খেলা
অবশেষে ডানা মেলছে দেশিদের স্বপ্নের ‘টি-টোয়েন্টি লীগ’
স্পোর্টস রিপোর্টার
১১ ডিসেম্বর ২০২৪, বুধবারবাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল), দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে একমাত্র নিয়মিত টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। তবে এখানে একাদশে খেলার সুযোগ পান মাত্র ৭ জন দেশি ক্রিকেটার। বাকি ৪ জন খেলেন বিদেশি। যে কারণে প্রতি বছর এই টুর্নামেন্টে দেশের অনেক ক্রিকেটারেরই খেলার সুযোগ হয় না। প্রতিভা থাকার পরও অনেকের সুযোগ হয় না খুব বেশি ম্যাচ খেলার। দলগুলো প্রায় নির্ভর করে বিদেশি পারফর্মারদের ওপর। তাই দীর্ঘদিনের দাবি ছিল শুধু দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি আলাদা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের। এমন নয় যে সেই চেষ্টা হয়নি। তবে এবার সেই স্বপ্ন একটি নতুন রূপে ডানা মেলতে যাচ্ছে। জাতীয় ক্রিকেট লীগে (এনসিএল) পরিপূর্ণ ভাবে যুক্ত হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক এই টি-টোয়েন্টি লীগ। আজ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গড়াবে এই আসরের প্রথম ম্যাচ। সিলেটের দুই ম্যাচে উদ্বোধনী দিনেই অনুষ্ঠিত চার ম্যাচ।
এনসিএলে টি-টোয়েন্টির আয়োজন অবশ্য এবারই প্রথম নয়। ২০১০ সালে একবার হয়েছিল এটি। তবে পরে আর চালু থাকেনি। ২০১৯ ও ২০২১ ঢাকা প্রিমিয়ার লীগেও ছিল টি-টোয়েন্টি সংস্করণ খেলা হয়েছে। কিন্তু কোনোটাই পায়নি এমন পূর্ণতা। এবার স্পন্সরদের নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু- আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক প্রেজেন্টস এনসিএল টি-টোয়েন্টি পাওয়ার্ড বাই ওয়ালটন নামে। এনসিএলের চার দিনের সংস্করণের আট দলই খেলবে লীগে। সাত বিভাগীয় দল- ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, খুলনা ও বরিশালের সঙ্গে অংশ নেবে ঢাকা মেট্রো। এর আগে ২০১০-এ ছয় দলের জাতীয় লীগের টি-টোয়েন্টির ফাইনালে কিংস অব খুলনাকে হারিয়ে ট্রফি ঘরে তুলেছিল রাজশাহী রেঞ্জার্স। সেবার প্রতি দলে দু’জন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর সুযোগ ছিল। তবে এবার সেই সুযোগ থাকছে না। আসর শুরুর আগে প্রতিটি দলের অধিনায়ক এই আসর নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। রংপুর বিভাগের অধিনায়ক আকবর আলী বলেন, ‘এটা আমাদের অনেক দিনের চাওয়া। বিপিএল’র বাইরে শুধু স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে আরেকটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট অনেক বছর ধরেই চাচ্ছিলাম। যেটা এবার হচ্ছে। অনেক ভালো উদ্যোগ। আশা করি, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্ট হবে। এটা সামনের বিপিএলেও সাহায্য করবে।’ ঢাকার অধিনায়ক নাঈম শেখ বলেন, ‘আমাদের দল সিনিয়র-জুনিয়র মিলে ভালো একটা সমন্বয় আছে। মনে হয় আমার দলের বোলিং আক্রমণ খুবই ভালো। আমরা চাচ্ছিলাম বিপিএল’র আগে এরকম একটা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট হোক। তো এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্ট।’ এই আসর দিয়ে মাঠে ফিরছেন তামিম ইকবাল। তিনি খেলবেন চট্টগ্রামের হয়ে। এই দলের অধিনায়ক ইয়াসির আলী। দলে তামিমের থাকাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘তামিম ইকবালের মতো একজন সিনিয়র ক্রিকেটার থাকা একটা বুস্টআপ। তিনিও চাইবেন সেরাটা যেন দিতে পারেন। তার উপস্থিতি তরুণ ক্রিকেটারদের জন্যও অনেক বড় অনুপ্রেরণা।’ বরিশালের অধিনায়ক সোহাগ গাজী মাঠে সেরাটা দিতে মুখিয়ে আছেন, ‘মাঠের ক্রিকেট আসলে যারা ভালো খেলবে, তাদের কাছেই ফল যাবে।’ এবার বিসিবি’র আশা, এখন থেকে নিয়মিত এনসিএল টি-টোয়েন্টি আয়োজনের মাধ্যমে বিপিএলে তো বটেই, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও ভালো করার জন্য নিজেদের তৈরি করতে পারবেন দেশের ক্রিকেটাররা। তবে সেটি মূলত দেশি-বিদেশির ক্রিকেটারদের মিলিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি আসর। স্থানীয় ক্রিকেটারদের যথাযথ চর্চায় রাখা, টি-টোয়েন্টিতে নতুন প্রতিভা তুলে আনার জন্য অন্তত আরেকটি নিয়মিত টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের দাবি ছিল অনেক দিনের। সেই দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান