ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নির্বাচিত কলাম

ভেতর-বাহির

প্রবাসী কর্মীরা কি বিবেকহীন? তাদের কি হুমকি শোনার কথা?

ডা. জাহেদ উর রহমান
৯ আগস্ট ২০২২, মঙ্গলবার
mzamin

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানি- এমন ডামাডোল খুব শোনা যায় আমাদের চারপাশে। সমাজের উঁচুতলার একটা শক্তিশালী গ্রুপ হওয়ার কারণে তৈরি পোশাক মালিকেরা খুব জোর গলায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আমদানির মূল খাত হিসেবে নিজেদের দাবি করেন এবং সরকার থেকে বাগিয়ে নিতে পারেন নানা সুবিধা। ওদিকে সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ হওয়ার কারণে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসী কর্মীরা সংগঠিত নন এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের কারণেই এ রাষ্ট্র তাদের প্রাপ্য ন্যূনতম স্বীকৃতিটুকু দেয় না। 

আমরা জানি এই দেশের বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত রেমিট্যান্স। এর পরিমাণ রেডিমেড গার্মেন্টসের চাইতেও বেশ খানিকটা বেশি। যখন বছরে ৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির হিসাব দিয়ে গার্মেন্ট বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত দাবি করে নিজেদের তখন আমরা এটা খেয়াল করি না যে এর অন্তত তিন-চতুর্থাংশ ব্যয় হয় শিল্পের কাঁচামাল এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য। তাহলে গার্মেন্টের নিট বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ৯/১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি নয়। ওদিকে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বাদ দিলে সেটি গার্মেন্টের নিট আয়ের চাইতে বেশি হবেই। দীর্ঘ সময় ধরে এই খাতটি আমাদের গরিব দেশের গরিব অর্থনীতিটাকে রক্ত সঞ্চালন করে বাঁচিয়ে রেখেছে।

গ্রামের সঙ্গে আমার যোগাযোগ খুব কম। করোনার আগে ৭/৮ বছর পরে আমি গ্রামের বাড়ি গিয়ে অবাক বিষ্ময়ে দেখি আমাদের গ্রামে অনেক নতুন পাকা/আধাপাকা বাড়ি, বাজারে দারুন সব নতুন দোকানে নানা রকম পণ্য। বিকালে বাজারে আসা মানুষদের পোশাক, মোবাইল ফোন নিশ্চিতভাবেই মানুষদের স্বচ্ছলতা প্রকাশ করছিল।

বিজ্ঞাপন
একটা এলাকায় মধ্যবিত্ত/নিম্নমধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক উন্নতির ফল স্বাভাবিকভাবেই হতদরিদ্র মানুষগুলোর কাছেও পৌঁছায়। ৭/৮ বছরের ব্যবধানে আমাদের গ্রামের এই আশ্চর্যজনক অর্থনৈতিক অগ্রগতি কোনো সরকারি নীতি বা প্রকল্পের কারণে হয়নি; হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়া মানুষদের পাঠানো টাকায়। আমার গ্রামের এই চিত্র এই দেশের অজস্র গ্রামের। বৈদেশিক মূদ্রার হিসাবের বাইরেও এই দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি কী অসাধারণভাবেই না পাল্টে দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী এই মানুষগুলো!
এতো গেল প্রাপ্তির কথা; কিন্তু আমরা কী কখনো গভীরভাবে ভেবে দেখেছি যে এই প্রাপ্তি কী ভীষণ বড় মূল্যে কেনা? 

এই দেশের প্রায় দেড় কোটি মানুষ দেশের বাইরে থাকেন। আশেপাশের অনেক দেশের তুলনায় ৪/৫ গুণ বেশি টাকা খরচ করে, ধার-দেনা করে, জমিজমা বেচে (এমনকি অনেক সময় ভিটেমাটিও) তারা বিদেশে যান। ওখানে গিয়ে বেতন কম পাওয়া, সঠিক সময়ে বেতন না পাওয়া, মালিকদের হাতে অত্যাচারিত হওয়া, মানবেতর পরিবেশে বসবাস করা, চিকিৎসার পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়া, বিকলাঙ্গ হলে ক্ষতিপূরণ না পাওয়া, মৃত্যু হলে লাশ পেতে সমস্যা হওয়া- তারা কোন সমস্যাটার মুখোমুখি হন না? এটা আর বিস্তারিতভাবে লিখছি নাÑ এসব আমরা কম বেশি সবাইই জানি।

কিন্তু দেশের এই মানুষগুলোর প্রবাস যাপন করার সামাজিক প্রভাব কী আমরা ভেবে দেখেছি কখনো?পরিবার পরিজন ছেড়ে এই মানুষগুলো বহু দূরে থাকে- এদের দাম্পত্য জীবন বলে কী কিছু আছে? আছে ন্যূনতম স্বাভাবিক যৌন জীবন? বিয়ে করে কিছুদিন থেকে চলে যান বিদেশে- বছরে/দুই বছরে একবার দেশে আসেন। প্রবাসী কর্মী এবং তাদের স্ত্রীদের ‘অবদমিত যৌনাকাক্সক্ষা’ তাদের নানা রকম শারীরিক-মানসিক ব্যাধি সৃষ্টি করে। আর একটা স্বাভাবিক, সুন্দর সংসার জীবনের মানসিক সুখের কথাতো বলাই বাহুল্য।

বাবা দূরে থাকায় এদের অনেকের সন্তান বাবার স্নেহ পায় না। বাবার নিয়ন্ত্রণ এবং শাসনের বাইরে থেকে অনেকেই বখে যায় পুরোপুরি। বিদেশ থেকে পাঠানো নগদ টাকা এদের অনেককে মাদক আর জুয়ায় আসক্ত করে তোলে। অনেকেই অকর্মণ্য হয়ে যায়- নিজের উপযোগী একটা ক্যারিয়্যার তৈরি করতে পারে না অনেকেই। 

মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করতে যায় তরুণরা কিন্তু সেখানে অনেককেই এমন বিভৎস পরিস্থিতিতে অমানসিক পরিশ্রম করতে হয় যে মধ্যপ্রাচ্যে তরুণদের মৃত্যুহার আমাদের দেশে থাকা তরুণদের মৃত্যুহারের চাইতে অনেক বেশি। যারা মারা যান না তারাও তাদের শরীরে এই দীর্ঘকালীন অমানসিক ধকলের চিহ্ন বয়ে চলেন মৃত্যু পর্যন্ত। 

ওদিকে গত কয়েক বছর থেকে বড় সংখ্যায় নারীকর্মী যাওয়া আরেক ভয়ঙ্কর সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে গৃহকর্মী হিসেবে যেসব নারী যান, তাদের খুব বড় অংশের ক্ষেত্রে নানা শারীরিক নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত থাকে যৌন নির্যাতনও। নারী কর্মীদের লাশও আসে নিয়মিত। নানা রকম নির্যাতনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে কেউ কেউ আসেন গর্ভবতী হয়ে। সৌদি আরবে পুরুষ কর্মী পাঠানোর সঙ্গে নারী কর্মী পাঠানোর শর্ত মানতে গিয়ে সরকার আমাদের নারীদের জেনেশুনে ঠেলে দিচ্ছে এক ভয়ঙ্কর বিভীষিকার পথে। এমন আরও অনেক সামাজিক সমস্যার উদাহরণ দেয়া যায়। অর্থাৎ প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো প্রতিটা ডলার কী ভীষণ মূল্য দিয়েই না আমরা পাই! 

নিজেদেরকে আক্ষরিক অর্থেই উৎসর্গ করছেন প্রবাসী কর্মীরা। আমাদের দেশের সত্যিকারের হিরো তো এরাই। কিন্তু না, এই রাষ্ট্রের কোনো সরকারের এটুকু ন্যূনতম মানবিকতা ছিল না যে তারা সেটা বুঝবে, অনুভব করবে। তাই, অনেক কিছু দিয়ে ভরিয়ে দেয়া তো দূরেই থাকুক, তাদের প্রতি ন্যূনতম সহানুভূতি, সহমর্মিতাও দেখানো হয়নি, হয় না।

বিমানবন্দর দিয়ে আসা-যাওয়ার সময় তাদের নানা হয়রানির কথা আমরা প্রতিনিয়ত শুনি, বিদেশে সমস্যার সময় ন্যূনতম সহযোগিতা পান না বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো থেকে, যদিও এদেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় ভীষণ ব্যায়বহুল এই দূতাবাসগুলো চলে প্রবাসীদেরকে ‘সেবা’ দেয়ার জন্য। তারা দেন হয়তো চেহারা দেখে, ধনীদের; এদেরকে দেন না। দূতাবাস কর্মকর্তারা তো আবার বিসিএস এ প্রথমদিকে থাকা মানুষ; এদের কথা ভাবতে তাদের বয়েই গেছে! বিদেশে যাওয়ার খরচ কমানোর দাবি তো ভীষণ কল্পনাবিলাসিতা।

প্রবাসী কর্মীরা যখন জীবন-জীবিকার চরম সংকটে পড়ে তখন কী হয় সেটার এক স্পষ্ট প্রমাণ হয়ে গেল করোনার সময়। সে সময় দেশে ফেরত আসা প্রবাসীরা কেমন আছেন সেটা জানতে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এপ্রিল ও মে মাসে একটি জরিপ পরিচালনা করে। বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীদের জীবন ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব শীর্ষক জরিপে জানা যায়, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির সময়ে দেশে ফেরত আসা অভিবাসী কর্মীদেও ৮৭ শতাংশেরই কোনো আয়ের উৎস নেই। ৭৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা এখন প্রচণ্ড দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও ভীতির মধ্যে রয়েছেন। ৭৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তাদের নিজেদের সঞ্চয় বলতে এখন আর কিছু নেই। ৯৪ শতাংশ বলেছেন, তারা সরকারি বা বেসরকারি কে নো সহায়তা পাননি।

বিদেশ থেকে স্থায়ীভাবে ফিরে আসতে বাধ্য হওয়া কর্মীদের জন্য সরকার করোনার শুরুতে তাৎক্ষণিকভাবে ২০০ কোটি টাকা ‌এবং এরপর বাজেটে আরো ৫০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করেছে, যেখান থেকে যেসব কর্মী ফিরে যেতে পারবেন না তাদেরকে সহজ শর্তে এবং কম সুদে ঋণ দেয়া হবে। সেই টাকার অতি সামান্য অংশই ছাড় করা হয়েছিল। এমনকি পুরো টাকা ছাড় করা হলেও করোনার সময় ফিরে আসা মানুষদের সংখ্যা দিয়ে সেটাকে ভাগ করলে মাথাপিছু মাত্র ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা হয়। এই টাকায় কেমন জীবিকার সংস্থান করবেন তারা?

এই দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর চাইতে ডলার পাঠালে কিছুটা বেশি টাকা পাওয়া যায় দীর্ঘকাল থেকেই। সঙ্গে ব্যাংকে গিয়ে টাকা উত্তোলনের ঝামেলা না করে বাসায় বসে টাকা পাবার সুবিধা তো ছিলই। কিন্তু তবুও এই সুবিধাটুকু গ্রহণ করেননি অসংখ্য প্রবাসী কর্মী। দেশের কথা ভেবেছেন তারা। এখন ব্যাংকিং চ্যানেল আর হুন্ডিতে পাঠানোর ক্ষেত্রে পার্থক্যটা অনেক বড় হয়ে গেছে তাই হুন্ডিতে টাকা পাঠানোর পরিমাণ বেড়েছে এটা মোটামুটি নিশ্চিত।

বছরের পর বছর অকল্পনীয় রকম লুটপাটের ফল হিসাবে বাংলাদেশ খুব সহজ হয় বর্তমানের মতো একটা অর্থনৈতিক সংকটে পড়তো। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সংকটটি কিছুটা এগিয়ে এসেছে। এই সংকটে সবচেয়ে বড় আতঙ্ক তৈরি করেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত কমে যাওয়া। ফলে সরকার এখন নানা পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করছে যাতে রিজার্ভ ঠিক রাখা যায়। সর্বশেষ সরকারের দিক থেকে প্রবাসী কর্মীদের টার্গেট করা হয়েছে। হুন্ডি যেহেতু আইনগতভাবে অবৈধ, তাই ৩রা আগস্ট অর্থমন্ত্রী হুন্ডির ব্যাপারে বিবেকের দোহাই দিয়েছেন। সেটুকুতে থেমে থাকেননি তিনি। হুন্ডিতে পাঠানো টাকা কালো হয়ে যাবে বলে ইনকাম ট্যাক্স/রেগুলেটরি অথরিটি লেলিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, 

