ঢাকা, ১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৭ জিলক্বদ ১৪৪৬ হিঃ

বিশ্বজমিন

বিজেপি-এনসিপি জোট নিয়ে বাকযুদ্ধ

মানবজমিন ডেস্ক

(১১ মাস আগে) ১৪ জুন ২০২৪, শুক্রবার, ১২:০২ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:০৮ পূর্বাহ্ন

mzamin

অজিত পাওয়ারের ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোট গঠন করায় ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির মধ্যে কথার লড়াই শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘অর্গানাইজার’-এ প্রকাশিত একটি আর্টিকেলকে কেন্দ্র করে এই বাকযুদ্ধ। ওই আর্টিকেলে এনসিপির সঙ্গে বিজেপির জোট করাকে অশুভ উদ্দেশ্য বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ নিয়েই সরগরম চারদিক। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। 

এতে বলা হয়, মহারাষ্ট্রে এবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ  জোটের চেয়ে বিরোধী দলগুলোর জোট  ইন্ডিয়া বেশি আসনে জিতেছে। এরপর থেকেই বিজেপি ও মহারাষ্ট্রে তার মিত্র এনসিপি কণ্টকময় পথে ধাবিত হচ্ছে বলে মনে হয়। উভয় দলই অর্গানাইজারে একটি আর্টিকেল বা নিবন্ধ প্রকাশ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। ওই নিবন্ধে অজিত পাওয়ারের এনসিপিকে নিয়ে জোট করে নির্বাচনের জন্য বিজেপির কড়া সমালোচনা করা হয়। ওই রাজ্য থেকে লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া ব্লক জিতেছে ৩০ আসনে। বিজেপি এবং তার মিত্ররা জিতেছে ১৭ আসনে। এর মধ্যে মাত্র একটি আসনে জিতেছে অজিত পাওয়ারের এনসিপি। উত্তর প্রদেশের ৮০ আসনের পরেই লোকসভায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন আছে মহারাষ্ট্রে। সেই সংখ্যা ৪৮।

রিপোর্ট অনুযায়ী এ বছরের শেষের দিকে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে অংশ নেবে কিনা তা নিয়ে এরই মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে তারা জরিপ শুরু করেছে। অর্গানাইজারে প্রকাশিত নিবন্ধে আরএসএসের একজন সিনিয়র নেতা রতন শারদা প্রশ্ন তুলেছেন- অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপির সঙ্গে জোটে প্রবেশ করা বিজেপির জন্য ঠিক কাজ হয়েছে কিনা। তিনি এ উদ্যোগকে অশুভ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, কেন এই অশুভ পরামর্শে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে? এতে বিজেপির সমর্থকরা আহত হয়েছেন। কারণ, এই কংগ্রেসের (এনসিপি) আদর্শের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে লড়াই করেছেন তারা এবং নিপীড়িত হয়েছেন। এক ধাক্কায়ই বিজেপি তার ব্রান্ড ভ্যালু নামিয়ে আনল।

তিনি ওই নিবন্ধে আরও লিখেছেন, অপ্রয়োজনীয় এবং এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব এমন জালিয়াতির বড় উদাহরণ হলো মহারাষ্ট্র। এভাবে এত পারে এগিয়ে আসাদের সুযোগ করে দেয়ার ফলে ভাল পারফর্ম করেছেন এমন পার্লামেন্টারিয়ানদের উপেক্ষা করা হয়েছে। রাজ্যসভার এমপি এবং এনসিপির সিনিয়র নেতা প্রফুল প্যাটেল যদিও বলেছেন, দুই মিত্রের মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাক নেই, এভাবে এই নিবন্ধকে দেখা ঠিক নয়। তিনি বলেন, একটি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি নিবন্ধকে বিজেপির অবস্থানের প্রতিফলন হিসেবে দেখা ঠিক নয়। একে সেভাবে দেখা উচিত হবে না। তবে এনসিপির তরুণ নেতা সুরাজ চাবন বিজেপির ওই নেতার নিবন্ধের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, বিজেপি যখন ভাল পারফর্ম করে, তখন কঠিন কাজ করার কৃতীত্ব দেয়া হয় আরএসএসকে। কিন্তু  পরাজয়ের দায় দেয়া হয় অজিত পাওয়ারকে। তার এ কথার আবার পাল্টা জবাব দিয়েছেন বিজেপি নেতা প্রবীন দারেকার। তিনি বলেন, আমাদের সবার কাছে আরএসএস হলো একটি ‘ফাদার ফিগার’’। আরএসএস’কে নিয়ে কোনো মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই। এই সংগঠন নিয়ে মন্তব্য করা উচিত নয় সুরাজ চাবন। এনসিপির বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করেনি বিজেপি। যদি এই ইস্যু এনডিএর মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়, তা হবে উত্তম। 

উল্লেখ্য, বিজেপির সঙ্গে প্রথমবার এনসিপির দ্বন্দ্বের  লক্ষণ প্রকাশিত হয়, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র  মোদি নেতৃত্বাধীন নতুন সরকারে এনসিপিকে প্রতিমন্ত্রীর পদ দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়, তখন। অজিত পাওয়ার ও প্রফুল প্যাটেল দু’জনেই মন্ত্রিপরিষদে স্থান পাওয়ার আশা করেছিলেন। কিন্তু তাদের সেই প্রস্তাবকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এনসিপির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রফুল প্যাটেল মন্ত্রিপরিষদের সাবেক একজন সদস্য এবং সিনিয়র ব্যক্তি। তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদ দেয়া হবে তার জন্য অবনতি।

অজিত পাওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেতে তার দল অপেক্ষা করতে প্রস্তুত। অজিত পাওয়ার নেতৃত্বাধীন এনসিপি এবার লোকসভা নির্বাচনে শিবসেনাকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে মহারাষ্ট্রে। কিন্তু নির্বাচনে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চারটি আসনে। তার মধ্যে জেতে মাত্র একটিতে। তারা বড়মাটিতে প্রেস্টিজ ইস্যুর লড়াইয়ে হেরে যায়। সেখানে অজিত পাওয়ারের গ্রুপের বিরোধী এনসিপি অংশের ক্ষমতাসীন এমপি এবং তার কাজিন সুপ্রিয়া সুলের কাছে হেরে যান অজিত পাওয়ারের স্ত্রী সুনেত্রা পাওয়ার। বার্তা সংস্থা আইএএনএস সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, এমন ফলের পর অজিত পাওয়ারকে জোটে অব্যাহতভাবে রাখা হবে কিনা তা নিয়ে বিবেচনা করছে বিজেপি। এরই মধ্যে জরিপ শুরু হয়ে গেছে।

 

বিশ্বজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

বিশ্বজমিন সর্বাধিক পঠিত

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status