খেলা
ইউরোপে মহারণ আজ
ইংল্যান্ডের ইতিহাস নাকি স্পেনের ‘ফেরা’
স্পোর্টস ডেস্ক
১৪ জুলাই ২০২৪, রবিবার
৪ সপ্তাহ, ২৪ ম্যাচ শেষে নির্ধারণ হতে যাচ্ছে এবারের ইউরোর চ্যাম্পিয়ন। বার্লিনে ফাইনালে স্পেন ও ইংল্যান্ড মুখোমুখি হচ্ছে আজ। অনেকের মতেই এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সেরা দল স্প্যানিশরা। নিজেদের চিরায়ত টিকিটাকা থেকে বেরিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলে এবার সবার মন জয় করেছে তারা। অন্যদিকে ইংল্যান্ড শুরুতে এলেমেলো ফুটবল খেললেও স্নায়ুচাপ সামলে উঠেছে টানা দ্বিতীয় ফাইনালে। এখন দেখার বিষয় কখনও ইউরো না জেতা ইংলিশরা আক্ষেপ ঘোচাবে নাকি এক যুগ পর ইউরো শিরোপার স্বাদ পাবে স্পেন। বার্লিনে ফাইনাল খেলা শুরু আজ রাত ১টায়। এবারের আসরে শুরু থেকে উড়ছে ইংল্যান্ড। বি গ্রুপে ইতালি, ক্রোয়েশিয়া ও আলবেনিয়াকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় ওঠে তারা। এরপর সেই ফর্ম ধরে রাখে নকআউটেও। কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক জার্মানি ও সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারায় স্প্যানিশরা। ইউরোর ইতিহাসে টানা ৬ জয়ে ফাইনালে ওঠা প্রথম দল স্পেন। আসরে ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানিকে হারিয়েছে তারা।
২০১২ সালে সর্বশেষ ইউরো জিতেছিল স্পেন। এরপর থেকেই ইউরোতে প্রতি আসরেই খালি হাতে ফিরতে হয় তাদের। সাম্প্রতিক সময়ে টিকিটাকা স্টাইল নিয়েও বেশ সমালোচিত হয় তারা। তবে লুইস ডি লা ফুয়েন্তে দায়িত্ব নেওয়ার পরই খোলস বদলে গেছে স্পেনের। নিজেদের মধ্যে অতি পাসখেলা দলটি এখন প্রতি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায়। অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার আলভারো মোরাতার সঙ্গে প্রতিভাবান দুই ফরোয়ার্ড লামিন ইয়ামাল ও নিকো উইলিয়ামস যে কোনো দিন পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন। ফ্রান্সের বিপক্ষে অসাধারণ গোল করে ইয়ামাল মুগ্ধ করেন সবাইকে। রক্ষণে দানি কারাভাহাল স্পেনের আস্থার জায়গা। মিডফিল্ডে রদ্রিগোও আছেন দুরন্ত ছন্দে। এছাড়া দানি ওলমো নুন্যতম সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে দিতে পারেন। এর আগে ৩ বার ইউরো জিতেছে স্পেন, এর চেয়ে বেশি ইউরো জেতেনি আর কোনো দল। আজ ইংলিশদের হারাতে পারলে প্রথম দল হিসেবে ইউরোতে চতুর্থ শিরোপা জয়ের স্বাদ পাবে স্প্যানিশরা। জার্মানির ঝুলিতে রয়েছে তিনটি শিরোপা। ইংল্যান্ড গত আসরে প্রথম ইউরো জয়ের খুব কাছে গিয়েও খালি হাতে ফেরে। ঘরের মাঠে ইতালির বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে স্বপ্ন ভাঙে গ্যারেথ সাউথগেটের দলের। তবে এবারের ফাইনালে উঠেই ইতিহাস গড়েছে ইংলিশরা। এবারই প্রথম বিদেশের মাটিতে কোনো মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছে তারা। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে একদম শেষ মুহূর্তের গোলে জয় পায় ইংল্যান্ড। বদলি হয়ে নামার ৯ মিনিটের মাথায় ইংলিশদের জয়সূচক গোল এনে দেন অলি ওয়াটকিন্স। অ্যাসিস্ট করেন আরেক বদলি খেলোয়াড় কোল পালমার।
গোলপোস্টের নীচে ইংলিশদের আস্থার জায়গা জর্ডান পিকফোর্ড। এছাড়া রক্ষণে কাইল ওয়াকার, জন স্টোনসরা ভরসা যোগাচ্ছেন। অধিনায়ক হ্যারি কেইন ফর্মে না থাকলেও অভিজ্ঞতা দিয়ে দলকে সাহায্য করছেন। দুর্দান্ত ছন্দে আছেন বুকায়ো সাকা ও কোবি মেইনু। আর মিডফিল্ডে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে দক্ষ জুড বেলিংহ্যাম, ফিল ফোডেন ও লুক শ’রা। ১৯৬৬ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। এরপর গত ৫৮ বছরে আর কোনো মেজর শিরোপা জেতেনি তারা। গতবার কাছে গিয়েও না পারা সাউথগেটের শিষ্যরা এবার যে কোনো মূল্যে শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। সর্বশেষ নেশন্স কাপে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও স্পেন। যেখানে ৩-২ গোলের জয় পায় স্প্যানিশরা। সবমিলিয়ে ৮ সাক্ষাতে ৫ জয় নিয়ে এগিয়ে স্পেন। ইংল্যান্ডের জয় ২ ম্যাচে, বাকি এক ম্যাচ ড্র।