খেলা
বাফুফে নির্বাচন
সঙ্গীহারা রুহুল আমিন প্রার্থী হবেন তো!
স্পোর্টস রিপোর্টার
৫ অক্টোবর ২০২৪, শনিবারতাবিথ আউয়াল-রুহুল আমিন
রাজনৈতিক পালাবদলে কাজী সালাউদ্দিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি পদে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেয়ার পরপরই ভোটের মাঠে নামেন তরফদার রুহুল আমিন। ঘটা করে এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থিতা ঘোষণা দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে তাকে সমর্থন দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক। এর পর তাবিথ আউয়াল যখন সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় বিএনপি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তরফদার রুহুল আমিনের পাশে থাকা আমিনুল হকও চুপ হয়ে যান। এরইমধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিবের পদ হারিয়েছেন আমিনুল। গুঞ্জন আছে তরফদারের পক্ষ নেয়াতেই পদ হারাতে হয়েছে তাকে। তবে এসব নিয়ে এখন কোনো কথাই বলতে চান না রুহুল আমিন। অপরদিকে বিএনপির হাইকমান্ডের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া তাবিথ নিজের রানিংমেট খুঁজছেন। যতটুকু জানা গেছে, সিনিয়র সহসভাপতি পদে নির্বাচন করবেন বাফুফের বর্তমান সহসভাপতি ইমরুল হাসান। সহ-সভাপতি পদে তাবিথ আউয়াল খুঁজছেন করপোরেট ব্যক্তিত্বদের। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তাবিথ। কিন্তু ফুটবলের নোংরা রাজনীতির কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে বাফুফেতে আসতে চাচ্ছেন না। গত কয়েক বছর ফুটবলের পেছনে শতকোটির ওপরে ব্যয় করা তরফদার রুহুল আমিনের একটা গ্রহণযোগ্যতা আছে ফুটবলাঙ্গনে। কিন্তু রাজনৈতিক মেরুকরণের কারণে তার বাফুফে’র সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়া দিনকে দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে গত সরকারের বড় পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তরফদার রুহুল আমিন। ছিলেন শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের উপদেষ্টা। ছিলেন সংগঠনটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক।
প্রতিবছর এক অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে বসার জন্য ১০০টি ল্যাপটপ দিতেন তিনি। তার অর্থায়নে টানা তিনবার চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। আওয়ামী লীগের সাবেক হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, সাবেক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক সাংসদ কয়েস চৌধুরী ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মাধ্যমে প্রায় হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার অভিযোগও আছে তরফদারের বিরুদ্ধে। সেই তরফদার তাবিথের আগমন ও ফুটবল অঙ্গনের সমালোচনার কারণে ধীরে চলো নীতিতে হাঁটছেন। এদিকে তাকে সমর্থন দেওয়া আমিনুল হককেও ঠিক আগের মতো জোরালোভাবে তরফদারের পক্ষে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এই তারকা দাবি করেছেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে দুই জনের (তাবিথ ও তরফদার) কাউকে সমর্থন দেওয়া হয়নি। ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের নেতাদেরও আগের মতো পাশে দেখা যাচ্ছে না রুহুল আমিনের। যদিও চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন তিনি। গুঞ্জন আছে তাবিথ আউয়ালের প্যানেল থেকে তার ছেলে রুহুল সাইফ সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন। এসব নিয়ে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি তরফদারের। এদিকে সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের সদস্য সচিব সাব্বির আহমেদ আরিফও। দ্বিতীয় দফা এই পদে প্রার্থী হতে পারেন আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিকও। তবে পলাতক থাকায় নির্বাচনের মাঠে নাও দেখা যেতে পারে দুই সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহিকে। এদিকে কাদের নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার করবেন তাবিথ আউয়াল তা পরিষ্কার নয়। ব্যবসায়িক কাজে এই মুহূর্তে দেশের বাইরে থাকা বাফুফের সাবেক এই সহ-সভাপতি বলেন, ‘আগে দেখবো কারা নির্বাচন করতে আগ্রহী। আমি তাদের মধ্য থেকে সেরাদের বেছে নিয়ে প্যানেল সাজাবো।’ তাবিথ পরিষ্কার না করলেও শোনা যাচ্ছে তার প্যানেল থেকে নির্বাচন করতে পারেন বর্তমান সদস্য বাফুফের মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, সত্যজিত দাস রুপু, আমের খান, টিপু সুলতান, ইমতিয়াজ আহমেদ সবুজ। এদের মধ্যে টিপু সুলতান আবার সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নতুনদের মধ্যে নির্বাচন করতে পারেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার গোলাম গাউস। এবার গাউস নারায়ণগঞ্জ থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন।