খেলা
সাকিব শূন্যতায় গোয়ালিয়রের ইতিহাসে বাংলাদেশ
স্পোর্টস রিপোর্টার, গোয়ালিয়র (ভারত) থেকে
৬ অক্টোবর ২০২৪, রবিবার
শতবছরের ইতিহাসের শহর গোয়ালিয়র। এবার তার অংশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশও। শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দেশ। হ্যাঁ, মাঠের নামের সঙ্গেও জড়িয়েছে এখানকার ইতিহাস। এই সিন্ধিয়ার হাত ধরেই গোয়ালিয়রে আধুনিক ক্রিকেটের যাত্রা। যিনি নিজেও একজন রাজা, রাজনীতিবিদ। এই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হতে যাচ্ছে এ স্টেডিয়ামের। শহর থেকে দূরে পাহাড়ে ঘেরা এই মাঠে প্রথম ম্যাচ আয়োজনের জন্য মুখিয়ে আছে মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন (এমপিসিএ)। তবে এমন দিনে বাংলাদেশ দল মাঠে নামবে তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের এক শূন্যতা নিয়েও। এই সিরিজের আগে হঠাৎ করেই জানিয়ে দিয়েছেন আর টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ফরম্যাটে খেলবেন না সাকিব আল হাসান। যার সঙ্গে জড়িয়েছে দেশের ক্রিকেটের সুখ-দুঃখের ইতিহাসও। মাঠে নামার আগেই প্রশ্নটা ছুটে গেল দলের টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট তাওহীদ হৃদয়ের দিকে। অবশ্য এই তরুণ জানিয়ে দিলেন সবাইকে একদিন যেতে হবে- এটাই বাস্তবতা, তবে শূন্যতা তো থাকবেই। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চাপ সবসময়ই থাকে। যদি সেটা মাথায় থাকে তাহলে তো পারফর্ম করা যাবে না। আমাদের প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে, ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। আর সাকিব ভাই নেই। অবশ্যই আমরা সাকিব ভাইকে মিস করবো। কিন্তু এখান থেকে একদিন না একদিন সবাইকে যেতেই হবে। আশা করি আমরা সাকিব ভাইয়ের শূন্যতা ভালোভাবে ওভারকাম করবো।’
৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামটির অভিষেকের সাক্ষী হতে চান এ অঞ্চলের সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরাও। আজ প্রথম ম্যাচের টিকিট ছাড়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গেছে। এই শহরে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়েছে ২০১০ সালে। দীর্ঘদিন পর গোয়ালিয়রে ক্রিকেট ফেরায় স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি রোমাঞ্চ আয়োজকদের মধ্যে। অন্যদিকে বাংলাদেশের চিন্তায় রয়েছে গোয়ালিয়রের উইকেট। এ নিয়ে তাওহীদ হৃদয় জানালেন তারা উইকেট সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। গেল দুইদিনের অনুশীলন তাদের বড় সাহায্য করেছে এই ধারণা পেতে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে দুইদিন অনুশীলন করলাম। উইকেট কিছুটা মন্থর ও নিচু। আমরা মাঠকর্মীদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছি। ঘরোয়া ক্রিকেটের কিছু ম্যাচও হয়েছে এখানে। মনে হচ্ছে উইকেটটা মন্থরই হবে। আমরা আমাদের মতো খেলার চেষ্টা করবো।’
বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব নেই! স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে তার জায়গায় একাদশে কে আসবেন! তিনি না থাকলে যে তার অভাব পূরণ করতে হয় দু’জন ক্রিকেটারকে দিয়ে। লাগে একজন বাড়তি বোলার আর ব্যাটার। তার জায়গায় খেলানো হবে জাকের আলী অনিককে। এরপর থাকবেন অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ. অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ওপেন করবেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। এরপর দলের হাল ধরবেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তারপরই হৃদয় হাল ধরবেন মিডল অর্ডারের। আর পেস আক্রমণে তাসকিন আহমেদের সঙ্গী হতে পারেন মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব। তবে সিনিয়র সাকিবের যে অভাব তা যে অপূরণীয়! যদিও হৃদয় মনে করেন দলে সুপারস্টার আসবে তবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সুপারস্টার তৈরি হওয়ার বিষয়টা আমি বলতে পারবো না। এটা সময়ই বলে দেবে। দিন শেষে আগে পারফর্ম করাটা ম্যাটার করে। পারফর্ম যদি করি, দলের রেজাল্ট যদি ভালো হয় দেখা যাবে এখান থেকেই ইনশাআল্লাহ্ ভবিষ্যতে আসবে অনেকেই; আসার সম্ভাবনা আছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফর্ম ছাড়া আসলে আল্টিমেটলি কোনো কিছু চিন্তা করা যায় না। সবাই পারফর্ম করতে চায় এবং চেষ্টা করবো ভালো কিছু করতে।’ অন্যদিকে ভারতের কাছে টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাজেভাবে। যেখানে চোখে পড়েছে দলের চরম ব্যাটিং ব্যর্থতা। আর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও তাদের মাটিতে যে সহজ লড়াই হবে- এমনও নয়। তাই তাদের হারানোর চিন্তা না করে নিজেদের নিয়ে ভাবনাটা হৃদয়ের। তিনি বলেন, ‘হতে পারে। এভাবে আমরা চিন্তা করি না। আমরা যখন মাঠে খেলতে নামি তখন প্লেয়ার কে আছে কে নাই, এগুলো ওভাবে মাথায় কাজ করে না। আমরা সবসময় আমাদের দিকটা ফোকাস করি। আমাদের যে প্রক্রিয়া আছে সেগুলো মেইনটেইন করার চেষ্টা করি। সুযোগ আছে হারানোর, এমন না যে তাদের মতো বড় টিমকে আমরা হারাইনি। বড় টিম ছোট টিম বলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কিছু নেই। আমার কাছে মনে হয় পার্টিকুলার ডে-তে যে ভালো করবে সেই (জিতবে)।’