শেষের পাতা
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হতে দেবে না বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, বুধবার
সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আপনাকে বিএনপি শ্রদ্ধা করে। দেশবাসী আপনাকে ভালোবাসে। আপনি আমাদের গর্ব। কিন্তু সেই সম্মানটুকু রক্ষার দায়িত্ব আপনারই। আপনি যদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন দিয়ে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তাহলে দেশবাসী তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। আপনাদের যদি ক্ষমতার লোভ পেয়ে বসে তাহলে রাজনৈতিক দল গঠন করে জনতার কাতারে নেমে এসে নির্বাচনে অংশ নিন। বিএনপি আপনাদেরকে স্বাগত জানাবে। কারণ বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে।
গতকাল বিকালে যশোর টাউন হল ময়দানে জেলা বিএনপি আয়োজিত একদলীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশবাসী স্থানীয় সরকারের নির্বাচন মেনে নেবে না। বিএনপি তা কখনো হতে দেবে না। বিএনপি গত ১৬ বছর সকল প্রকার গুম, খুন, হত্যা ও হুমকি উপেক্ষা করে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। এখনো তেমনিই আছে। যতদিন দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত না হচ্ছে, দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হচ্ছে ততদিন বিএনপি রাজপথেই থাকবে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবে শত শত ছাত্র-জনতার প্রাণের বিনিময়ে এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই এই সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা অনেক বেশি। আপনাদের ব্যর্থ হলে চলবে না। জনগণের প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা আপনাদেরই করতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্র সংস্কারে ভিশন-৩২ ঘোষণা করেছিলেন। আমাদের নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। এসবই চলমান বিষয়। আর এসব সংস্কার তখনই কার্যকর হবে যখন দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। তাই দ্রুত নির্বাচন দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ আজ ভালো নেই। পতিত স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল স্তরে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা জেঁকে বসে আছে। দেশকে দ্রুত ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে হলে গণতান্ত্রিক সরকারের কোনো বিকল্প নেই। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন ভেঙে পড়ছে। মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। প্রশাসন যন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে না। এই অবস্থায় দেশ চলতে পারে না। এই জন্যই বিএনপি দেশের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা ও নির্ভরতা রক্ষা করতে দ্রুত জাতীয় নির্বাচন দাবি করছে। কোনো কোনো দল জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন দাবি করে জনআকাঙ্ক্ষাকে ভূলুণ্ঠিত করার চক্রান্ত করছে। কিন্তু দেশবাসী তাদের সেই ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত মেনে নিবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বিএনপি চায় দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে। তার জন্য যতদিন প্রয়োজন বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ততদিন রাজপথেই থাকবে।
যশোর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা অমলেন্দু দাস অপু, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, টিএস আইয়ুব, এড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, দেলোয়ার হোসেন খোকন, যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম মারুফ, কেশবপুরের আবুল হোসেন আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজা বুলবুল কলি, সাবিরা নাজমুল মুন্নি, যশোর সদর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি, মণিরামপুরের এড. শহীদ ইকবাল, অভয়নগরের ফারাজী মতিয়ার রহমান, চৌগাছার এম এ সালাম, কেশবপুরের আব্দুস সালাম, বাঘারপাড়া বিএনপি’র সভাপতি তানিয়া রহমান, চৌগাছার সেলিম রেজা প্রমুখ।
পাঠকের মতামত
জাতীয় নির্বাচন ছাড়া এ মুহূর্তে জাতি অন্য কোনো নির্বাচন জনগণ চায় না।
দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ চায় আগে স্থানীয় নির্বাচন। স্থানীয় নির্বাচন আগে হলে দেশের সত্যিকারের দেশপ্রেমিক মানুষ গুলো বিজয়ী হয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ।
স্থানীয় নির্বাচন কোন দলীয় নির্বাচন নয়। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো কেন বাধা দেবে? স্থানীয় প্রশাসনে কোন নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকার কারণে বিভাগীয় এবং জেলা কমিশনারদের সমস্ত স্থানীয় প্রশাসন গুলো দেখতে হচ্ছে। সুতরাং স্থানীয় নির্বাচন যদি আগে হয় জাতিয় নির্বাচন থেকে আগে হয় তাহলে স্থানীয় প্রশাসন গুলো সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে এ ব্যাপারে বিএনপি বাধা দিচ্ছে এবং ফখরুল সাহেব অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছেন। তিনি বলছেন যে তিনি স্থানীয় নির্বাচন হতে দেবেন না। যারা বিএনপির রাজনীতি পছন্দ করত বিএনপির বর্তমান কার্য কলাপের কারণে তারাও বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। বিএনপি'র নেতৃত্বের এই বাস্তবতাটা বোঝা উচিত।
দিন দিন বি এন পি'র জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে। বি এন পি যে একটা ক্ষমতা লোভি দল তা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য শুনেই বোঝা যায়। আমার এবং আমার পরিবারের ভোট আর যাদের পক্ষেই পরুক কমপক্ষে আওয়ামীলীগের দোসর বি এন পি'র ঘরে যাবে না।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নাকি সংসদ নির্বাচন আগে হবে , সেটা নির্ণয় করার জন্য সাধারণ জনগণ এর ভোট নেয়া হোক। কোন রাজনৈতিক দলের পরামর্শ মতো নির্বাচন এর আয়োজন করলে সেটা হবে অগণতান্ত্রিক আচরণ।
এই দেশ কোন দলের কাছে বর্গা দেওয়া হয়নি। দেশে স্থানীয় নির্বাচন কিন্তু যৌক্তিক বিষয়। অতি দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেওয়া হোক। দেশ ও জাতির আকাঙ্ক্ষা পূরণে ডঃ ইউনুস সাহেব প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় নয়। কোনো দলের চাওয়া না চাওয়া এখানে বিবেচ্য নয়। জনগণের চাওয়াই এখানে মূখ্য।
এটা বিএনপির গনবিরোধী সিদ্ধান্ত।
বি এন পি কে কয়ে বলে কি নির্বাচন করতে হবে, বি এন পি নির্বাচন ঠেকানোর কে
বিএনপি দিন দিন যে কথা বলছে ওরা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আমি ও বিএনপি কে ভালোবাস্তাম কিন্তু ওদের চরিত্র দেখে আর ম ন চায় না।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন সহ যেকোন নির্বাচন আয়োজন হবে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত যা দেশের প্রায় ১ যুগের ও বেশি সময় ধরে চলা গণতন্ত্রহীনতা কে আরো দীর্ঘায়িত করতে পারে। সুতরাং সবার আগে সবার দাবি জাতীয় সংসদ নির্বাচন।