শেষের পাতা
বৈষম্য অবসানের দাবি
রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবস্থান
স্টাফ রিপোর্টার
১৩ আগস্ট ২০২৪, মঙ্গলবারবৈষম্য অবসানের দাবিতে এবার রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার বেলা ১১টা থেকে তারা ১১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। একপর্যায়ে কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম আলম ভূঁইয়াসহ তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকের পর কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম আলম ভূঁইয়া মানবজমিনকে বলেন, আমরা এর আগেও কয়েকবার রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর চিঠি দিয়ে আমাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বৈষম্যের নানা বিষয় তুলে ধরেছি। গত ৮ই আগস্ট আমরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। আজও দিয়েছি। রেজিস্ট্রার জেনারেল আমাদের দাবিসমূহ প্রধান বিচারপতির কাছে তুলে ধরবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে:
১. বিভিন্ন বাসাবাড়িতে দাসপ্রথা প্রচলন রয়েছে। বাসাবাড়ি থেকে দাসপ্রথা বিলুপ্তির লক্ষ্যে সেখান থেকে রোববারের মধ্যে সকল কর্মচারীকে withdraw করে অফিসে পোস্টিং দিতে হবে এবং ভবিষ্যতে কোনো কর্মচারীকে বাসাবাড়িতে পোস্টিং দেয়া যাবে না।
২. প্রশাসনে জুডিশিয়াল অফিসার কমিয়ে ৫ জন করতে হবে এবং প্রমোটি অফিসার পদ বাড়াতে হবে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে একই পদে থাকা অফিসার ও কর্মচারীদের দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে। এ ছাড়া প্রমোটিদের জন্য নতুন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার পদ সৃষ্টিসহ ডেপুটি রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার, সুপারিনটেনডেন্ট, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, কোর্ট কিপার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদ সংখ্যা অতি দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি করে উক্ত পদসহ সকল পদে সিনিয়রিটি প্রদানসহ বিধিবিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান বা নির্বাচিত প্রতিনিধি রেখে পদোন্নতির বিধিবিধান দ্রুত সময়ের মধ্যে সময়োপযোগী করতে হবে।
৩. প্রধান বিচারপতির সচিব পদে কবির আহমেদের দায়িত্ব পালনের পর থেকে যারা যারা বিধির বাইরে প্রধান বিচারপতির সচিব পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন এবং বর্তমানে প্রমোশন পেয়ে যারা অন্যান্য পদে বহাল আছেন তাদের অব্যাহতি দেয়া হোক।
৪. উভয় বিভাগে অফিসার ও কর্মচারীদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থাসহ প্রাধিকার অনুযায়ী যার যার প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৫. অফিস উপস্থিতি ও প্রস্থানের ক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্ট পদ্ধতি যেহেতু সকল কর্মচারী-কর্মকর্তার ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ করা যাচ্ছে না, সেহেতু এই ফিঙ্গার প্রিন্ট পদ্ধতি থেকে সবাইকে অব্যাহতি দিয়ে সমভাবে পূর্বের Attendance পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। কোনোমতেই বৈষম্যমূলক পদ্ধতি বহাল রাখা যাবে না।
৬. ছুটি-ছাটার বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে দ্রুত একটি উদ্যোগ নীতিমালা করে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। ছুটি সংক্রান্ত বিষয়ে কোনোরকম বৈষম্য ও হয়রানি করা যাবে না।
৭. প্রসেডিং সংক্রান্ত ফাইলগুলো নিয়মানুযায়ী তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই স্বচ্ছতার সঙ্গে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং ইতিমধ্যে প্রসেডিং সংক্রান্ত যে ফাইলগুলো তিন মাসের অধিক সময় ধরে পড়ে আছে সেগুলো তিন দিনের মধ্যে উদারনীতিতে নিষ্পত্তি করতে হবে।
৮. সুপারিনটেনডেন্ট ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তার পদ প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করতে হবে।
৯. কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নির্ধারিত অফিস সময়সূচির বাইরে কাজ করতে বাধ্য করানো যাবে না। অফিস কর্মঘণ্টার বাইরে কিংবা অন্যান্য ঘোষিত সরকারি ছুটির দিনে যদি কোনো কাজ করার একান্তই প্রয়োজন হয়; তবে যথাযথ সম্মানি ও অন্যান্য সুযোগ- সুবিধা নিশ্চিত করে কাজ করার জন্য অনুরোধ করতে হবে। পূর্বের ন্যায় অফিস সময়সূচি আপিল বিভাগে সকাল ৯টা থেকে ৩টা পর্যন্ত এবং হাইকোর্ট বিভাগে সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত করতে হবে।
১০. প্রশাসন বরাবর করা কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দরখাস্ত তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্তের সিদ্ধান্ত দরখাস্তকারীকে সিদ্ধান্ত আকারে জানাতে হবে।
১১. বিভিন্ন পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। কোনো প্রকার তদবির বিবেচনা করা যাবে না। পরীক্ষা পদ্ধতি অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে।