খেলা
বিদায় ‘ক্লে কোর্টের রাজা’
স্পোর্টস ডেস্ক
১১ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার
বিদায় বলে দিলেন রাফায়েল নাদাল। র্যাকেট হাতে আর টেনিস কোর্টে জাদু দেখাবেন না এ স্প্যানিয়ার্ড লিজেন্ড। চোটের জন্য দীর্ঘদিন তিনি কোর্টের বাইরে ছিলেন। মৌসুম শেষে টেনিস থেকে বিদায় নেয়ার কথা ছিল নাদালের। বৃহস্পতিবার ভিডিও বার্তায় ঘোষণা দিলেন, ডেভিস কাপ খেলেই বিদায় নিচ্ছেন তিনি। চোটে চোটে জর্জরিত হয়েছেন বহুবার। বয়স ৩৫ পেরিয়ে যাওয়ার পর চোট সারিয়ে আগের মতো কোর্টে ফিরতে পারেননি। অবশেষে ৩৮ বছর বয়সে টেনিস কোর্টকে বিদায় জানানোর কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললেন রাফা। সবমিলিয়ে ৯৫টি একক শিরোপা জয়ী নাদাল ভিডিও বার্তায় নিজের বিদায়ের কথা জানিয়ে বলেন, ‘এবার সময় এসেছে টেনিস কোর্ট থেকে বিদায় নেওয়ার। শারীরিক কারণেই সরে দাঁড়াতে হচ্ছে কোর্ট থেকে।’ বিদায়লগ্নে যে ভিডিওবার্তা দিলেন ভক্তদের জন্য, তাতে বেশ আবেগতাড়িত হয়ে যান তিনি। কান্না চেপে রাখেন। কয়েকদিন আগে রজার ফেদেরার বলেন, ‘রাফাকে আবারও কোর্টে দেখতে মুখিয়ে আছি।’ কিন্তু আশঙ্কাটা ছিলই, যে আদৌ তাকে দেখা যাবে কিনা। ফুটবলে লিওনেল মেসি-ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যেমন, তেমনই টেনিসে রজার ফেদেরার-নাদাল। আধুনিক টেনিস বিশ্বের সব থেকে জনপ্রিয় এই দুই নায়ক যখন বিদায় নিচ্ছেন তখন কার্লোস আলকারাজ নামের একটি নতুন সূর্য উঠছে স্পেনে। নাদালের নিজ দেশে।
সামনের মাসেই ডেভিস কাপ। সেই আসরে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন রাফায়েল নাদাল। তার বিদায়ের কথা জানিয়ে নাদাল বলেন, ‘আমি পেশাদার টেনিস থেকে অবসর নিচ্ছি। বাস্তবতা হচ্ছে, কয়েকটি বছর খুব কঠিন কেটেছে। বিশেষ করে শেষ দুই বছর।’ আসলেই শেষ দু’বছর তার জন্য কঠিন ছিল। বারবার গিয়েছেন ছুরির নিচে। অপারেশনে অপারেশনে তার শরীর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারছিল না। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৯ ম্যাচ খেলে জিতেছেন ১২টিতে। ৭ ম্যাচে হার ছিল রাফার।
২০২০-এর ইউএস ওপেন থেকে শুরু করে গত চার বছরের কিছু বেশি সময়ে যে ১৭টি গ্র্যান্ড স্লাম হয়েছে, তার ৯টিতেই চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন তিন। এর মধ্যে ২০২২ সালে তিনি আবার কোর্টে আসেন। জিতেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন আর ফ্রেঞ্চ ওপেন । কিন্তু এরপর আবার সেই চোট। গত দুই বছরে ৮ গ্র্যান্ড স্লামের ৬টিতেই ছিলেন না তিনি। নাদাল এই কয়েক বছরের কথা আলাদা করে বলেন, ‘বিশেষ করে সর্বশেষ দুই বছর কঠিন গেলো। এ সময়ে কোনো অস্বস্তি ছাড়া খেলতে পেরেছি বলে মনে পড়ছে না।’
১৯ থেকে ২৪শে নভেম্বর হতে যাওয়া ডেভিস কাপ ফাইনালের প্রসঙ্গ টেনে ভিডিওতে নাদাল বলেন, ‘অনেক লম্বা একটা ক্যারিয়ার, যেটাতে কখনো যা কল্পনা করিনি তার চেয়েও বেশি সাফল্য পেয়েছি, এমন ক্যারিয়ারের শেষ টানার জন্য এটিকেই ভালো সময় বলে মনে হয়েছে।’ ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা নাদালের চেয়ে বেশি শিরোপা আছে শুধু একজনের। নোভাক জোকোভিচের হাতে ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যাম। রজার ফেদেরার ২০ গ্র্যান্ড স্লাম নিয়ে তিন নম্বরে আছেন। সব মিলিয়ে জোকোভিচের পেছনে হলেও শুধু ক্লে কোর্টের হিসেবে গেলে নাদালের ধারেকাছেও কেউ নেই। ‘কিং অব ক্লে’ তো আর এমনি এমনি বলা হয় না তাকে। ১৪টি ফ্রেঞ্চ ওপেন শিরোপা উঠেছে তার হাতে। নাদালকে নিয়ে জোকোভিচ গত ৩০শে মে বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে খেলেছি নাদাল তাদের মধ্যে গ্রেটেস্ট’। স্পেনকে চারবার ডেভিস কাপ জেতানো নাদাল এবারও কী শেষ হাসি হাসবেন? ২৪শে নভেম্বর স্পেনের পালেসিও দে ডেপোর্টেস হোসে মারিয়া মার্টিন কার্পেনা ভেন্যুতে হবে ডেভিস কাপের ফাইনাল। আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের লড়াই নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে। বাকি লাইনআপ ইতালি-আর্জেন্টিনা, যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া ও জার্মানি-কানাডা।