খেলা
এর মাঝেও পজেটিভ দিক খুঁজে বেড়াচ্ছেন শাহেদ রেজা
স্পোর্টস রিপোর্টার
৩ আগস্ট ২০২২, বুধবার
বার্মিংহাম (যুক্তরাজ্য) থেকে সাঁতারে ভরাডুবি অব্যাহত আছে। গতকাল স্যান্ডওয়েল অ্যাকুয়াটিকস সেন্টারে ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইলে ২.৫৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে ৪৬ প্রতিযোগীর মধ্যে ৪৪তম হয়েছেন আফিস রেজা। টুম্পা, সোনিয়া, নাহিদ, মরিয়র এরা কেউই হিটে উতরাতে পারেননি। ভারোত্তোলনে ক্যারিয়ার সেরা ওজন তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। মনিরা কাজীও রীতিমতো হতাশ করেছেন। ৭৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে ১১ প্রতিযোগীর মধ্যে ৯ম হয়েছেন এই ভারোত্তোলক। ট্রাকে ইমরানুর, সুমাইয়া এরা কেউই নিজেদের সেরা টাইমিং করতে পারেননি। তারপরেও এবারের কমনওয়েলথ গেমসে অ্যাথলেটিকদের পারফরমেন্সে তৃপ্ত বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ)-এর মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা। তারমতে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করেছে টেবিল টেনিস। জিমন্যাস্টিক, ভারোত্তোলনও ভালো করেছে। সাঁতার নিয়েও আক্ষেপ নেই তার। বক্সিংয়েও উন্নতি দেখছেন তিনি। বিওএ প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধান এসএম সফিউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে বার্মিংহাম এসেছেন শাহেদ রেজা। উদ্বোধনের পর থেকেই এক ভেন্যু থেকে অন্য ভেন্যু চষে বেড়িয়েছেন বিওএ’র এই কর্মকর্তা। তাদের সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে বার্মিংহামের ন্যাশনাল এক্সিভিশন সেন্টারে। যেখানে এক নম্বর হলে ভারোত্তোলন, তিন নম্বরে টেবিল টেনিস ও চার নম্বর হলে বক্সিংয়ে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের অ্যাথলেটিকরা। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি ইভেন্টে দেখা গেছে তাকে। গতকাল ইমরানুর সুমাইয়াদের দৌড় দেখতে এসেছিলেন আলেকজান্ডার স্টেডিয়ামে। সেখানে বসেই মাবিয়া, ইমরানদের পারফরমেন্সের ময়নাতদন্ত করলেন বাংলাদেশ অলিম্পিকের এই নির্বাহী প্রধান। তিনি বলেন, শুটিং ছাড়া কমনওয়েলথ গেমসে পদক আসবে না এটা ধরে নিয়েই আমরা দল পাঠিয়েছি। লক্ষ্য ছিল পারফরমেন্সের উন্নতি। আমার কাছে মনে হয়েছে আমরা ভালো উন্নতি করেছি।’ উদাহরণ হিসেবে টেবিল টেনিসকে সামনে এনে তিনি বলেন, কোনো প্রকার আশা ছাড়া আসা টেবিল টেনিস কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। জিমন্যাস্টিক দলগত নবম হয়েছে। যুব গেমস থেকে উঠে আসা আশিকুর রহমান তাজ ভারোত্তোলনে ভালোই করেছে। এটাকে আমি অর্জনই চাই’। অ্যাথলেটদের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে শাহেদ রেজা বলেন, মাবিয়া দেশে ১৮১/১৮২ কেজি উঠিয়ে সেরা হয়। আর এখানে যে স্বর্ণ জিতেছে কানাডার মেয়েটা ওজন উঠিয়েছে ২৩২ কেজি। ব্রোঞ্জ জয়ীর সঙ্গে ওর ব্যবধান ৪৩ কেজি। এখন ওকে নিয়ে যদি এখানে আমরা স্বপ্ন দেখি সেটা কি বাড়াবাড়ি হবে না? সবশেষ ওয়ার্ল্ড সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই সাঁতারু সোনিয়া আক্তার টুম্পা ও সামিউল ইসলাম রাফি। যথারীতি ব্যর্থ হয়েছিলেন দু’জনই। বার্মিংহামেও লজ্জা দিয়েছেন সাঁতারুরা। ৮টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের সাঁতারুরা হিট থেকেই ছিটকে গেছেন। এখানেও সাঁতারুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন শাহেদ রেজা। তিনি বলেন, সাঁতারুরা চেষ্টা করছে। ফেডারেশনও তাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছে। তারপরেও হচ্ছে না। এর কারণ হলো আমরা ওদের প্রপার ট্রেনিং দিতে পারছি না। একজন ভালো সাঁতারু তৈরি করতে যে সকল সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন আমাদের দেশে তার ঘাটতি আছে। আমি ওয়ার্ল্ড সুইমিং ফেডারেশনের সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে কথা দিয়েছেন দ্রুত আমাদের একটি ২৫ মিটারের সুইমিংপুল করে দিবেন। পাশাপাশি টেকনিক্যাল বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করবেন।’ বার্র্মিংহাম থেকে দল খালি হাতে ফিরলেও, তুরস্কে এমনটা হবে না জানিয়ে বিওএ’র মহাসচিব বলেন, বৈশ্বিক এসব আসরে আমাদের পদকের ডিসিপ্লিন হলো শুটিং ও আরচারি। পদকপ্রসবা এই দুই ডিসিপ্লিন আছে কোনিনে। তাছাড়া সেখানে প্রতিযোগিতা কম। তাই শুটিং আরচারির পাশাপাশি টেবিল টেনিস, অ্যাথলেটিক্স নিয়েও আমি আশাবাদী’। এখন দেখা যাক বার্মিংহাম থেকে খালি হাতে ফেরা এসব অ্যাথলেট কোনিয়ে জাতীয়কে কি উপহার দেয়?