বিশ্বজমিন
আকস্মিক ট্রাম্প-ট্রুডো নৈশভোজ
মানবজমিন ডেস্ক
(১ সপ্তাহ আগে) ৩০ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৭:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ আপডেট: ৪:০৩ অপরাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকিতে তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে ফ্লোরিডা গিয়ে উপস্থিত হন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। শুক্রবার ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের অবকাশযাপন কেন্দ্র মার-এ-লাগোতে তাদের নৈশভোজ হয়। ট্রাম্প শুধু কানাডার পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকিই দিয়েছেন এমন নয়। একই হুমকি আছে মেক্সিকোর বিরুদ্ধেও। এর ফলে ট্রাম্পের সঙ্গে ট্রুডোর সাক্ষাতের বিষয়টি প্রকাশ পায় এ সপ্তাহান্তে আকস্মিকভাবে। তবে ট্রাম্প যে শুল্ক বাড়ানোর হুমকি দিয়েছেন তাতে মার্কিন ভোক্তাদেরকে কঠোর অবস্থায় পড়তে হবে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে আরো বলা হয়, শুক্রবার দিনের শেষের দিকে মার-এ-লাগোতে উপস্থিত হওয়ার আগে ওয়েস্ট পাম বিচে একটি হোটেলে হাস্যোজ্জ্বল ট্রুডোকে দেখা যায়। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর আগেই উচ্চ পর্যায়ের যেসব অতিথির সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়েছে- ট্রুডো তাদের অন্যতম। রিপোর্টে বলা হয়, আকস্মিক ফ্লাইট ট্র্যাকারগুলো ট্রুডোকে বহনকারী বিমান দেখতে পায়। পরে কানাডা সরকারের একটি সূত্র বলেছেন, দুই নেতা এ রাতে একসঙ্গে নৈশভোজ করেছেন। এর আগে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু বড় বাণিজ্যিক অংশীদারকে আতঙ্কিত করে তোলেন ট্রাম্প। তিনি ঘোষণা দেন- মেক্সিকো ও কানাডা থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে তিনি শতকরা ২৫ ভাগ এবং চীন থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শতকরা ১০ ভাগ শুল্ক আরোপ করবেন। মাদক ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে ‘আগ্রাসন’ বন্ধে যথেষ্ট করছে না বলে তিনি দেশগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। মাদক বলতে তিনি বিশেষত ফেনটানাইলের কথা বুঝিয়েছেন এবং নিবন্ধনহীন অভিবাসীদের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। ওদিকে বুধবার টেলিফোনে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম। তবে তাদের কথোপকথন ছিল ব্যাপকভাবে ভিন্ন। ট্রাম্প দাবি করেন মেক্সিকোর বামপন্থি প্রেসিডেন্ট মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসন বন্ধে একমত হয়েছেন। কার্যত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে তিনি এটা করবেন। কিন্তু পরে প্রেসিডেন্ট শেইনবাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসনবিরোধী নীতিকে তিনি সমর্থন করেন। এরপর শুল্ক বাড়ানো নিয়ে আর কোনো কথা হয়নি। ফলে বাণিজ্যিক লড়াইয়ের বিষয়টি কমে গেছে। একই দিনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করেন যে, ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির ফলে অটোয়া ও মেক্সিকো সিটির সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বলেন, আমি মনে করি এর পাল্টাপাল্টি ফল আছে। উল্লেখ্য, গত বছর কানাডা থেকে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়েছে তার তিন-চতুর্থাংশ গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই বাণিজ্যের ওপর কানাডায় প্রায় ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান। ওদিকে কানাডা সরকারের একটি সূত্র এএফপিকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে কানাডাও পাল্টা ব্যবস্থা বিবেচনা করবে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ট্রাম্পের শুল্ক হুমকি ভবিষ্যত বাণিজ্যিক সমঝোতার পথকে উন্মুক্ত করতে পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো এমন দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।