‘আমরা সবসময় অফিসিয়াল চ্যানেলে বিদেশ থেকে টাকা আসুক সেটা প্রত্যাশা করি। কারণ এটার যে সুফল সেটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। হুন্ডির মাধ্যমে যদি টাকা নিয়ে আসেন সেটিকে অবৈধ বলবো না, তবে সেটি কালো টাকা। যারা সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে নিয়ে আসেন, তারা সবসময় বিবেকের কাছে দায়ী থাকবেন। তাদের আস্তে আস্তে অনেক টাকা হয়ে গেলে সেটি কিন্তু রেকর্ড করতে পারছেন না, কারণ হুন্ডির টাকা। কখনো ইনকাম ট্যাক্স বা রেগুলেটরি অথরিটি এ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে জবাব দিতে পারবেন না।’

প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠালেও সেটা নয়ছয় হয়েই থাকে। লেনদেনের ভারসাম্যের চরম ক্ষতি গত কয়েক মাসে যে হয়েছে, সেটা তো হয়েছে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাচারের কারণে। আমদানির (ওভার ইনভয়েসিং) আর রপ্তানির (আন্ডার ইনভয়েসিং) সময় টাকা পাচারের কারণেই বাংলাদেশের রিজার্ভের আজকের এই পরিস্থিতি। নির্বাচন কাছে এলে দেশের টাকা পাচারের পরিমাণ বেড়ে যায়, এটা আমরা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) এর পূর্ববর্তী রিপোর্টে দেখেছি। ২০১৪’র নির্বাচনের আগে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছিল। আরেকটি নির্বাচন সামনে রেখে এখন আবার পাচার বাড়ারই কথা।

রিজার্ভ থেকে টাকা পাচার তো হয়ই সঙ্গে এই রিজার্ভের টাকা খরচ করে নানা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি হয়। বলাবাহুল্য, গত কয়েক বছরে যেনতেন দুর্নীতি করার একটা বড় শক্তি, সাহস হিসেবে কাজ করছিল একটা স্বাস্থ্যবান রিজার্ভ। এই রিজার্ভের টাকা নিয়ে প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা সফরের নামে সরকারি আমলারা প্রমোদভ্রমণ করে বেড়ান নানা দেশে।

বাংলাদেশ যে আজ আর্থিক সংকটে পড়েছে, সেই প্রেক্ষিতে খুব সাধারণ একজন নাগরিক জানেন এর পেছনে আছে ক্ষমতাসীন দলের অনুগত সহযোগী-সমর্থকদের হাতে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নামের এক ‘আলাদিনের প্রদীপ’ তুলে দেয়া। হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে ক্যাপাসিটি চার্জ আর অতি উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ কেনার নামে। এছাড়া সরকারের অলিগার্কদের সুবিধা করে দেয়ার জন্য দেশকে এলএনজি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল করে তোলা হয়েছে। যদিও আগামী ৩৫/৩০ বছরের চাহিদা মেটানোর মতো প্রায় নিশ্চিত মজুত আছে গ্যাসে।

অপরপক্ষে এ দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভিত্তিটি একেবারে ভেস্তে দেয়ার জন্য অন্যতম প্রধান দায়ী ব্যাংকখাতে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট। এ লুটপাট নিশ্চিত করার জন্য নানা আইন এবং বিধি পরিবর্তনের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে ক্ষমতাসীন সরকারের। এর সঙ্গে ন্যায্য ব্যয়ের কয়েকগুণ বেশি ব্যয়ে কতগুলো বিরাট ভৌত অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে উন্নয়নের বয়ান তৈরির চেষ্টা এদেশকে ভয়ঙ্করতম বিপদে ফেলেছে। 

বিবেকবান হবার নসিহত যদি কাউকে করতে হয় তাহলে বিরাট বিরাট রাঘব-বোয়াল লুটপাটকারীদের করা উচিত। শাস্তিমূলক ব্যবস্থার হুমকি যদি কাউকে দিতে হয় তাহলে সেটাও দিতে হবে ওই রাঘব-বোয়ালদেরই। অবশ্য সরকার বিবেকবান হবার নসিহত কিংবা শাস্তির হুমকি দেবে কেন, সরকার তার হাতে থাকা সকল ক্ষমতা দিয়ে লুটপাটকারীদের শাস্তি দেবে। কিন্তু সেটা অর্থমন্ত্রী করবেন না, কারণ ওই রাঘব-বোয়ালরা এই সরকারের (অলিগার্কি) অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের তুলে নেয়া লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার হিস্যা ছড়িয়ে পড়ে বহুদূর পর্যন্ত।

নির্বাচিত কলাম থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

নির্বাচিত কলাম সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status