ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের বিশ্লেষণ

দিল্লির ভ্রান্ত পররাষ্ট্রনীতি

মানবজমিন ডেস্ক

(১ মাস আগে) ১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ৯:৫০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১:২৮ অপরাহ্ন

mzamin

বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া নাটকীয়তায় অনেকেই হতবাক হলেও নেপালিদের কাছে ওই গল্পটা খুব পরিচিত। সাবেক রাজাসহ নেপালি রাজনৈতিক নেতারা পদচ্যুত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে আলাদা কেউ নন। এরা সকলেই গণতন্ত্র ও স্বৈরাচার এবং সুশাসন ও দুঃশাসনের মধ্যকার রেখাকে হালকা করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের ভূমিকা এবং তার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে যে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে তা আরও বেশি মনযোগ আকর্ষণের দাবি রাখে। 
নেপালের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যে পররাষ্ট্রনীতির উপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে দিল্লি এ যাবৎকাল তাদের সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেছিল তা হাসিনার স্বৈরাচারী প্রবণতাকে উস্কে দিয়েছে। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের যে গণতান্ত্রিক দাবি ছিল এবং তারা যে আকাক্সক্ষার প্রতি প্রবল ইচ্ছা পোষণ করছিল তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি। 
বাংলাদেশের অবস্থান এবং কৌশলগত গুরুত্বের কারণে ভারতের একাধিক উদ্বেগ ও নিরাপত্তার বাধ্যবাধকতা ছিল। যার সুযোগে হাসিনা হয়ে ওঠেন ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। দিল্লির সঙ্গে তার ঐতিহাসিক এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে দেশটির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা তাদের পক্ষে সহজ ছিল। হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগের প্রতি ভারতের সমর্থনের কারণ হচ্ছে দিল্লির কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত হওয়া হাসিনার সরকার। 

এ বছর জানুয়ারির নির্বাচনে হাসিনা এবং তার দলের প্রতি ভারতের প্রকাশ্য পক্ষপাতিত্ব স্পষ্টভাবে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ধরা পড়ে। ভারতের আধিপত্যের বিরোধী দলগুলোকে নানাভাবে বুঝিয়েও আওয়ামী সরকার তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেনি। বাংলাদেশের বৃহত্তর নাগরিক সমাজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্বাচন বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছে ভারত। যার ফল খুব একটা ভালো হয়নি। নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি ছিলনা বললেই চলে। এছাড়া নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম এবং কারচুপির খবর পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ভারত ওই নির্বাচনের ফলাফলের বৈধতা দিয়ে হাসিনার পক্ষে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিল। এভাবে হাসিনার অন্যায় এবং জোরপূর্বক ক্ষমতায় পিষ্ঠ হওয়াকে সমর্থন করার কারণে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারত বিরোধীতা প্রবল আকার ধারণ করেছে। 
ভারতের পররাষ্ট্র নীতি গত এক দশক ধরে বাস্তববাদ এবং নমনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। তবে এক্ষেত্রে তারা ভারতের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়ে আসছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তার বই, দ্য ইন্ডিয়া ওয়ে-তে ‘কৃষ্ণের পছন্দ’ ধারণাটিকে সমান্তরাল বলে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। এর অর্থ হল সামষ্টিক ধার্মিকতার পরিবর্তে  ধর্মকে স্বার্থসিদ্ধ হিসেবে ব্যবহার করা। এই ধরণের পররাষ্ট্রনীতি দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত বিরোধীতাকে ক্রমান্বয়ে উস্কে দিচ্ছে। জয়শঙ্করের দর্শন অনুসারে ভারতের জনপ্রিয় হওয়ার প্রয়োজন নেই, তারা কেবল তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত করেত চায়। তবে এসব চিন্তাধারার বিপক্ষে দক্ষিণ এশিয়াতে ভারত বিরোধীতা প্রকট হচ্ছে। 
এক্ষেত্রে যদি ভারত দক্ষিণ এশিয়া এবং তার বাইরে একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে নেতৃত্বের দাবি করতে চায়। বৈশ্বিকভাবে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করতে চায় বা এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চায় তাহলে দিল্লিকে অবশ্যই তাদের পররাষ্ট্রনীতির স্তম্ভ হিসেবে গণতন্ত্রকে গ্রহণ করতে হবে। বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতিবেশী দেশগুলোর বৃহত্তর স্বার্থ বিশেষ করে গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

 

পাঠকের মতামত

ভারতের উদ্ভট চিন্তা ভাবনা আর হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসী মনোভাব ওদের পতনের কারন। তারা কারো কথাকে সম্মান করে না। শুধু দক্ষিন এশিয়া নই বিশ্বে ওরা একঘরে একমাএ ইহুদি সমর্থন ছাড়া। এভাবে ওরা ঠিকবেও না যত আধুনিক হউক। মিডিয়াকে ব্যবহার করে ওরা অনেক কিছু আড়াল করে ঠিকতে চাইতেছে। ওদের বাইরে যত চাকচিক্য কাজের বেলায় অতটা কিছু নন। কিছুদিন আগে দেখাইছিল অমুক ধনী তমুক ধনী এই আসতেছে ভারতে ও যাচ্ছে। আদতে এই সব কিছু না। এইগুলা কতগুলা মিডিয়াকে ব্যবহার ওদের দেশে বিনিয়োগ করানোর জন্য বিভিন্ন চ্যানেলে মানুষকে আক্রষন করাইছে মাএ। ওই দেশ কখনো উন্নত হবে না। নিজের দেশের লোকদের ঠিকমত মূল্যায়ন করে না আবার আরেক দেশ শাষন করতে চাচ্ছে। নিজেদের চরকায় তেল দেওয়া সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ।

Kamala jeferson
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১:১০ অপরাহ্ন

A government with a divisive policy internally and big brother policy regionally cannot lead the country it governs to become a regional power.

KR Zaman
১৪ আগস্ট ২০২৪, বুধবার, ৫:৫৩ পূর্বাহ্ন

একটি পরাশক্তি হওয়ার পেছনে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্মান জনক বিশ্বস্থতার সম্পর্কের বীজ রোপন করতে হয় সংশ্লিষ্ট বৃহৎ রাষ্ট্রটিকে। সেখানে পারস্পরিক, আধিকারিক, গণতান্ত্রিক, মনস্তাত্ত্বিক সহমর্মীতার মূল্যবোধ বিদ্যমান থাকতে হয়। তা না হলে পরাশক্তিগিরির নেতৃতিত্ব অর্জন করা সম্ভব হয় না। আশাকরি সংশ্লিষ্ট দেশটি এই সত্যটা অনুধাবন করতে সক্ষম হবে।

এম. এ. হোসাইন
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১০:২৬ অপরাহ্ন

India has lots more to learn to become regional leader. They are incapable to perform the role of south asian regional leader.

Zahur
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ৮:৪৪ অপরাহ্ন

গনতন্ত্র একটি জাতিকে সভ্য হতে সহায়তা করে। কিন্তু ভারত তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে ধর্মকে রাজনীতির সাথে প্রকট ভাবে জড়িয়ে ফেলায় ফল হয়েছে উল্টো। তাদের দক্ষিণ এশিয়ায় এখন কোন বন্ধু রাষ্ট্র নেই।

Harun Rashid
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ৪:২০ অপরাহ্ন

যেই মানুষ রা গরুর মূতখেতে পারে তাদের আবার পররাষ্ট্র নীতি? তাদের মাথায় গোবর না সব মূত

মোহাম্মদ আরিফ
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১২:৪৪ অপরাহ্ন

ভারত এগুলো বুঝতে পারে তবে তারা প্রতিবেশী দেশগুলোর কল্যাণ চায় না তারা চায় অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করতে

বাবার আজম
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১২:১২ অপরাহ্ন

নিকট প্রতিবেশীদের সাথে তাদের একরোখা পররাষ্ট্রনীতি ও দাদাগিরির জন্য বেশী দিন অপেক্ষা করতে হবে না। তার ফলে আন্তঃ বিভাজনের যে বীজটি উপ্ত হয়েছে তা বৃক্ষ হয়ে হঠাৎ দমকা হাওয়ায় সমূলে উৎপাটিত হয়ে নিজের ঘরবাড়িই ভেংগে দিতে পারে।

মোহাম্মদ হারুন আল রশ
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১২:১০ অপরাহ্ন

ভারুত সবই বুঝে, না বুঝার বান করে থাকে, কারণ বিচার মানি তাল গাছ আমার সিস্টেম।

রহমান
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১২:০৬ অপরাহ্ন

We Rashtro sanaskar before general election

Md. Anisur Rahman
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

আমার এক লেখায় বলেছি,ভারতের হিন্দু শাসকদের মাথায় মগজের পরিবর্তে গরুর গোবর দ্বারা পূর্ণ। এতবড় মানব বিদ্রোহকে তারা গ্রহন না করে পতিত এক স্বৈরাচারকে তোয়াজ করছে।

মাস্টার নজরুল ইসলাম
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১১:৫৫ পূর্বাহ্ন

আন্দোলনকে ঘিরে সমস্ত কালজয়ী স্লোগান ও দেয়াল লিখনির একটি কোলাজ চাই মানবজমিনের কাছে।

ইলিয়াছ
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন

।হাসিনার বন্ধু দাবি করলেও ভারত তার বিরাট ক্ষতি করেছে । ভারত চাইলে হাসিনাকে সুপরামর্শ দিয়ে জনপ্রিয় করে রাখতে পারত। এ সুফল হত তাদের জন্য সুদূরপ্রসারি । ভারতের মোদি সরকারের অন্ধ সমর্থন হাসিনাকে স্বৈরাচারি করেছিল।

Kazi
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

Excellent report. Thanks Manabzamin.

ni
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১১:২৬ পূর্বাহ্ন

সত্য কথা বলতে কি, ভারত একগুয়েমী, শেখ হাসিনাও একগুয়েমী। মোদীর নিকট থেকে হাসিনা একগুয়েমী শিখে মোদীকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। তাই ম্যাডামের পরিণতি হলো পলায়ন। ভারতের সাথে তার প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রের সাথে সঠিক সম্পর্ক , সুসম্পর্ক নাই। তাদের টালমাটাল পররাষ্ট্রনীতির কারণে এটা হচ্ছে।

আশফাকুল আলম
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

এই সহজ জিনিসগুলো যতদিন ভারত বুঝতে না পারবে ততদিন ভারতের অস্তিত্বের সংকট তৈরী হবে!!!

ছৈয়দ
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন

Doom country India

Nesar
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন

ভারতের পররাষ্ট্র নীতি একেবারে বালসুলভ।।এদের কর্মকর্তাগন মনে হয় নির্বোধ অথবা বলদ।।দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের মর্যাদা একটা আবর্জনার ভাগাড় ছাড়া কিছুই না।।।।তাদের বাল গজাবে কবে?

Fazlul Hoque
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন

ভারত কি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সাধারণ মানুষের মনোভাব কোনোদিন বুজতে পারবে। বাংলাদেশের প্রায় ৪ কুটি ছাত্র-ছাত্রী এই নতুন অভিজ্ঞতার মধ্যে বড় হবে। এর ফল সুদূর প্রসারি হবে এটা নিশ্চিত।

ফজলুল করিম
১১ আগস্ট ২০২৪, রবিবার, ১০:০২ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

বিবিসির প্রতিবেদন/ হাসিনাকে নিয়ে দ্বিধায় দিল্লি!

ইউক্রেন, গাজা ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি বিশ্লেষণের আহ্বান/ সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে বললেন রাজনাথ

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status