বাংলারজমিন
সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচন দিতে বললেন খসরু
স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে
১০ নভেম্বর ২০২৪, রবিবারবিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলেছেন, ‘যে কয়েকটি সংস্কার, জাতীয় ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে হবে সেগুলো সহসা করে ফেলুন। এরপর নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। এবং যে সংস্কারে ঐকমত্য হবে না সেটা বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিবে আগামী দিনে। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ হবে তারা সিদ্ধান্ত নিবে, সরকার সিদ্ধান্ত নিবে। এর বাইরে অনির্বাচিত কারও কোনো অধিকার নেই। জাতীয় ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে যতটুকু হবে সহসা সমাধান করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। শনিবার ঐতিহাসিক ‘সিপাহী-জনতার বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আমীর খসরু বলেন, জাতি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি দেখতে চায়। তাদের নির্বাচিত সরকার দেখতে চায়। এ কারণেই ঐক্য ঘটানো হয়েছে। ২৩ তারিখে একদফা, আগে তো একদফা ছিল না। কেন একদফা জানেন? আমরা বলেছি, একদফার মাধ্যমে শেখ হাসিনার যদি পতন না হয় তাহলে আপনারা যত দফা দিবেন কোনো দফা কাজে আসবে না। তারপর আপনারা একদফায় আসছেন; আমরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আর শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। এটাই সত্য, এটা বুঝুন।’
খসরু বলেন, ‘৭ই নভেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সিপাহী জনতার সহযোগিতায় সক্রিয় অংশগ্রহণে বাংলাদেশের মানুষ জিয়াউর রহমান সাহেবকে মুক্ত করেছিলেন। বাংলাদেশে এক নতুন ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে ৭ই নভেম্বর। শেখ মুজিবুর রহমান, বাকশাল, আওয়ামী লীগ, ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। ৭ই নভেম্বর ছিল স্বাধীনতা পরবর্তী, ৭ই নভেম্বর একদলীয় বাকশাল, গণতন্ত্র জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নেয়া, একদলীয় বাকশাল সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া, দেশের হাজার হাজার মানুষকে মুক্তিযুদ্ধসহ হত্যাকাণ্ড, ভয়ভীতির পরিবেশ, দুর্ভিক্ষ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি একটি ভাবনা, আকাঙ্ক্ষা, চেতনা ছিল; সেটাকে ধূলিসাৎ করে আওয়ামী বাকশালীরা তখন বাংলাদেশকে পতিত দেশ হিসেবে পরিণত করেছে।’
আমীর খসরু বলেন, ‘তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, এ সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। তাদের আমরা সমর্থন দিবো, তাদের আমরা শেষ পর্যন্ত সমর্থন দিবো। আমরা এ সরকারকে যখন আসামাত্রই সমর্থন দিয়েছি, এ সরকারকে আমরা এখনো সমর্থন দিচ্ছি। আমরা চাই এ সরকার গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে আনবে। তার জন্য আমরা সকলে মিলে কাজ করবো। আমাদের ঐক্য নষ্ট করা যাবে না। আওয়ামী লীগ উঁকিঝুঁকি মারছে, ফ্যাসিস্টরা উঁকিঝুঁকি মারছে, এই ঐক্য ভাঙা যাবে না। তারেক রহমান যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তা অটুট থাকতে হবে। অটুট রেখে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে যেতে হবে, নির্বাচনের দিকে যেতে, নির্বাচিত সরকারের দিকে যেতে হবে। যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘৭ই নভেম্বর ছিল সিপাহী-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে, শহীদ জিয়াকে মুক্ত করার মাধ্যমে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল। সেই বাংলাদেশ কি হলো বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, স্বাধীনতার বাংলাদেশ, আইনের শাসনের বাংলাদেশ, জীবনের নিরাপত্তার বাংলাদেশ, স্বাধীন-সার্বভৌম মাথা উঁচু করার বাংলাদেশ। সেই ধারা অব্যাহত রেখে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে স্বৈরাচারদের পতন ঘটিয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচারদের বিদায় করে আবারো শুধু বহুদলীয় গণতন্ত্র নয়; সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছে। আবারো বাংলাদেশে মুক্তবাজার উন্মুক্ত হয়ে ব্যবসায়ীরা-উদ্যোক্তারা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে ফেলেছিল। যেই অর্থনীতির ভিত্তি জিয়াউর রহমান সৃষ্টি করেছিলেন; সেই অর্থনীতির ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।’