বাংলারজমিন
পাবনায় দফায় দফায় সংঘর্ষ, নিহত ৩
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা থেকে
৫ আগস্ট ২০২৪, সোমবারপাবনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিতে ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রোববার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এতে আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটকে জমায়েত হন। এরপর তারা জেলা শহরের ট্রাফিক মোড়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে ৩ জন নিহত ও অন্তত ২৩ জন আহত হন। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা এক আওয়ামী লীগ নেতার গাড়িতে আগুন দেয়। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, মোট ৩ জনের মৃত্যুর বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন হাসপাতালে ভর্তির পর মারা গেছেন। অন্যজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। মৃত ঘোষণার পরই তাকে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে নাম পরিচয় জানা যায়নি। নিহত অন্য দু’জন হলেন জেলা সদরের চর বলরামপুর গ্রামের জাহিদ হোসেন (১৮) ও হাজির হাট এলাকার মহিবুল ইসলাম (২২)। দুপুর ১টার দিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সার্জন জাহেদী হাসান এই দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। প্রথম দফা গুলির ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা কিছুক্ষণ শহরে অবস্থান করে দুপুর ১টার দিকে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রধান ফটকে ফিরে যান। এরপর ৩ জনের মৃত্যুর খবরে আবার তারা শহরে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় শহরের বিভিন্ন দিক থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেন। এতে দু’পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। এতে অন্তত আরও ২০ জন আহত হন। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর আন্দোলনকারীরা শহর ত্যাগ করেন। এ সময় পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা প্রায় ২ ঘণ্টা শহরে মহড়া দিয়ে বিকাল ৪টার দিকে চলে যান। এর পর থেকে শহরের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল। দুর্বৃত্তদের গুলির ঘটনার পর একদফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
দ্বিতীয় দফায় আবার শিক্ষার্থীরা শহরে এলে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে দ্রুতই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। বিকাল ৪টার পর থেকে শহরের অবস্থা শান্ত।