বাংলারজমিন
গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৩ দিন চিকিৎসাধীন
মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন ১৭ বছরের ওমর ফারুক
হাসান পিন্টু, লালমোহন (ভোলা) থেকে
৩ আগস্ট ২০২৪, শনিবার১৭ বছরের কিশোর মো. ওমর ফারুক। সংসারে অভাবের কারণে প্রায় ৩ বছর আগে ঢাকায় চলে যান তিনি। ঢাকার রায়েরবাগ এলাকার একটি কয়েল ফ্যাক্টরিতে চাকরি নেন ওমর ফারুক। গত ১৯শে জুলাই ঢাকায় আন্দোলনকারী এবং পুলিশের সংঘর্ষ চলার সময় দুপুরের খাবার খেতে ফ্যাক্টরি থেকে বাসায় যাওয়ার পথে হঠাৎই গুলিবিদ্ধ হন ওমর ফারুক। তার শরীরে দুইটি গুলি লাগে। এরমধ্যে ১টি গুলি তার ফুসফুসে এবং আরেকটি লাগে বগলের নিচে। এরপর তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় মহাখালীর জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। সেখানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টায় মারা যান কিশোর ওমর ফারুক। নিহত কিশোর ওমর ফারুক ভোলার লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাহাদুর চৌমহনী এলাকার ক্বারীবাড়ী সংলগ্ন মুন্সীবাড়ীর ফয়েজউল্যাহ মুন্সীর ছেলে। বাবা এবং বড় ভাই এমরানসহ তারা ৩ জন ঢাকার রায়েরবাগ এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। কিশোর ওমর ফারুকের বাবা ফয়েজউল্যাহ রায়েরবাগ এলাকার একটি মসজিদের খাদেম। ওমর ফারুক সেখানেই একটি কয়েল ফ্যাক্টরিতে মাসে ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন। কিশোর ওমর ফারুকের বড় ভাই এমরান এবং মামা আনোয়ার হোসেন জানান, সংসারে অভাব থাকায় ওমর ফারুক বেশি লেখাপাড়া করতে পারেনি। যার জন্য প্রায় ৩ বছর আগে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকায় এসে একটি কয়েল ফ্যাক্টরিতে চাকরি নেয় ওমর ফারুক।
সে আন্দোলনকারী ছিল না। তবে ১৯শে জুলাই আন্দোলনকারী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ চলার সময় ফ্যাক্টরি থেকে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় যাওয়ার পথে হঠাৎই গুলিবিদ্ধ হয় ওমর ফারুক। এরপর খবর পেয়ে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মহাখালীর জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকায় স্বজনদের অনেককেই হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে টানা ১৩ দিন। তবে ওমর ফারুক রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে মারা গেলেন। এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় কিশোর ওমর ফারুকের মরদেহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেনি বলে মুঠোফোনে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন নিহত ওমর ফারুকের মামা মো. আনোয়ার হোসেন। কিশোর ওমর ফারুকের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে লালমোহন উপজেলায় বাড়লো মৃত্যুর সংখ্যা। এ পর্যন্ত ঢাকার কোটাসংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষের ঘটনায় এই উপজেলার মোট ৮ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।