বাংলারজমিন
ছাত্রদল সভাপতি পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি, ভ্যাট কর্মকর্তাকে গণধোলাই
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ
২৬ মার্চ ২০২৫, বুধবারহবিগঞ্জ শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকায় সাবেক ছাত্রদল নেতা পরিচয়ে চাঁদা দাবি করায় আটক ও গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন হবিগঞ্জের ভ্যাট কর্মকর্তা শামীম আল মামুন। এ ঘটনায় সোমবার রাত ১১টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘাটিয়া বাজার এলাকায় তোলকালাম কাণ্ড ঘটে। বিপনী বিতান এসটি প্লাজায় ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা এ ভ্যাট কর্মকর্তাকে জনতা আটক করে গণধোলাই দিয়ে অবশেষে থানায় সোপর্দ করেছে। এসময় ঘাটিয়া বাজার এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পুরুষ ও নারী ক্রেতারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভয়ে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ করে দেন। সোমবার রাত ১১ টার দিকে ওই এসডি প্লাজায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে জানাজানি হলে শহরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে জেলা ভ্যাট কমিশনার এসে আটক কর্মকর্তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। রাত পৌণে ২টায় এ রিপোর্ট লেখাকালে ওই ব্যক্তি থানায় আটক ছিলো। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল রাতে শামীম আল মামুন নামের ওই অফিসার কোনো সহকর্মী ছাড়াই শহরের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শনে যান। এক পর্যায়ে ঘাটিয়া বাজারের এসডি প্লাজার ম্যানেজারের নিকট সেলস রিপোর্ট দেখতে চান। এক পর্যায়ে তিনি ৫ লাখ চাঁদা দাবী করে বলেন এ টাকা দিলে তিনি সবকিছু ম্যানেজ করে দিবেন। নইলে অনেক টাকা ভ্যাট দিতে হবে। এ সময় তার পরিচয়সহ এতো রাতে পরিদর্শনে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। এতে উপস্থিত ক্রেতাদের সন্দেহ হলে তাকে আটকে প্রহার করেন। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে খবর পেয়ে ছুটে আসেন ভ্যাট কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্তা ও চৌধুরী বাজার ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তাসহ একদল পুলিশ। কিন্তু উত্তেজিত জনতা শামীম আল মামুনকে ছাড়তে রাজি না। এক পর্যায়ে মঙ্গেু হোটেলের মালিকসহ আরও কয়েকজন এসে তাদের কাছেও এ কর্মকর্তা চাঁদা দাবি করেছে বলে অভিযোগ করেন। এসময় উত্তেজিত জনতা তাকে ঘেরাও করে তাৎক্ষণিক বিচারের দাবি জানান। পরে পুলিশ ও ভ্যাট কমিশনারের আশ্বাসে এসময় উত্তম মধ্যম দিয়ে সদর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
এসডি প্লাজার স্বত্বাধিকারী শুভ রায় জানান, শামীম আল মামুন তাদের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পরিচয় দিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেয়ায় তিনি হুমকি ধামকি প্রদর্শন করেন। এসময় ক্রেতারা বিষয়টি দেখে তারা তাকে আটক করেন। তিনি জানান এ ঘটনায় তার প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দোকানের ক্যাশ তহবিলের টাকা বেহাত হয়েছে কিনা তা তারা হিসেব করে দেখবেন। তারা এ কর্মকর্তার বিচার দাবী করেন।
তবে অভিযুক্ত শামীম আল মামুন বলেন, রুটিন অনুযায়ী দোকান পরিদর্শনে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে কতিপয় লোক হেনস্তা ও মারধর করেছে। এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, জনতা আটক করে তাকে থানায় সোপর্দ করেছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।