খেলা
হামজা চৌধুরীকে বরণের অপেক্ষায় বাহুবলের স্নানঘাট গ্রাম
নূরুল ইসলাম মনি, বাহুবল থেকে
১৭ মার্চ ২০২৫, সোমবার
হামজা চৌধুরীকে বরণের অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে। আজ সপরিবারে দেশের মাটিতে পা রাখবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ তারকা। অতীতে বহুবার দেশে এসেছেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার হামজা। তবে সেই সফরগুলো ছিল একান্তই ব্যক্তিগত। এবার তিনি আসছেন দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে। আগামী ২৫শে মার্চ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে দেখা যাবে তাকে লাল-সবুজ জার্সিতে। এ কারণেই এবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মতো হামজাকে বরণের অপেক্ষা হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার স্নানঘাটবাসী। তার আগমনে সর্বত্র উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
এ উপলক্ষে ইংল্যান্ড থেকে সপ্তাহ তিনেক আগেই বাংলাদেশে চলে এসেছেন হামজা চৌধুরীর পিতা মোর্শেদ দেওয়ান চৌধুরী। এরপর থেকেই তাকে ব্যস্ততায় সময় কাটাতে হচ্ছে। তার আগমনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইছেন তিনি। এ জন্য তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল বিকালে সরেজমিন স্নানঘাট গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, হামজা চৌধুরীকে বরণ করতে সর্বত্র উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তাকে স্বাগত জানিয়ে টাঙ্গানো হয়েছে তোরণ। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে ফেস্টুন ও ব্যানার। বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনরা নানান প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। পাড়া-প্রতিবেশী, শুভাকাঙ্খি, সাংবাদিক ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন আসছেন, খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। সেখানে কথা হয় স্নানঘাট গ্রামের তালেব আলী নামে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি বলেন, হামজা চৌধুরীকে ছোট বেলায় দেখেছি। তখন তার বিশ্বজোড়া খ্যাতি ছিল না। এখন তিনি খ্যাতিমান ফুটবলার। তার ওপর নিজ দেশের হয়ে জাতীয় দলে অভিষেকের অপেক্ষায় আছে। এটা যেমন ফুটবলে দেশের মান বাড়াবে তেমনি আমরা স্নানঘাট তথা বাহুবলবাসীরও সম্মান বাড়াবে। স্নানঘাট গ্রামের আবু তাহের নামে এক তরুণ বলেন, ‘আমাদের গ্রামের ছেলে হামজা চৌধুরীকে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলতে দেখেছি। এবার তাকে কাছে থেকে দেখবো। এ জন্য আমিসহ এলাকার লোকজন উদগ্রীব।’ নিজ বাড়িতেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হামজা চৌধুরীর পিতা মোর্শেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘গতকাল ইংল্যান্ড সময় দুপুরে
শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে ম্যাচ খেলে রাতেই বাংলাদেশের বিমান ধরবেন হামজা চৌধুরী। আজ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। ইংল্যান্ড থেকে তার সফরসঙ্গী হিসেবে স্ত্রী, তিন সস্তান, মা, দুই ভাইসহ ৯ জন আসছেন।’ স্থানীয় স্নানঘাট ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতা ইমাম শরীফ হোসেন চৌধুরী জুয়েল জানান, ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে মোটর সাইকেল শোভাযাত্রার মাধ্যমে আমরা হামজা চৌধুরীকে বরণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান বলেন, ‘হামজা চৌধুরীর গ্রামের বাড়িতে আগমকে আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। যাতে তার নিরাপত্তায় কোন ঘাটতি না থাকে সে ভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত থাকবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।’ তিনি আরো বলেন, এত কাছ থেকে তারকা ফুটবলারকে দেখতে পাবেন ভেবে আমার নিজের মাঝেও বাড়তি ভালো লাগা কাজ করছে। আমি গর্বিত তার মতো একজন খেলোয়াড়ের অঞ্চলের মানুষ হতে পেরে। তিনি বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। ইংল্যান্ডের শীর্ষ পর্যায়ে খেলা মানে তো বিশাল ব্যাপার! নিজের গ্রামের বাড়িতে একদিন কাটানোর পরের দিনের শেষ ফ্লাইট ধরে হামজা ঢাকায় এসে যোগ দেবেন দলের সঙ্গে। ১৯শে মার্চ দুপুরে টিম হোটেলে অফিশিয়াল প্রেস কনফারেন্সে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন তিনি। তার আগে সকালে হবে দলীয় ফটোসেশন। এরপর বিকাল অথবা সন্ধ্যায় অনুশীলনে নামার কথাও রয়েছে হামজার। দলের অনুশীলনের ব্যাপারটি অবশ্য নির্ভর করছে কোচ হাভিয়ের কাবরেরার ওপর।