বাংলারজমিন
গাজীপুরে কলেজছাত্র হত্যায় কনস্টেবল গ্রেপ্তার
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবারগাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)-এর কোনাবাড়ী থানার পাশে গুলি করে কলেজছাত্র মো. হৃদয় হত্যার ঘটনায় পুলিশের এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার অভিযান চালিয়ে কিশোরগঞ্জের পারাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ওই কনস্টেবল মো. আকরাম হোসেন (২২) গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত। শুক্রবার রাতে কিশোরগঞ্জের পারাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহত হৃদয় (২০) টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস করে অটোরিকশা চালাতেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কোনাবাড়ী সড়কের কোনাবাড়ী এলাকায় গত ৫ই আগস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন হৃদয়। এ সময় কয়েকজন পুলিশের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে হৃদয় রাস্তার পাশে অবস্থান নেন। ওই সময় শিল্প পুলিশে কর্মরত কিছু পুলিশ সদস্য কোনাবাড়ী এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। তারা হৃদয়কে রাস্তার পাশ থেকে ধরে নিয়ে চড়থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে পুলিশ কনস্টেবল আকরাম অতি উৎসাহী হয়ে তার পেছন দিক থেকে শরীরে ঠেকিয়ে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই হৃদয় নিহত হয়। ওই ঘটনায় নিহতের ফুফাতো ভাই মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোনোবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জন সন্ত্রাসী ছাত্রদের ওপর হামলা চালান। এ সময় হৃদয় প্রাণভয়ে পাশের একটি দোকানে আশ্রয় নেন। এর কিছুক্ষণ পরই অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা মো. হৃদয়কে দোকান থেকে টেনে হিঁচড়ে রাস্তার ওপরে নিয়ে যান। পরে তাকে পুলিশ সদস্যরা ঘেরাও করে আগ্নেয়াস্ত্র পেটে ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে লাশ গুম করেন। যা লোকজন ভিডিও ধারণ করে। মামলায় ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়। ওই ছাত্রকে হত্যার ঘটনায় ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ৬ জন পুলিশ ওই ছাত্রকে ধরে নিয়ে পাশের রাস্তায় নিয়ে যান। তারা চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেন। এর মধ্যে থেকে এক পুলিশ সদস্য হৃদয়ের মুখে চড়থাপ্পড় মারেন। এরপর এক পুলিশ সদস্য তার পেটে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। এতে তাৎক্ষণিক তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং আশপাশে রক্তে ছেয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, আরও পাঁচ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। লাশ সেখানে কিছু সময় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কোনাবাড়ী জোনের সহকারী কমিশনার সুবীর কুমার সাহা গণমাধ্যমকে জানান, অভিযুক্ত কনস্টেবল আকরামকে শনিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।