খেলা
কানাডার বিরুদ্ধে ড্রোন চালিয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ নিউজিল্যান্ডের
স্পোর্টস ডেস্ক
২৫ জুলাই ২০২৪, বৃহস্পতিবার
অনুশীলনে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কানাডিয়ান ফুটবলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিতে (আইওসি) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছে নিউজিল্যান্ড। তাদের অভিযোগ, গত সোমবার কানাডিয়ান ফুটবলের এক ‘সাপোর্ট স্টাফ’ ড্রোন চালিয়ে নিউজিল্যান্ডের অনুশীলন রেকর্ড করেছেন। খেলাধুলার সবচেয়ে বড় আসর অলিম্পিক গেমসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আগামীকাল। তবে অন্যবারের মতো আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই মাঠের প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। প্যারিস অলিম্পিকে গতকাল মাঠে গড়িয়েছে ফুটবলের লড়াই। এবারের আসরে ৩২টি খেলার মোট ৩২৯টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ফুটবলে আছে ছেলে ও মেয়েদের ইভেন্ট। ১২ দল নিয়ে মেয়েদের ফুটবল খেলা শুরু হবে আজ। রাত ৯টায় শিরোপাধারী কানাডার মুখোমুখি হচ্ছে নিউজিল্যান্ড। তার আগে নিউজিল্যান্ড অলিম্পিক কমিটি (এনজেডওসি) বিবৃতিতে জানিয়েছে, ড্রোন কাণ্ডের জন্য কানাডা ক্ষমা চেয়েছে। আর কানাডিয়ান অলিম্পিক কমিটির (সিওসি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে ঘটনা ঘটেছে তাতে তারা ‘বিস্মিত ও হতাশ’ এবং তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যে সাপোর্ট স্টাফ সদস্য এই কাজ করেছেন, ফরাসি কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করেছে বলেও জানিয়েছে সিওসি।
অলিম্পিকে মেয়েদের ফুটবলে সর্বশেষ আসরে সোনা জিতেছে কানাডা। নিউজিল্যান্ড অলিম্পিক কমিটির (এনজেডওসি) বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যিনি ড্রোন চালিয়েছেন, তাকে কানাডা নারী ফুটবল দলের সাপোর্ট স্টাফ সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাকে ধরিয়ে দিতে (নিউজিল্যান্ড) দলের সাপোর্ট সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়েছেন।’
এনজেডওসির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আইওসির নৈতিকতাবিষয়ক বিভাগে ঘটনাটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে এনজেডওসি। কানাডা দল ক্ষমা চেয়েছে এবং ঘটনাটি তদন্ত করছে।’ এ ছাড়া ‘নৈতিকতা ও ন্যায্যতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলে এ ঘটনায় ‘গভীর বিস্ময়’ প্রকাশ করেছে এনজেডওসি।
সিওসির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কানাডিয়ান অলিম্পিক কমিটি ন্যায্য খেলার পক্ষে এবং আমরাও বিস্মিত ও হতাশ। নিউজিল্যান্ড ফুটবল, খেলোয়াড়েরা ও নিউজিল্যান্ড অলিম্পিক কমিটির কাছে আমরা ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’ এ বিষয়ে আইওসি, প্যারিস আয়োজক কমিটি ও ফিফার সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছে সিওসি।
প্যারিস অলিম্পিকে মেয়েদের ফুটবলে অংশ নিচ্ছে ১২টি দল। তিন গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল ও তৃতীয়দের মধ্যে সেরা দুই দল উঠবে কোয়ার্টার ফাইনালে। মেয়েদের বিভাগে অংশ নিচ্ছে ফ্রান্স, কলম্বিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, জাম্বিয়া, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, জাপান, নাইজেরিয়া ও ব্রাজিল।
অলিম্পিকে ছেলেদের ফুটবলে প্রতিটি দল গ্রুপ পর্বে তিনটি করে ম্যাচ খেলবে। গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুটি দল উঠবে কোয়ার্টার ফাইনালে। সেখান থেকে চার দল উঠবে সেমিফাইনালে। ফুটবলে পদকের লড়াইটা হবে এই চার দলের মধ্যেই। মোট ৩২টি ম্যাচ হবে ছেলেদের ফুটবল ইভেন্টে। খেলাগুলো হবে ফ্রান্সের সাতটি ভেন্যুতে। ফ্রান্সুযুক্তরাষ্ট্রের উদ্বোধনী ম্যাচ হবে মার্শেইয়ে, ফাইনাল প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেসে। এ ছাড়া ম্যাচ আছে বোর্দো, নঁতে, লিঁও, নিস ও সেইন্ট এতেইনে। ৯ই আগস্ট। সেদিন প্যারিসের পার্ক দ্য প্রিন্সেসে ফাইনালে হবে স্বর্ণপদকের লড়াই। সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুই দলের মধ্যে ব্রোঞ্জের লড়াই হবে ৮ই আগস্ট নঁতের মাঠে।
তিনজন বাদে দলের বাকি সবাই অনূর্ধ্ব-২৩ বয়সী হওয়ায় অলিম্পিকে বিশ্বজুড়ে পরিচিত মুখের উপস্থিতি কমই থাকে। এর মধ্যেও বেশি বয়সের সুবিধায় কিংবা অল্প বয়সে খ্যাতি পেয়ে যাওয়া কাউকে কাউকে এ টুর্নামেন্টে দেখা যায়। এবার যেমন আছেন আর্জেন্টিনার হুলিয়ান আলভারেজ, নিকোলাস ওতামেন্দি ও থিয়াগো আলমাদা, মরক্কোর আশরাফ হাকিমি, মিসরের মোহাম্মদ এলনেনি ও ফ্রান্সের আলেক্সান্দার লাকাজেত। এবারের আসরের সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় আর্জেন্টিনার নিকোলাস ওতামেন্দি- ৩৬ বছর, যা একই দলে থাকা ক্লদিও এচেভেরির চেয়ে দ্বিগুণ। তবে ১৮ বছর বয়সী এচেভেরিই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কম বয়সী নন। সবচেয়ে কম বয়সী স্পেনের ডিফেন্ডার পাও কুবারসি, জানুয়ারিতে যিনি ১৭ বছরে পা রেখেছেন। ছেলেদের ফুটবলে এখন পর্যন্ত মাত্র ১৫ জন ফুটবলার অলিম্পিক ও ফিফা বিশ্বকাপ দুটিই জিতেছেন। এর মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই কীর্তি গড়েছেন শুধু লিওনেল মেসি ও আনহেল ডি মারিয়া (২০০৮ বেইজিং অলিম্পিক ও ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ)। ২০২০ টোকিও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। অলিম্পিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ৭ পদক জিতেছে সেলেসাওরা। দুটি সোনার (২০১৬ ও ২০২০) পাশাপাশি তিনটি রুপা (১৯৮৪, ১৯৮৮ ও ২০১২) এবং দুটি ব্রোঞ্জ (১৯৯৬ ও ২০০৮)। এবার অবশ্য লাতিন আমেরিকার দেশটি মহাদেশীয় বাছাইপর্ব উতরাতে পারেনি। অলিম্পিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশিবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে যুক্তরাজ্য ও হাঙ্গেরি- তিনবার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুইবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও উরুগুয়ে।