খেলা
‘ওপেনিং’ ব্যর্থতার শিকল ভাঙতে চান জাকির
স্পোর্টস রিপোর্টার
৪ নভেম্বর ২০২৪, সোমবারবাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য ‘ওপেনিং’ বড় চিন্তার নাম। বিশেষ করে তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েসদের বিদায়ের পর থেকে উদ্বোধনী ব্যাটারদের ওপর ভরসা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই এই বেহাল দশা। ব্যতিক্রম দুই একটা ইনিংসকে আলাদা করে রাখলে ওপেনিংয়ে সবচেয়ে বড় দুর্বলতা ধারাবাহিকতায়। যদি গেল ১২ মাসে ১০ টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশ দল। সেখানে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ জুটির অবদান সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসানের। এক ইনিংসে করেছেন ৬২ রান ভারতের বিপক্ষে চেন্নাইতে। অন্যদিকে ওয়ানডেতে ব্যর্থতার একই চিত্র, গেল এক বছরে ৮ ম্যাচে ওপেনারদের সর্বোচ্চ জুটিতে ৭৬ রান করেছেন লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। এই দুই ফরম্যাটে গেল এক বছরে নেই শতরানের কোনো জুটি। অন্যদিকে কিছুটা ব্যতিক্রম টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। গেল এক বছরে ২৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শতরানের দুটি জুটি এসেছে। দুটিতেই আছেন সৌম্য সরকারের সঙ্গে তানজিদ হাসান। গেল এক বছরে যত ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ তার অন্যতম কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। বিশেষ করে ওপেনাররা বড় কোনো জুটি আনতে ব্যর্থ ছিলেন। টপ অর্ডারও নিজেদের অবদান রাখতে পারেনি সঠিকভাবে। তবে বারবার দলের রান না হওয়ার পেছনে ওপেনারদের দায়টাই বড় করে দেখা হয়েছে। এমন বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়েছেন দলের নয়া ওপেনার জাকির হাসানও। তিনি বলেন, ‘আপনি যেটা বলেছেন, এটা ভেরি ট্রু। যে আমরা ভালো শুরু দিতে পারছি না। টেস্টেও যেমন আমরা ভালো শুরু দিতে পারিনি কয়েকটা ম্যাচে। যার কারণে আমরা একটু ভুগেছি।’ তবে ভুল নিয়ে পড়ে থাকতে চান না জাকির। যত তাড়াতাড়ি এখান থেকে বের হওয়া যায় ততই দলের জন্য মঙ্গল বলে মনে করেন তিনি। কারণ একের পর এক সিরিজ এখন টাইগারদের সামনে। জাকির বলেন, ‘একইসঙ্গে, ওটা (ওপেনিং ব্যর্থতা) নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না যেহেতু খুব তাড়াতাড়ি সিরিজগুলো আসছে। নেক্সট সিরিজে ফাইন্ড আউট করার চেষ্টা করছি সবাই সবার জায়গা থেকে যে কীভাবে উন্নতি করা যায়। কীভাবে ওগুলো ওভারকাম করা যায়। প্রত্যেকটা সিরিজে ভালো একটা জুটি গড়া, ওপেনিং বা টপ অর্ডার থেকে ভালো একটা অবস্থায় দেয়া টিমকে; যেন মিডল অর্ডারদের জন্য আরও সহজ হয়।’ দলের ওপেনিং দিয়ে শুরু আর চিন্তাটা গোটা দলের ব্যাটিংয়ের ওপর প্রভাব ফেলে। শেষ চার টেস্টে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দলের ব্যাটাররা আগাগোড়া ব্যর্থ। দুই সিরিজেই হয়েছে হোয়াইটওয়াশ।
ঢাকা টেস্টে না থাকলেও চট্টগ্রামে একাদশে ছিলেন জাকির হাসান। যদিও দুই ইনিংসে ২ ও ৭ রান করে আউট হন। এখন অবশ্য তার সামনে ভিন্ন মিশন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের স্কোয়াডে আছেন জাকির। তবে ওপেনারদের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে প্রশ্নে তাকে ফিরতে হয়েছে টেস্টেই। এখন তাদের লক্ষ্য ভুলগুলো খুঁজে বের করে শুধরে নেয়া। তিনি বলেন, ‘পরের সিরিজে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি সবাই সবার জায়গা থেকে যে, কীভাবে উন্নতি করা যায়। প্রত্যেকটা সিরিজে ভালো একটা জুটি গড়া, ওপেনিং বা টপ অর্ডার থেকে ভালো একটা অবস্থায় নেয়া দলকে; যেন মিডল অর্ডারদের জন্য আরও সহজ হয়। ’ টেস্টে ক্যারিয়ারের শুরুটা বেশ ভালো হয়েছিল জাকিরের। কিন্তু পরে সেভাবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা এই ব্যাটারের কাছে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও প্রত্যাশা ছিল বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের মাঝখানেও একটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন জাকির। তিনি বলেন, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট তো অবশ্যই একটা ভিত আমাদের। যেটা খেলেই আসতে হবে। আমার হয়তো একটু সময় ছিল, এ কারণে আসতে পেরেছি। যদি আপনি ওভাবে মেজারমেন্ট করেন যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে আসলেই যে ভালো হবে, তা না। আমি শুরু ভালো করেছি। একটা সময় হয়তো মানুষের এদিক-সেদিক যায়। একইসঙ্গে, আমার ওটা নিয়ে পড়ে থাকলেও হবে না। ওই জিনিস ওভারকাম করে কীভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিক হওয়া যায় ওদিকে মনোযোগ দিতে হবে। ’ দলের সঙ্গে নতুন কোচ ফিল সিমন্স যোগ দিয়েছেন। কাজও শুরু করেছেন তবে নিজের প্রথম মিশনে ড্রেসিং রুমে বসে বসে শিষ্যের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখেছেন। নয়া কোচ নিয়ে জাকির বলেন, ‘উনি সিরিজে ?খুব কম সময় নিয়ে এসেছেন। উনি একটু পর্যবেক্ষণও করছেন কোন খেলোয়াড় কীভাবে এপ্রোচ করে। কিছু ছোট ছোট তথ্য ম্যাচের মাঝখানে দিয়ে দিয়েছেন। আশাকরি আরও বিস্তারিত তথ্য পাবো।’