বাংলারজমিন
সিলেটে শ্যামল গ্রেপ্তার
ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন স্মৃতি দাস
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৬ আগস্ট ২০২২, শনিবার
এমসি কলেজের ছাত্রী স্মৃতি রানী দাস। শ্যামল দাসের ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছিলেন তিনি। স্মৃতির ম্যাসেঞ্জার হ্যাক করে শ্যামল গোপন ছবি নিয়ে যায়। আর এই ছবি দিয়ে স্মৃতিকে ব্ল্যাকমেইল করে সে। চায় টাকাও। কথামতো হোস্টেলে থাকা ওই ছাত্রী ২৫০০ টাকা পাঠিয়েছিলেনও। কিন্তু এতে খুশি হয়নি ব্ল্যাকমেইলার শ্যামল। স্মৃতির কাছে আরও টাকা চায়। নতুবা ছবি ছেড়ে দেবে ইন্টারনেটে। আর শ্যামলের এই হুমকিতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় স্মৃতি। ঘটনার প্রায় ২ মাস ১২ দিনের মাথায় পুলিশ তদন্ত শেষে স্মৃতিকে ব্ল্যাকমেইল করার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর পুলিশ গ্রেপ্তার করে ব্ল্যাকমেইলার শ্যামল দাসকে। ধরাপড়ার পর শ্যামল প্রথমে পুলিশের কাছে এবং পরে সিলেটের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সিলেটের ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালতে সে জবানবন্দি দেয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী স্মৃতি রানী দাস। তিনি হোস্টেলের ৩য় তলার ৩০৭নং কক্ষে থাকতেন। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামে। বাবার নাম যুগল কিশোর দাস। গত ২৫শে মে দুপুরে এমসি কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ৪ তলার ৪০৩ নং কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে স্মৃতি রানীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করে শাহ পরাণ থানা পুলিশ। ঘটনার প্রায় দুই মাস পর পুলিশ ব্ল্যাকমেইলের বিষয়টি খুঁজে পায়। ব্ল্যাকমেইল করে শ্যামল দাস। সে বানিয়াচং উজেলার সুধাংশু দাসের ছেলে। নগরীর জালালাবাদ এলাকায় সে বসবাস করতো। তাকে পুলিশ বৃহস্পতিবার ভোরে জালালাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, স্মৃতি রানী দাসের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার হ্যাক করে আপত্তিকর ছবি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে মানসিক চাপে ফেলেন শ্যামল দাস। এভাবে তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন। গত ২৫শে মে দুপুরে এমসি কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের ৪ তলার ৪০৩ নং কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে স্মৃতি রানীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে, এ ঘটনায় স্মৃতিরানী আত্মহত্যা করবেন তা ভাবতে পারেননি। স্মৃতির ছবি পাঠিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং পাঠাতো। সর্বশেষ তাকে বিকাশে ২৫০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন স্মৃতি। বিকাশের নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। শাহ পরাণ (র.) থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান মানবজমিনকে জানিয়েছেন, স্মৃতির বাবাকে বাদী করে আমরা আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলা নিয়েছি। ওই মামলায় শ্যামল দাসকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে সে স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তিনি জানান, ম্যাসেঞ্জার হ্যাক করে স্মৃতি রানী দাসের ব্যক্তিগত ছবি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয় শ্যামল দাস। এরপর স্মৃতি রানীকে মানসিক চাপে ফেলে টাকা আদায় করতো। আত্মসম্মানের ভয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।