বাংলারজমিন
কুষ্টিয়ায় অবৈধ দখলকৃত জমি উদ্ধার
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, বৃহস্পতিবার
দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের হাউজিং এস্টেটের অবৈধ দখলকৃত জমি ২ দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে উদ্ধারে সক্ষম হয়েছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার ও মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ গুঁড়িয়ে দিয়েছে বেশ কিছু স্থাপনা। গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ বলছে, জায়গা দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দেয়া হবে। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপ-পরিচালক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ। এ সময় সেখানে অন্তত ৫০ জন প্লটের প্রকৃত মালিক উপস্থিত ছিলেন। তারা বলছেন, দীর্ঘ ৮ বছর ধরে তারা দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তাদের জায়গা দখল করে নেয়া হয়েছিল। ক্ষমতার দাপটে আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে এসব জমি দখল করে সরকারি স্থাপনা করার উদ্যোগ নেন। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন তাদের হাউজিং এলাকায় সাড়ে ১৯ একর জায়গা আছে। এসব জায়গা ২০১৮ সালের আগে লটারি করে বরাদ্দ দেয়া হয়। আড়াই কাঠা, তিন কাঠা ও পাঁচ কাঠার প্লট রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২১২টি প্লট রয়েছে। তবে ২০১৮ সালের দিকে জেলা প্রশাসন এসব জমি অধিগ্রহণের নামে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়। এদিকে প্লট বরাদ্দ পেয়ে অনেকে তাদের জমি নিবন্ধনও করে নেন। প্লট মালিকরা তাদের জমি আর বুঝে পাননি।
প্লট মালিকেরা বলেন, সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়েও প্লট বুঝে পাচ্ছিলেন না। তাঁরা রায় পেলেও প্রভাবশালী নেতারা জায়গা জোর করে দখল করে রেখেছিলেন উন্নয়ন করার নামে। ২০১৮ সালের দিকে ছয়জন প্লটমালিক তাঁদের জমি ফেরত পেতে উচ্চ আদালতে রিট করেন। গত বছরের ১৪ই ডিসেম্বর তাঁরা তাঁদের পক্ষে রায় পান।
সরজমিন দেখা যায়, পুলিশ-র্যাবের সহযোগিতায় ম্যাজিস্ট্রেট উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছেন। এরপর জেলা পরিষদের মিলনায়তনের সামনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী কার্যালয়ও ভাঙা হয়। আইটি পার্কে গিয়েও উচ্ছেদ চালানো হয়। এছাড়াও বিভিন্ন অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হয়।
ভুক্তভোগী সাইফুল আলী বলেন, তিনি বি ব্লকে প্লট পেয়েছিলেন। পাঁচ কাঠা জমি বরাদ্দ পেয়ে রেজিস্ট্রিও করেছিলেন। কিন্তু গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বুঝিয়ে দিতে পারেনি। সে সময় জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন খাস দেখিয়ে এসব জমি অধিগ্রহণ করেন। কিন্তু তিনিসহ ছয়জন প্লট মালিক উচ্চ আদালতে রিট করেন। এরপর তাঁরা রায় পান। উচ্ছেদ অভিযানের ফলে অবৈধ দখলকৃত জমিগুলো উদ্ধার হওয়ায় প্রকৃত মালিকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন, সেই সাথে দ্রুত তারা তাদের জমি ফিরে পাবেন বলে আশা করছেন। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রায় ২০ একর জায়গা নিয়ে সমস্যা আছে। আমরা সেগুলো দখলমুক্ত করছি। নতুন করে নকশা করা হবে। যাঁরা রেজিস্ট্রি করেছেন, তাঁদের জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’