ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৬ হিঃ

অনলাইন

হাসিনার প্রত্যর্পন নিয়ে মোদির সঙ্গে চূড়ান্ত আলাপ হয়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কূটনৈতিক রিপোর্টার

(১ সপ্তাহ আগে) ৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার, ১০:৫৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ২:৫১ অপরাহ্ন

mzamin

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে ভারতের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে মাত্র। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ব্যংকক বৈঠকে বিষয়টি
'(শেখ হাসিনার প্রত্যর্পন) আমাদের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়েছে। এটা এটা নিয়ে চূড়ান্ত কোনো কথাবার্তা হয়নি। আমরা তাদের (ভারতের) কাছে চেয়েছি যে (হাসিনাকে) ফেরত দেওয়া হোক তাকে বিচারের সম্মুখীন করার জন্য। কিন্তু যেটা স্পষ্ট করা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদি খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক দেশের সঙ্গে মানুষের সঙ্গে, এটা কোনো দলের সঙ্গে নয়। এটা উনি স্পষ্ট করেছেন। আমি এটাকে একটা পজিটিভ বিষয় হিসেবেই দেখতে চাই।' ভারতের ভিসা জটিলতা সংক্রান্ত প্রশ্নে মিস্টার হোসেনের জবাবটি এমন 'ভিসা হচ্ছে একটা দেশের নিজস্ব রাইটস। তারা যদি না দেয় কিছুই করার নেই। আমরাও বন্ধ করে দিতে পারি। আমরা যেমন বন্ধ করে দিয়েছিলাম সাময়িকভাবে, আবার খানিকটা চালু করেছি।'

‘উত্তেজনাকর’ বক্তব্য ভারত থেকেও এসেছে, মোদীর আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন বক্তব্য পরিহার করতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আহ্বানকে ‘ইতিবাচক’ অভিহিত করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, এমন উত্তেজনাকর বক্তব্য উভয়দিক থেকেই পরিহার করা উচিত।
ব্যাংককে গত সপ্তাহে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের প্রতি এমন আহ্বান জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই আহ্বানের বিষয়ে মঙ্গলবার এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'উত্তেজনাকর বক্তব্য' প্রশ্নে আমরাও একমত। এটা আসলে একতরফাভাবে হয়েছে, তা কিন্তু নয়। হয়ত আমাদের কেউ কেউ বলছেন, সেটা আসলে তখন তাদের না বলাই ভালো; অনর্থক সমস্যা সৃষ্টি করা। একই কাজ ভারত থেকেও হয়েছে এবং হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা জানি যে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে, আপনারা প্রতিদিনই অত্যন্ত শক্ত সব কথাবার্তা শুনতে পাচ্ছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ কেউ এটা করেছেন।
সম্পর্কোন্নয়নের স্বার্থে উভয়পক্ষেরই ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য পরিহারের উপর গুরুত্ব দিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা এটাও বলেছি বিভিন্ন সময়ে, আসলে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে গেলে, আপত্তিকর কথাবার্তা কোনো পক্ষ থেকেই না বলাই ভালো। আমরা এটাকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখছি।
ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে গত ৪ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘বাস্তবতার নিরীখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাদের বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘জনগণ-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে’ বিশ্বাস করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। দুদেশের দীর্ঘদিনের সহযোগিতা যে বাস্তবিক ফল বয়ে এনেছে, তাও তিনি বিশেষভাবে বলেছেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এই মনোভাব থেকে, বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতার নিরীখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা অধ্যাপক ইউনূসের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি (মোদী)। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আরও আহ্বান জানিয়েছেন, পরিবেশ নষ্ট করে এমন কোনো বক্তব্য পরিহার করাই সর্বোত্তম। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয়ে তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয়ভাবে বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়েছে। এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এটাই প্রথম সাক্ষাৎ ছিল। আমার কাছে মনে হয়েছে, একটা ইতিবাচক পরিবেশে সাক্ষাৎটি হয়েছে। এবং দুপক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালো রাখার এবং ভালো করার ওপর জোর দিয়েছেন।


‘গণতন্ত্র নেই’ এমন দেশও জানতে চায় নির্বাচন কবে?
যেসব দেশে গণতন্ত্রের চর্চা নেই সেসব দেশও বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কবে হবে? তা জানতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। সম্প্রতি ব্যাংককে প্রধান উপদেষ্টা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সরকারের জবাব কি ছিল? তা জানতে চাওয়া হয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে। জবাবে মিস্টার হোসেন বলেন, নির্বাচন নিয়ে যে কোনো জায়গায় কথাবার্তা হলে তারা এমন বলেন। সরকারের অবস্থান হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দায়িত্ব শেষ করে নির্বাচন দিয়ে রাজনীতিবিদদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেওয়া। এটা অন্তবর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকার। এটা যদি অন্য কেউ বলেন… এ কথা প্রায়ই উচ্চারিত হয় এবং যেসব দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা নেই তারাও জানতে চান।' অন্য প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, 'এক ধরনের স্থিতিশীলতা, এক ধরনের অনুমাননির্ভরতা থেকে অনেকে নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইতেই পারেন। কারণ, বিনিয়োগের প্রশ্ন আছে। তারা জানতে চাইতে পারেন কী রকম পরিস্থিতি হবে বা কখন নতুন সরকার আসবে। নিজেদের স্বার্থেই তারা এসব জানতে চান।'

পাঠকের মতামত

হাসিনাকে নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে কি ? ও পাগল ভারতীয় জেলে আছে সেখানেই ভালো আছে। মানসিক বিকার গ্রস্থ ব্যক্তিদের বাংলাদেশের জেলে থাকা অযথা দেশীয় সম্পদ নষ্ট করার দরকার নেই।

khokon
৯ এপ্রিল ২০২৫, বুধবার, ১:৩১ অপরাহ্ন

অনলাইন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

অনলাইন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status