীনে নিয়োজিত কর্মীদের স্থানীয়দের সাথে বন্ধুত্ব, ডেটিং বা যৌন সম্পর্ক স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন সরকার। জানুয়ারিতে নতুন নিষেধাজ্ঞার আগে পর্যন্ত, চীনে মার্কিন কর্মীদের চীনা নাগরিকদের সাথে যেকোনো ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বিষয়ে তাদের তত্ত্বাবধায়কদের কাছে রিপোর্ট করতে হত, তবে যৌন বা প্রেমের সম্পর্ক স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ ছিল না। মার্কিন কূটনীতিক এবং গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বেইজিং আমেরিকান গোপন তথ্য অ্যাক্সেস করার জন্য তথাকথিত মধুচক্র ব্যবহার করার কৌশল অব্যাহত রেখেছে।
সূত্র : এবিসি নিউজ
পাঠকের মতামত
পালিয়ে বিয়ে করলে?