বাংলারজমিন
ঝিনাইদহে একই ঘটনায় পুলিশের দু’রকম প্রতিবেদন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবারগত ২রা জানুয়ারি ঝিনাইদহ সদর থানার ডাকবাংলা বাজারের কাজী সড়কের মৃত তাহাজ উদ্দিনের ছেলে কাজী ফারুক ও তার ছোট বোন কাজী শাহানাজের বাড়িতে হামলা চালিয়ে করা হয় লুটপাট। এ সময় হামলায় আহত হয় ২ ভাইবোন। এ নিয়ে ভুক্তভোগী সহোদর আদালতে মামলা করলে তদন্তের দায়িত্ব পড়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর। ঘটনার সত্যতা থাকলেও আসামিদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা দিয়েছেন মিথ্যা তথ্য। ঘটনায় কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি বলে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন এসআই সোহাগ। অবশ্য আরেক পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার দিনে যে ঘটনা ঘটেছে তার বিস্তারিত প্রতিবেদন দিয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এসআই সোহাগ হোসেন আসামিদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তদন্তে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে বাদীপক্ষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২রা জানুয়ারি ডাকবাংলা বাজারের কাজী সড়কের মৃত তাহাজ উদ্দিনের ছেলে কাজী ফারুক ও তার ছোট বোন কাজী শাহানাজের ওপর ওই এলাকার সন্ত্রাসী আব্দুল বারী, আবুল কালাম, মোমিন, সালাম, কাজী মালেকসহ বেশকিছু দুবৃর্ত্তরা হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা তাদের দু’জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর ৪ তারিখে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় কাজী ফারুক। এ ঘটনায় তারা আদালতে মামলা দায়ের করে। কাজী ফারুকের মামলার তদন্ত করে ডাকবাংলা ক্যাম্পের এসআই সোহাগ হোসেন ও কাজী শাহানাজের মামলার দায়িত্ব পায় ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই শামিম হোসেন। কিন্তু মামলার তদন্তে এসআই সোহাগ আসামি পক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে ওইদিন শাহানাজের বাড়িতে কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে উল্লেখ করেন। তবে এসআই সামিম হোসেন তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন যে, ওইদিন কাজি ফারুখের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী ফারুক বলেন, এসআই সোহাগ আসামিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আমার মামলার মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে। তিনি তদন্তে বলেছেন, ৪ তারিখে বাদীর বাড়িতে গিয়ে তাদের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেই ওইদিন হামলা মারধর ও লুটপাটের কোনো ঘটনা উল্লেখ করেন নাই। সোহাগ যেদিন তদন্ত করেন সেদিন আমি ও আমার বোন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। হাসপাতালে ভর্তির কাগজও আমার কাছে রয়েছে। আমার বোনের মামলায় এসআই সামিম হোসেন তাহলে কীভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। এই দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ সুপারের নিকট জোর দাবি জানান তিনি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এসআই সোহাগ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, যেহেতু দু’টি মামলার তদন্ত দুই কর্মকর্তা করেছেন। তাই যে যা তদন্ত করে পেয়েছেন তাই রিপোর্ট দিয়েছেন। বাদীপক্ষের আপত্তি থাকে তাহলে নারাজি দিলে আবার নতুন করে তদন্ত হবে।