ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ

শেষের পাতা

মাধবদীতে আওয়ামী লীগের ৬ জনকে পিটিয়ে হত্যা

নরসিংদী প্রতিনিধি
৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবার

মাধবদীতে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীরা মসজিদ এরিয়ায় ঢুকে এক ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের ছোট ভাইসহ ৬ জনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। রোববার দুপুরে  মাধবদী বাজার বড় মসজিদের ওজুখানায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। এ ছাড়াও অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। নিহতরা হলেন- মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও চরদিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন শাহিন, নরসিংদী জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন, মহিষাশুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল জলিল, মাধবদীর আনন্দী এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী ফারুক ও আলগী এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামাল পাশা। নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার বেলা ১২টা থেকে আন্দোলনকারীরা মাধবদী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও সোনার বাংলা মার্কেট এলাকায় জড়ো হতে থাকে। এদিকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মাধবদী এসপি স্কুলের মাঠে অবস্থান নেয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উভয়পক্ষে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি ও উভয় পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বেলা দেড়টার দিকে বিক্ষোভকারীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এদের মধ্যে কয়েকজন নেতাকর্মী মাধবদী বাজার বড় মসজিদে ঢুকে জোহর নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের সঙ্গে মিশে যায়। মুহূর্তেই মসজিদে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মুসল্লিরা মসজিদের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা মসজিদের বারান্দায় আলম সওদাগর (২৬) নামে একজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করতে চায়। 
একপর্যায়ে মসজিদের মাইক দিয়ে তাদের মসজিদে না ঢোকার অনুরোধ করলে তারা বের হয়ে বাইরে নামাজ শেষ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পরে নামাজ শেষে প্রধান ফটক দিয়ে মুসল্লিরা বের হয়ে যায়। অন্যদিকে শাহিন, দেলোয়ার, মনিরসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা মসজিদের পেছনের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে ওজুখানার বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা তাদের খুঁজতে মসজিদের পেছনের অজুখানায় ঢুকে তাদের এলোপাতাড়ি মারপিট করলে ঘটনাস্থলেই ৬ জন মারা যায়। এতে নিহতদের সবার মুখমণ্ডল ও মাথা থেঁতলে যাওয়ায় শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে মাঠে ছিলাম। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিএনপি’র লোকজন মিলে আমাদের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা হিসেবে মসজিদকে বিবেচনা করা হয়। আমাদের কিছু নেতাকর্মী মসজিদে ঢুকে গেলে সেখানে ঢুকেই দুষ্কৃতকারীরা আমার ছোট ভাই দেলোয়ার, তরুণ ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন শাহিন ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান ভূঁইয়াসহ ৬ জনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। এটা চূড়ান্ত বর্বরতা হিসেবে আখ্যা দিয়ে তিনি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। সন্ধ্যার পরপর নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কে.এম. শহিদুল ইসলাম সোহাগ ও মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কামরুজ্জামানসহ পুলিশের একটি  দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং  নিহতদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর উপজেলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে গোটা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

 

শেষের পাতা থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

শেষের পাতা সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status