বাংলারজমিন
ফেনীতে নিজাম হাজারী ও আওয়ামী নেতাদের অস্ত্র জমা পড়েনি
ফেনী প্রতিনিধি
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবারফেনী-২ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তার স্ত্রীর নামে থাকা লাইসেন্স করা ৩টি অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি। গতকাল ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) শফিকুর রিদোয়ান আরমান শাকিল বিষয়টি প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। ফেনী জেলা প্রশাসনের এডিএম কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, ফেনীতে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ব্যক্তিপর্যায়ে শটগান, পিস্তল, বন্দুক ও রাইফেলসহ ১০৫টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ১০০টি অস্ত্র নতুন কেনা হয়েছিল। গত ১৫ বছরে বেসামরিক জনগণকে দেয়া বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত ৩রা সেপ্টেম্বর সব ধরনের অস্ত্র জমা দেয়ার সময়সীমা শেষ হয়। সময় শেষের আগে জেলার ৬টি থানায় ৬৬টি, জেলার বাইরে বিভিন্ন থানায় ২৫টি অস্ত্র জমা পড়েছে। এছাড়া দু’টি অস্ত্র জেলা ট্রেজারিতে আগে থেকেই জমা দেয়া ছিল। ইতিমধ্যে মোট ৯৩টি অস্ত্র জমা দেয়া হয়েছে। নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, জমা না পড়া লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও তার স্ত্রীর নামে ৩টি এবং সোনাগাজী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকনের দু’টি অস্ত্র রয়েছে। ফেনী জেলা প্রশাসক মোসাাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, বিগত সময়ে ব্যক্তিপর্যায়ে লাইসেন্স দেয়া অস্ত্রের মধ্য ইতিমধ্যে ৯৩টি ফেনীর ছয়টি থানা ছাড়াও অনেকে দেশের বিভিন্ন থানায় জমা পড়েছে। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ৭টি এখনো জমা পড়েনি। গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর রাত থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধারে মাঠে কাজ করছে যৌথ বাহিনী। এদিকে গত ৫ই সেপ্টেম্বর রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ফেনী শহরের উত্তর সহদেবপুর শামসুল করিম কলোনির গরুর ঘরের পিছন থেকে একটি শটগান ও এক রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। ফেনী মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, অস্ত্রের মালিক না পাওয়া গেলেও স্থানীয় তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র উদ্ধারে সেনাবাহিনী-বিজিবি-র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধার চলমান রয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৪ঠা আগস্ট ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় আওয়ামী লীগের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী। ওই বিদেশি অত্যাধুনিক পাঁচশতাধিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়। ওইদিন ঘটনাস্থলে এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৯জন নিহত হয়।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফেনী মডেল থানায় এ পর্যন্ত ৮টি মামলা দায়ের করেছে নিহতদের স্বজনরা। এ সব মামলায় বিভিন্ন পর্যায়ের অর্ধ শতাধিক জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আসামি হয়েছে। এ সব মামলায় এজাহার নামীয় প্রায় এক হাজার ২০০ জনসহ মোট আসামি হয়েছে ২ হাজার ৯৪১ জন।